আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সহিহ রাজাকার নামা



বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তান রক্ষার পক্ষে যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিবৃতি : * ৩ এপ্রিল গভর্নর জেনালের টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাত করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন জ্ঞাপন করে গোলাম আযম। * ৭ এপ্রিল সংবাদপত্রে এক বিবৃতিতে গোলাম আযম বলে, সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের দেখামাত্র খতম করা হবে। * ৮ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর আমীর গোলাম আযম ও সাধারণ সম্পাদক এক যুক্ত বিবৃতিতে বলে, ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। ভারতীয় বা পাকিস্তানবিরোধী এজেন্ট বা অনুপ্রবেশকারীদের যেখানেই দেখা পাওয়া যাবে, দেশপ্রেমিক পূর্ব পাকিস্তানীরা তাদের নির্মূল করবে। * ১০ এপ্রিল সামাজিকভাবে বিরুদ্ধাচরণের জন্য শান্তি কমিটি গঠন করা হয়।

গোলাম আযম শান্তি কমিটির শীর্ষ সদস্য হিসেবে যোগ দেয়। * ১২ এপ্রিল ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি কমিটি পরিকল্পিত মিছিলে গোলাম আযম নেতৃত্ব দেয় এবং মিছিল শেষে সে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর জন্য আল্লাহর নিকট(ধর্মব্যবসায়ী) দোয়া করে। * ১৭. জুন গোলাম আযম বলে, দুষ্কৃতিকারী (মুক্তিযোদ্ধা) এখনও ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। এদের পাকড়াও করা গেলে তবেই পরিস্থিতি দমন করা যায়। * ২০ জুন গোলাম আযম লাহোরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলে, যারা প্রকাশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু করেছিল, তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

সেনাবাহিনী সকল দুষ্কৃতিকারী উৎখাত করেছে। মুক্তিবাহিনীকে মোকাবেলার জন্য সরকারের কাছে অস্ত্র সরবরাহের জন্য সে দাবি জানায়। * ২২ জুন এক সাক্ষাৎকারে গোলাম আযম বলে, তারা কখনোই পাকিস্তানকে ত্যাগ করতে পারবে না। প্রয়োজনে কোরবানী দেয়ার জন্যেও তার কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে। একই দিন গোলাম আযম তার দলের এক কর্মীসভায় বলে, বেআইনি ঘোষিত আওয়ামী লীগ কর্র্তৃক পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট গোলযোগ ১৮৫৭ সালের বাংলা বিদ্রোহের চেয়ে দশগুণ বেশি শক্তিশালী ছিল।

ওদিনই সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে যেসব দল আন্দোলন করছে তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আহ্বান জানায়। * ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তানী ভাইয়েরা সর্বদাই পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে বাস করবে। * ৩০ জুন গোলাম আযম ও তার রাজনৈতিক পূর্বসূরি বা গুরু মাওলানা আবুল আলা মওদুদী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সংসদ সদস্যদের সদস্যত্ব বাতিল ঘোষণা করায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে অভিনন্দন জানায়। * ১২ আগস্ট গোলাম আযম বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থকদের দুশমন আখ্যা দিয়ে তন্নতন্ন করে খুঁজে বের করার আহবান জানায়। একই দিন জামাত নেতারা ডাক্তার মালেকের পুতুল সরকারে যোগ দেয়।

* ১৪ আগস্ট গোলাম আযম বলে, জাতি যে চরম সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এবারের স্বাধীনতা দিবস পালন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের আদর্শের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতাই জাতীয় সঙ্কটের মূল কারণ। * ১৮ আগস্ট গোলাম আযম লাহোরে বলে, জামাতে ইসলামীকে (মওদূদী ইসলাম) যারা দেশপ্রেমিক সংস্থা নয় বলে আখ্যা দিচ্ছে তারা হয় জানে না বা স্বীকার করার সাহস পায় না যে, ইসলামের আদর্শ তুলে ধরা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরোধিতা করার জন্য কেবল পূর্ব পাকিস্তানে জামাতের বিপুল কর্মী দুষ্কৃতিকারীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে। * ২৬ আগস্ট পেশোয়ারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গোলাম আযম বলে, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানী দুষ্কৃতিকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেছে।

এই দুষ্কৃতিকারীদের ধ্বংস করার জন্য সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে। * ২৮ আগস্ট গোলাম আযম বলে, শুধুমাত্র ইসলামী আদর্শই পাকিস্তানের দুই অংশের ঐক্য বজায় রাখতে পারে। সে পাকিস্তানের সংহতি রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে। * ৩১ আগস্ট গোলাম আযম বলে, বেআইনি আওয়ামী লীগের টিকটে নির্বাচিত ও সরকার কর্তৃক বহাল ঘোষিত ৮৮ জন সদস্যের অধিকাংশই পাকিস্তানে নেই। বর্তমান মুহূর্তে আশু প্রয়োজন হচ্ছে, পূর্ব পাকিস্তানে দেশপ্রেমিক ও ইসলামপ্রিয় লোকজনের হাত শক্তিশালী করা।

