হরতাল-অবরোধের কারণে বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনারের ডেমারেজ চার্জ মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। কাস্টমস আউট পাস হওয়ার পর যেসব আমদানিকারক রাজনৈতিক অস্থিরতায় তাদের মালামাল নিতে পারেননি কেবল তারাই এ সুবিধা পাবেন। ২৫ নভেম্বরের পর থেকে বন্দরে আটকে থাকা মালামালের ডেমারেজ চার্জ 'কেস টু কেস' ভিত্তিতে মওকুফ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চবক সচিব সৈয়দ ফরহাদউদ্দীন আহমেদ।
দেশব্যাপী টানা হরতাল-অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যের জট সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা কাস্টমস ছাড়পত্র পেলেও প্রয়োজনীয় কাভার্ড ভ্যানের অভাবে আমদানিকৃত পণ্য সরাতে পারছেন না। ফলে বন্দরের গুদামে আটকে থাকা আমদানি পণ্যের বিপরীতে দিনপ্রতি ডেমারেজ চার্জ গুনতে হচ্ছে তাদের। জানা গেছে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান পানগাঁও বন্দর চালুর বিষয়ে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ব্যবসায়ীরা বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনারের ডেমারেজ ফি মওকুফের আবেদন জানান মন্ত্রীর কাছে। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল-অবরোধের কারণে তারা তাদের পণ্য নিতে পারছেন না। ফলে কনটেইনারের ডেমারেজ ফি বেড়ে যাচ্ছে, যা পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীদের এ ধরনের আবেদনের পর নৌপরিবহনমন্ত্রী বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে বিবেচনা করার জন্য চবককে নির্দেশ দেন। শেষে ৯ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখে 'কেস টু কেস' ভিত্তিতে ডেমারেজ ফি মওকুফের সিদ্ধান্তের কথা জানান চবক সচিব। আটকে থাকা পণ্যের ডেমারেজ চার্জ মওকুফ বাবদ কী পরিমাণ অর্থ ছাড় দেবে চবক তার কোনো হিসাবে করা হয়নি এখনো। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, হরতাল-অবরোধের কারণে সোমবার পর্যন্ত ২০ ফুট আকারের প্রায় ১৭ হাজার কনটেইনার (টুয়েন্টি ফিট ইকুইভেলেন্ট ইউনিটস) আটকে আছে। সাধারণত পণ্য ডেলিভারির মেয়াদোত্তীর্ণের পর প্রতি ২০ ফুট আকারের কনটেইনারের জন্য দিনপ্রতি ৬ ডলার করে চার্জ ধরা হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত বিভিন্ন মালামালের বিপরীতে ১৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা গুদামভাড়া মওকুফ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ ১৯৮৬ সালে প্রবর্তিত যা ২০০৮ সালে কিছুটা সংশোধন করা হয়। দীর্ঘ সময়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে বন্দরের ব্যয় বাড়লেও তার বিপরীতে চার্জ বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে ট্যারিফভুক্ত আইটেমের বিপরীতে প্রকৃত আদায়যোগ্য মাশুল মওকুফের কারণে বন্দরের আয় কমে যাচ্ছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।