রাজধানীর গোপীবাগের একটি বাসায় বাবা-ছেলেসহ ছয় ব্যক্তিকে জবাই করে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৬৪/৬, রামকৃষ্ণ মিশন রোডের চার তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন- লুৎফুর রহমান ফারুক (৫৫), মনির (৩০), সারোয়ার (৩২), রুবেল (৩০), মঞ্জু (৩০) ও শাহীনুর রহমান (৩২)। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেছে পুলিশ।
খবর শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে যান থানা পুলিশ, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট, র্যাব ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার ইলিয়াস শরীফ বলেন, ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরপরই আমরা সন্ধ্যায় ওই ছয়জনের জবাই করা লাশ উদ্ধার করেছি। ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতির উদ্দেশ্যেই দুর্বৃত্তরা ওই ভবনে প্রবেশ করেছিল। কারণ হত্যাকাণ্ড শেষে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার সময় বাসার অনেক মালামাল নিয়ে গেছে।
জানা গেছে, 'আয়না' নামের ওই ভবনটিতে কিছু দিন ধরে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিলেন নিহত লুৎফুর রহমান। তিনি ওই এলাকায় আধ্যাত্দিক পীর বলে পরিচিত ছিলেন। প্রতিদিনই তার কাছে ভক্তরা আসতেন দীক্ষা নেওয়ার জন্য। গতকালও তারা এসেছিলেন। নিহত মনির হোসেন তারই ছেলে।
তিনি সিটি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। নিহত মঞ্জু ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক। চারতলা ওই ভবনের নিচ তলায় মেস হিসেবে ভাড়া দিয়েছিলেন ভবনের মালিক শিরিনা বেগম। শিরিনা বেগম জানান, গত ২-৩ মাস আগে পীর লুৎফুর মাসে ২৪ হাজার টাকা হিসেবে ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন। পীর লুৎফুরের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে এবং বাসার তত্ত্বাবধায়ক মঞ্জুর বাড়ি বামনগাতী সিরাজগঞ্জে বলে জানান তিনি।
পুলিশের ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্বৃত্তরা সন্ধ্যার দিকে ওই ভবনে ঢুকেই ভবনের বাসিন্দাদের হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়। একটি কক্ষে চারজনকে, অন্য কক্ষে দুজনকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। তবে নিহত পীরের মা, পুত্রবধূ, নাতি ও একজন মহিলাকে পাশর্্ববর্তী একটি কক্ষে আটকে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা। তাদের দেওয়া জবানবন্দি অনুসারে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, আটজন দুর্বৃত্ত ভক্ত আশেকান হিসেবে মাগরিবের নামাজের আগে ওই বাসায় ঢোকে। তারা মাগরিবের নামাজও সেখানে আদায় করেছিল।
ওই ভবনের পাশের ভবনের দোতলার বাসিন্দা মফিজ উদ্দিন বলেন, পাশের ফ্ল্যাট থেকে চিৎকার শুনতে পেয়ে আমি দৌড়ে যাই। গিয়ে দেখি দরজার সামনে দুটি লাশ পড়ে আছে। নিহতদের একজন সম্প্রতি ওই বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেছেন। প্রত্যেকের হাত-পা বাঁধা, মুখে স্কচটেপ পেঁচানো। গলায় কাটা দাগ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।