এসব লোক পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে এবং দুষ্কৃতিকারীদের রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে ও বিদ্রোহীদের দমনে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনকে পূর্ণ সহযোগিতা দান করছে। পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসছে। * ১ সেপ্টেম্বর গোলাম আযম বলে, কোন ভাল মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না। পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করার জন্যে একমনা ও দেশপ্রেমিক লোকেরা একত্রে কাজ করে যাচ্ছে। রাজাকাররা খুবই ভালো কাজ করছে।

* ১৬ সেপ্টেম্বর গোলাম আযম রাজাকারদের মনোবল শক্ত করার জন্য রাজাকার শিবির পরিদর্শন করে। * ২০ সেপ্টেম্বর ডাক্তার মালেক মন্ত্রীসভাকে গোলাম আযম অভিনন্দন জানায়। * ২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রীসভাকে জামাতে ইসলামী (মওদূদী ইসলাম) এক সম্বর্ধনা দেয়। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে গোলাম আযম বলে, পাকিস্তানই যদি না থাকে তাহলে জামাত কর্মীদের বেঁচে থেকে লাভ নেই। * ১১ অক্টোবর জামাত নেতারা রাজাকার আলবাদরদের ভারী অস্ত্রশস্ত্র দাবি করে বলে, অন্যথায় মুক্তিবাহিনী দমন করা যাবে না।

’ * ২৪ নভেম্বর গোলাম আযম এক বিবৃতিতে পাকিস্তানকে ভারত আক্রমণের আহ্বান জানায় এবং রাজাকার-আলবাদরদের উন্নতমানের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত করার আহ্বান জানায়। * ১২ এপ্রিল ঢাকায় ছাত্র সংঘ (আই সি এস) নেতা মইত্যা রাজাকার মতিউর রহমান নিজামী, মোহাম্মদ ইউনুস, নুরুদ্দিন ইসলাম, শাহ জামাল চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলে, স্বাধীন বাংলা আমাদের গোলামে পরিণত করবে। * ৬. সেপ্টেম্বর জামাতের ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক এক বিবৃতিতে বলে, ৬ সেপ্টেম্বর আমাদের পাকিস্তানের সংহতি ও অখ-তার জন্য শপথ নিতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তান রক্ষার পক্ষে জামাতের বর্তমান আমীর নিজামীর বিবৃতি * ৬ সেপ্টেম্বর মতিউর রহমান নিজামী বলে, ছাত্রসংঘ কর্মীরা রক্ত দিয়ে পাকিস্তানের প্রতিইঞ্চি জমি রক্ষা করবে। * ১৪ সেপ্টেম্বরে নিজামী, সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করার আহ্বান জানায়।

* ১৬ সেপ্টেম্বর মতিউর রহমান নিজামী বলে, দুনিয়ার কোন শক্তি পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবেনা। ১৭ সেপ্টেম্বর গভর্নর ডাক্তার মালেক মন্ত্রীসভার ১০ জনের মধ্যে ২ জন জামাতী নেতা আব্বাস আলী খান এবং এ কে এম ইউসুফ শপথ প্রহণ করে। * ৮ অক্টেবর পাকিস্তান জামাতের প্রধান মাওলানা মওদুদী বলে, পাকিস্তান রক্ষা পেলে ইসলাম রক্ষা পাবে। কেননা, পাকিস্তানই বিশ্বে ইসলামের সবচেয়ে বড় দুর্গ। * ১৬ নভেম্বর মতিউর রহমান নিজামী এক নিবন্ধে বলে, পাকিস্তান হচ্ছে আল্লাহর ঘর।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তান রক্ষার পক্ষে জামাতীদের মুখপত্র ‘দৈনিক সংগ্রাম’-এর বিবৃতি * ৩০ জুন দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করাকে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা বলে অভিহিত করে। * ২ আগস্ট গোলাম আযম দৈনিক সংগ্রামে এক উপসম্পাদকীয়তে লেখে, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে টিক্কা খানের বীরত্বের কথা শুনে তাকে এক নজর দেখার ইচ্ছা প্রবল হচ্ছিল। তার ছবি আমার মানসপটে বিশেষ মর্যাদার সাথে আঁকা রয়েছে। * ১৫ এপ্রিল জামাতে ইসলামীর(মওদূদী ইসলাম) মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম পাকিস্তানী সৈন্যদের গ্রামে গিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের (মুক্তিবাহিনী) আক্রমণ করার পরামর্শ দেয়। * ২২ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রামে লেখা হয়, মাননীয় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও টিক্কা খানের সময় উপযোগী পদক্ষেপের জন্য পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।

* ২৩ এপ্রিল দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনী ধরার জন্য বাড়ি বাড়ি তল্লাসী করার পরামর্শ দেয়। * ১০ এপ্রিল একই পত্রিকায় লেখা হয়, যারা পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ করেছিল তাদের পাকিস্তানে জায়গা হবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.