প্রায় ডায়রি...
কমলকুমার মজুমদারের পিসতুতো বোন সুষ্মিতা মজুমদারের সেকালে বিয়ে হলো ক্যাপ্টেন আনোয়ারের, যিনি কবি গোলাম মোস্তফার বড়ছেলে বা শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ারের বড়ভাই। সেই সুষ্মিতা অানোয়ার পরে হলেন সুষ্মিতা ইসলাম, বর্তমানে তার বয়স ৮৭ বছর। অাজ বহুদিন পর গুলশান নিবাসী সুষ্মিতা দি'র সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ হলো। খুব ভালো লাগল।
মনে পড়ল, ১৯৯৮ সালে, সুষ্মিতা দি'র ১ নম্বর সেন্ট্রাল রোডের বাসার তিনতলায় আমার প্রথম কবিতার বইয়ের ঘরোয়া প্রকাশনা উৎসব করেছিলেন দিদি।
তখন অামি চারুকলার ছাত্র। বাংলা একাডেমি থেকে বইটা বের হলো। দিদিই একদিন প্রকাশনা উৎসবের অায়োজন করলেন তার বাসায়। সানাই বাজিয়ে তরুণ কবির প্রথম বইয়ের সেই উৎসবে পোলাও বিরানিও করেছিলেন সুষ্মিতা দি। উৎসবে কারা ছিলেন? বাড়ির নিচতলা থেকে কেতাবি ভঙ্গিতে তিনতলায় এলেন দিদির সাবেক স্বামীর ছোটভাই মন্টু ওরফে শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার।
অার ছিলেন ক্রিটিক মইনুদ্দিন খালেদ, কবি অাবু হাসান শাহরিয়ার, মেজর অব: কামরুল হাসান ভূইয়া, অালোকচিত্রী নাসির অালী মামুন এবং অামি। অামাকে খাওয়া-দাওয়ার পূর্বে বলা হলো, নতুন বই থেকে কয়েকটি কবিতা পড়ো। আমি খুব লজ্জা পাচ্ছিলাম। সেই হচ্ছে অামার কোনো বইয়ের প্রকাশনা উৎসব. সুষ্মিতা দি'র অায়োজনে। দিদির কাছে অনেকগুলো চিঠি দেখেছি, বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা।
বঙ্কিম সে-সব চিঠি লিখেছেন সুষ্মিতা দি'র মাকে, দিদির মা ঘরোয়াভাবে দেয়াল পত্রিকা বের করতেন, বঙ্কিম চিঠি লিখেছেন সেই দেয়াল পত্রিকায় লেখা দেওয়া ও অন্যান্য প্রসঙ্গে। দিদি যখন হাওড়া গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী, তখন ৪১ সাল, সেবছরই রবীন্দ্রনাথ মারা গেলেন। বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজছে কোলকাতাতেও। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী সুষ্মিতা দি'র সঙ্গে এরপর যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় এবং আজ ফের যোগাযোগ হওয়ায় খুব অানন্দ হচ্ছে। সানাইয়ের ষুরে তিনি তার বাড়িতে আমার প্রথম কবিতা বইয়ের প্রকাশনা উৎসব করেছিলেন...
আজ সন্ধ্যায় ফোনে কথা হলো ঋত্বিক ঘটকের যমজ বোন প্রতীতি দেবীর সঙ্গে।
উৎকণ্ঠায় জানালেন, 'খুকুর ছেলেটিকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে, হাসপাতালে, কাল পর্যন্ত কী যে হয়! বোম্বে নিলেই ভালো হতো। ' খুকু হচ্ছেন প্রতীতি দি'র বড়ভাই মনীশ ঘটকের মেয়ে মহাশ্বেতা দেবী ও বিজন ভট্টাচার্যের ছেলে মানে অামাদের নবারুণ ভট্টাচার্য।
অাশা করি, নবারুন দা সুস্থ হয়ে কোলকাতা ফিরবেন। দ্রুতই অামি গুলশান যাচ্ছি, সুষ্মিতা দি'কে দেখতে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।