দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় অবশেষে রাজপথে নামলেন। ৫০ লাখ ব্যবসায়ীর দাবি একটাই- তারা শান্তি চান। রাজনীতির নামে সংঘাত আর নাশকতার নিন্দা জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হলে আমাদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। গত রবিবার বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন সারা দেশে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে সাদা পতাকা মিছিলের আয়োজন করে। ব্যবসায়ীরা কলহপ্রিয় রাজনীতিকদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করবেন না। রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিকভাবে সমাধান করুন। ব্যবসায়ীদের রাজপথে নামার ঘটনাটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সামনে এগুনোর কোনো বিকল্প থাকে না। তাদের অবস্থাও তাই। লাগাতার হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। তাদের ব্যবসা শিকেয় ওঠার উপক্রম। দেশের আমদানি-রপ্তানি দুই বাণিজ্যই স্তব্ধ হওয়ার পথে। কল-কারখানার উৎপাদন হোঁচট খাচ্ছে। হরতাল-অবরোধ রাজনৈতিক সহিংসতায় উৎপাদন ব্যাহত হলেও ব্যবসায়ীদের মাস শেষে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন গুনতে হচ্ছে। শোধ করতে হচ্ছে সুদ-আসলে ব্যাংক ঋণের টাকা। হরতাল-অবরোধ রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে পরিবহন ব্যয় কোনো কোনো ক্ষেত্রে দশগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব ধরে নাড়া দিয়েছে এ অবস্থা। ব্যবসায়ীরা সাধারণত সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার করে নিজেদের জন্য সুবিধা নিশ্চিত করেন। আন্দোলন-সংগ্রামের ধারে-কাছে তারা যেতে চান না। কিন্তু সাংঘর্ষিক রাজনীতি তাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে। আমরা মনে করি রাজনৈতিক সংঘাত বন্ধের জন্য ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যে আন্দোলন করছে তার পেছনে গুটিকয়েক স্বার্থান্বেষী ছাড়া গোটা জাতির সমর্থন রয়েছে। হরতাল-অবরোধ ও সাংঘর্ষিক রাজনীতি মানুষের নিরাপত্তা কেড়ে নিচ্ছে। বৃদ্ধি করছে প্রাণহানির সংখ্যা। প্রতিদিনই বাড়ছে লাশের মিছিল। রাজনৈতিক দলগুলো চলে ব্যবসায়ীদের দেওয়া চাঁদায়। নৈরাজ্য প্রতিরোধে তারা যে আন্দোলনে নেমেছেন তাতে অটল থাকলে পুরো জাতিই তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।