দুর্বৃত্তের হামলায় আহত মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রাষ্ট্রপক্ষের এক সাক্ষীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মোস্তফা হাওলাদার ৫৫)। তিনি গত তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে সোমবার রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মোস্তফা ছিলেন সাঈদীর বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার অষ্টম সাক্ষী। মোস্তফার পরিবারের অভিযোগ, সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ার কারণেই সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে। নিহতের বাড়ি পিরোজপুরের জিয়ানগর থানার হোগলাবুনিয়া গ্রামে। এদিকে মোস্তফার মৃত্যুর খবর শুনে ঢাকা মেডিকেলে ছুটে যান আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন তুরিন আফরোজসহ অনেকে। গত শনিবার রাতে মোস্তফাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে এক দুর্বৃত্ত। পরে তাকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ওই রাতেই তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। মোস্তফার স্ত্রী হাসিনা বেগম জানান, গত শনিবার রাতে তারা ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত একটার দিকে এক দুর্বৃত্ত সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে তার স্বামীর মাথায় কোপ দেয়। তিনি জেগে উঠলে তার সঙ্গে হামলাকারীর ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় হামলাকারী তাকেও আঘাত করে। মোস্তফার ছেলে হাফিজুল দাবি করেছেন, হামলাকারীকে তার মা চিনতে পেরেছেন। নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, হোগলাবুনিয়া গ্রামের বাড়িতে মোস্তফার লাশ দাফন করা হবে। মোস্তফা হাওলাদারের ওপর হামলার ঘটনায় গত সোমবার তার ছোট ভাই আবদুল মজিদ হাওলাদার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে জিয়ানগর থানায় একটি মামলা করেছেন।
ট্রাইব্যুনালের উদ্বেগ : সাঈদীর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদার হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গতকাল সকালে এই উদ্বেগ জানিয়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর প্রসিকিউশনের আইনজীবীর কাছে সাক্ষীর মৃত্যুর ঘটনা জানতে চান। প্রসিকিউশনের কাছে বিস্তারিত শুনে ট্রাইব্যুনাল বলেন, নিরাপত্তা না দিতে পারলে সাক্ষী আনতে পারবেন না বলে সরকারকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিন। সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলে তা মেনে নেওয়া যায় না। আপনারা দ্রুত ব্যবস্থা নিন। আপনারা সরকারকে চাপ দেন যে, সাক্ষীর নিরাপত্তা না দিলে আমরা কোনো সাক্ষী আনতে পারব না। সাক্ষীর নিরাপত্তাই যদি না থাকে তবে সাক্ষী আনবেন কী করে? আসামি পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাইব্যুনালস রুল অনুযায়ী সাক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিষয়টিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।