আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যা ব্রিফ হিস্টোরি অব গন্ধ!!!

বোকারা ভাবে তারা চালাক, চালাকরা ভাবে তারা চালাক। আসলে সবাই বোকা। বোকার রাজ্যে আমাদের বসবাস
উঁহু, কি গন্ধ... অথবা আহ কি ঘ্রাণ। এইরকম শব্দ আমি আপনি আমাদের জীবনে কত সহস্রবার বলেছি তার ইয়াত্তা নেই। কি রহস্য লুকিয়ে আছে এই গন্ধ বা ঘ্রাণের পেছনে তা কখনো তেমন করে ভাবিনি আগে।

দুই সপ্তাহ আগের ঘটনা। অফিসের এক কলিগ ওয়াসরুম থেকে এসে বলল, “নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে যাচ্ছে ভাই.........”। কি ঘটনা, কি বৃত্তান্ত জিজ্ঞাসা করতে করতে টের পেলাম একটা মৃদু বিকট গন্ধ নাকে আসছে। ব্যাপার কি? ব্যাপার হল আমাদের অফিসের ক্লিনার ময়লার বিন হতে সব ময়লা একটা বড় ড্রাম আকৃতির ক্যারিয়ারে করে নীচে নিয়ে যাওয়ার সময় এই গন্ধ ওয়াশ রুমে ছড়িয়েছে। কিন্তু আমাদের ওয়ার্ক ষ্টেশন ওয়াসরুম হতে অনেক ভেতরে আর সম্পূর্ণ এয়ার টাইট, তাই সেখান হতে এখানে গন্ধ??? কাহিনী মাথার উপর দিয়ে গেল।

তখন হঠাৎ মনে পড়ল ছোট বেলার একটি ঘটনা, ফুটবল লীগ দেখতে ঢাকা স্টেডিয়ামে যেতাম তখন, স্কুলের শেষের দিকের ঘটনা। একদিন খেলা দেখে বাসায় ফিরে জামা-কাপড় ছাড়লাম। রাতের খাওয়া শেষে মা ডেকে নিলেন আড়ালে, ছোখ পাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “ছি খোকন! তুই এই বয়সে সিগারেট খাচ্ছিস...” বলেই এক চড়। আমিতো পুরোই বোকা বনে গেলাম। পরে জানলাম আমার জামায় সিগারেটের গন্ধ ছিল সেই চড়ের রহস্য।

কিন্তু আমিতো সিগারেট খাই নাই! পরে ছোট মামার মাধ্যমে আমি এবং বাসার সবাই জানতে পেড়েছিলাম যে সিগারেটের গন্ধ আশেপাশের মানুষের জামাকাপড় এমন কি শরীরেও ছড়িয়ে পরে। একটা কথা? ছোট মামা কি তবে সিগারেট খেতো! যাক এবার আসল কথায় আসি। সেদিন অফিসের কলিগকে এই ঘটনা বললাম, একইভাবে তার শরীরে বয়ে গন্ধ আমাদের ওয়ার্ক ষ্টেশন পর্যন্ত পৌঁছেছে। পাশে থেকে আরেক সহকর্মী বলে উঠলো যত্তসব আজগুবি কথা! মাইন্ড খাইলাম, শুরু হল স্টাডি, “অ্যা ব্রিফ হিস্টোরি অব গন্ধ?”। আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয় – চক্ষু, কর্ণ, জিহ্বা, নাক আর ত্বক।

সাইন্সের স্টুডেন্ট হিসেবে এইচ.এস.সি.’র গণ্ডি পেরোনোর আগেই দর্শন, শ্রবণ আর ত্বকের স্পর্শানুভূতি সম্পর্কে জানা ছিল। কিন্তু কখনো ঘ্রাণ আর স্বাদ নিয়ে তেমন ভাবি নাই। তো কি পেলাম স্টাডি হতে? আসুন জেনে নেই। ঘ্রাণ একটা রাসায়নিক অনুভূতি যা chemoreceptors নামক কোষ দ্বারা সঞ্চালিত হয়। যখন আমরা কোন গন্ধ/ঘ্রাণ পাই, নাকে অবস্থিত chemoreceptors কোষ তা চিহ্নিত করে এবং একটি বৈদ্যুতিক সিগন্যাল প্রেরণ করে আমাদের মস্তিষ্কে।

মস্তিষ্ক তখন তা বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্টভাবে স্মৃতির আধারে জমা করে রাখে ভবিষ্যৎ অনুভূতির সাড়া দেয়ার লক্ষে। কিন্তু কথা হল, গন্ধ আসলে কি? মূলত গন্ধ বহন করে একধরনের কণা, এই কণাগুলোকে সাধারণত odorants বলা হয়। সাধারণত যে সকল দ্রব্য সহজে গ্যাসে রূপান্তর করা যায়, সে সকল দ্রব্য হতে এই কণা বাতাসের দ্বারা প্রবাহিত হয়ে আমাদের নাকে এসে ঘ্রাণের অনুভূতি জাগায়। আর একারণে ইস্পাত জাতীয় দ্রব্যে সাধারণত গন্ধ পাওয়া যায় না। আরও বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।

আমার এই অর্জিত জ্ঞান যখন আমার সেই সহকর্মীকে বললাম, সে খুব মজা পেল। আর পাশের থেকে ঐ সহকর্মী বলল, যত্তসব আজগুবি কথা!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.