মহাজোট সরকারের শেষ সময়ে এসে বরাদ্দ দেওয়া লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচি ও টিআর (টেস্ট রিলিফ) কর্মসূচির বিভিন্ন প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের শর্ত হিসেবে কাবিখার ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার মাটি কাটার জন্য শ্রমিকদের দুই কেজি ৪৮৯ গ্রাম করে চাল দেওয়ার বিধান থাকলেও প্রকল্পের চেয়ারম্যানরা চাল বিক্রি করে শ্রমিকদের নগদ অর্থ দিয়ে মজুরি পরিশোধ করছেন। প্রতিটি প্রকল্পে সাইনবোর্ড টাঙানোর নিয়ম থাকলেও মানা হচ্ছে না। লালমনিরহাট ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে জেলার ৫টি উপজেলায় কাবিখা নির্বাচনী এলাকা ও কাবিখা সাধারণ বরাদ্দ আসে ৩ হাজার ৫০০ মে. টন এবং টিআর নির্বাচনী এলাকা ও টিআর সাধারণ বরাদ্দ আসে ৩ হাজার ৪০০ মে. টন। মোট ৬ হাজার ৯০০ মে. টন টিআর ও কাবিখার বিপরীতে ৫টি উপজেলায় প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২ হাজার ১০০টি। প্রকল্প বাস্তবায়নের শর্ত হিসেবে প্রতি ঘনমিটার মাটি কাটার জন্য শ্রমিকদের দুই কেজি ৪৮৯ গ্রাম করে চাল দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই চাল বিক্রি করে টাকায় শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করা যাবে না। প্রতিটি প্রকল্পে সাইনবোর্ড টাঙাতে হবে। কিন্তু সরজমিনে বেশ কিছু প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, কোনো প্রকল্পেই সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ও কুলাঘাট ইউনিয়নের দুটি রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা অভিযোগ বলেন, তারা প্রত্যেকেই প্রতিদিন পাঁচ-ছয় ঘনমিটার মাটি কাটেন। পাঁচ ঘনমিটার মাটি কাটলে প্রতিদিন ১২ কেজি ৪৪৫ গ্রাম চাল পাওয়ার কথা। প্রতি কেজি চালের দাম ২৮ টাকা করে হলে ১২ কেজি ৪৪৫ গ্রাম চালের দাম হয় ৩৫০ টাকা। সেখানে প্রত্যেক শ্রমিককে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। ওই দুই প্রকল্পের চেয়ারম্যানরা জানান, বিনা মজুরিতে তারা শ্রমিকদের দিয়ে মাটি কাটাচ্ছেন না। চালের পরিবর্তে শ্রমিকদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। কথা হয় ভোটমারি ইউনিয়ন পরিষদের এক ইউপি সদস্যের সঙ্গে। প্রকল্প চেয়ারম্যান হিসেবে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে টাকা দিয়েছি, তাই সাইনবোর্ডের দরকার নেই, কাজ শতভাগ করারও দরকার নেই। এদিকে টিআর কর্মসূচির ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেওয়া হবে সেই প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের হাতে বরাদ্দকৃত টাকা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা না করে দেওয়া হচ্ছে তার অর্ধেক টাকা। অবশিষ্ট টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতিরা। ফলে এখানেও ঘটছে বড় ধরনের পুকুর চুরির ঘটনা। জেলার ৫টি উপজেলার পাঁচ শতাধিক প্রকল্পের কাজের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। লালমনিরহাট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহসীনুল হক বলেন, কাজ করলে তো একটু-আধটু ভুল হবেই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।