ক্ষমা করবেন ক্ষমতার কাঁচামাল ও জ্বালানী
ড. মঞ্জুরে খোদা টরিক
মৃত্যু/লাশ এখন নিছকই একটি গা সওয়া বিষয়। তা আর আজকাল অন্যদের বিচলিত করে না মোটেও। দিনের হাওয়া বুঝে, বাজি ধরে বলে দেয় শিশুও, কাল কতজন..! ২৫ নভেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারী, সময় ৪০ দিন। প্রতিদিন গড়ে ৪-৫। এটা হচ্ছে সাধারণ পাটিগণিত।
আর মালা পরার দিন যত ঘনাবে পরিস্থিতির হিসেবে হবে বীজগণিতে। সেই প্রবণতা বলে লাশের যোগান বাড়াতে হবে ক্ষমতার তন্দুরীর আস্বাদনে..। জনগন হচ্ছে ক্ষমতাকেন্দ্রীক রাজনীতির মাঠ উত্তাপের লাকড়ি। ডিসেম্বর মাস ঠান্ডা বাতাস মানুষও জড়সড়। উত্তরের হাওয়ার গতি বাড়াবে অধিক লাকড়ির যোগান, আর তাতেই বেজায় পুলকিত বোধ করে উত্তর পাড়ার বাসিন্দারা।
২০০৭ এর জানুয়ারীতেই ঘটেছিল আরেকটা বড় অঘটন! ফের সামনে জানুয়ারী ও নির্বাচন দুটাই আসন্ন! তার মানে কি কোন বড় বিপদও অত্যাসন্ন?
বিশ্বব্যাপীই বেশ ঠান্ডার আমেজ, দেশেও তাই। তাতে কি, পথের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে সবখানে। রঙ্গিন যন্ত্র ও পন্ডিতেরা যথেষ্ট ব্যস্ত। ঘাম ঝরছে কত না এই উত্তাপের বিশ্লেষণে। পত্রিকায় দেখি ঝাঁকা, কোদাল হাতে বসা তামা রঙের মানুষ।
দা-কুড়ালের ঘোষণায় কাকে পুলকিত করেছিল? তারা ছক কষছে তাদের নিশানায়। মূর্খ্য নেতারা পেতে জানেনা স্বাধ ও আনন্দ’ ক্ষমতা ও রাজনীতির! বিচিকলাকেই নিয়ত সন্দেশ ভেবে গলায় পুরে, তাতেই তৃপ্তির ঢেকুর.. আহ কি আনন্দ..! জনগনও যেন সব পাথর বাটি! দুঃখ ও বঞ্চনা এত বেশি যে কোন কিছুই যেন তাদের আর এতটুকু বিচলিত করে না। হিরক রাজার দেশে মানুষ গুলোর যেমন হয়েছিল। না সবাই কি এমন, একজন মানুষ তো চাই, যে রাজার কাপড়ের খবর জানে। একজন নূরুলদীন তো দেবে হাঁক জাগো বাহে..।
উপায়হীন মানুষ কয়েদির মত গাদাগাদি করে ছোটে কর্মে। আমাকে ক্ষমা করবেন সেই সব স্বজন যারা হয়েছেন গণতন্ত্র ও উন্নয়ন, শিল্প ও দলবাজির জ্বালানী ও কাঁচামাল। রাষ্ট্র, সমাজ ও রাজনীতির পাঠ তাদের জন্য অভিশাপ। তাদের জীবন কেবলি/যেন নিয়তি নির্ধারিত..। আর যারা এই কাঁচামাল সরবরাহের ঠিকাদারী পেয়েছে তারাও এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরই আদম।
সমীকরণটা এখানে খুঁজে পাই কার বিপরীতে কে? যেন বর্গাবাসী প্রজা নিজ স্বজনের লাশ তুলে দেয় জমিদারের গোলায়। নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ। দারিদ্র, বেকারত্ব, অশিক্ষা, অবিশ্বাস ও বিভেদ এদের পরিণত করেছে সভ্য দাসে। এখানে দেখি দ্বিজাতীতত্ত্বের সরল রেখায় শ্রেণীতত্ত্বের আরেক প্রায়োগিক সংস্করণ ও নির্মমতা। নীচতলায় যুদ্ধ ও অশান্তি কিন্তু উপরে সুনশান নিরবতা।
খন্ড খন্ড ও অসংগঠিত যুদ্ধ চলছে বহুদিন, সেনাপতির ছকে সেই পুরানো চাল.. ফের হাতছাড়া হয় বলে মসনদ..। তবু বলি, নয় সন্ধি, নয় প্রস্থান, নয় আত্বসমর্পণ। বীর আর নীতির ধর্ম লড়ে যাওয়া। আসুক আঘাত, বন্ধা সময়ের বুকে- বর্ষার তীক্ষ্ণফলার অব্যর্থ নিশানায়। বড় প্রয়োজন দারুণ স্পর্দ্ধা ও বেপরোয়া তারুণ্যের।
জয় বাংলা, জয় তারুণ্য।
লেখকঃ গবেষক, ইনিসস্টিটিউট অব পলিসি সাইন্স, জাপান. সাবেক ছাত্রনেতা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।