লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল অলি আহমদ, বীর বিক্রম (অবঃ), এম.পি এক বিবৃতিতে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে অনুধাবন করতে হবে যে, শুধুমাত্র একটি পঞ্চদশ সংশোধনীর কারনে দেশের ষোল কোটি মানুষ দল মত ও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন এবং হয়রানির শিকার হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে কোন নাগরিকের জান ও মালের নিরাপত্তা নাই। মানুষ অসহায়, হতবাক এবং নির্বিকার। প্রতিদিন মানুষ নিধন করা হচ্ছে। ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধের পথে।
মিল কলকারখানা ধ্বংস্তুপের উপরে দাড়িয়ে আছে। জেল খানায় জায়গা নাই। ন্যায় বিচার নির্বাসিত। গনতন্ত্র আজ ধ্বংস্তুপের উপর দন্ডায়মান। জনগনের আশা ভরসার কোন স্থল নাই।
তারপরেও কেন ক্ষমতার নেশা থেকে বের হয়ে, সকল দলের অংশ গ্রহনের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না।
জনগনের বিরুদ্ধে যেন এক ধরনের প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে। জেনে শুনে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। নিশ্চই নিশ্চই আলস্নাহ রাব্বুল আলামীন কখনো জনগনের উপর এই ধরনের নির্যাতন সহ্য করবেন না।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি একাধিক বার বলেছেন, দেশ ও মানুষের জন্য আপনি যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
তাহলে কেন এই ত্যাগ স্বীকার করে দেশের মানুষকে মুক্তি দিচ্ছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার শুধু বলা হচ্ছে, সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সংবিধান জনগনের মঙ্গলের জন্য, জনগন সংবিধানের জন্য নয়। বর্তমান সরকারের প্রায় ৩১০ জন সংসদ সদস্য রয়েছে। স্বদিচ্ছা থাকলে সংবিধান সংশোধন করে, যে কোনো মুহুর্তে সকলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে দশম জাতীয় সংষদ নির্বাচন করা সম্ভব।
সংবিধানের দোহাই দিয়ে একদলীয় নির্বাচন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এক দলীয় প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করুন। দেশকে ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষা করুন।
কর্নেল অলি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের দেশের জনগনের মঙ্গলের কথা চিন্তা ভাবনা না করে, দেশের মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য পাকিস্তান ও কাদের মোল্লার ফঁাসি ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে আপনার দলের নেতারা ব্যস্ত। মানুষকে বোকা ভাবা ঠিক নয়।
আইন কে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন দেশের জনগনের শত্রু হিসেবে কাজ করছে। গনতন্ত্র আজ ভুলুণ্ঠিত, কোথায় মানবাধিকার এবং ন্যায় বিচার? বর্তমান সরকার বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রেও প্রায় একঘরে হয়ে আছে, মনে হয় বাংলাাদেশ একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিনত হয়েছে। ঢাকা শহর সমগ্র দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন। এ দুরাবস্থার জন্য কে দায়ী? দেশের বিবেকবান ব্যক্তিরাই কেন বা সরকারের সেবা দাস হিসেবে নিজেদেরকে আত্মসমার্পন করছে, তাও বোধগম্য নয়।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে আমরা কি জওয়াব দেব। পদ পদবির মোহই কি সবকিছু? আমাদের নীতি, আদর্শ ও দায়িত্ববোধ কি সম্পুর্ন বিলুপ্ত হয়েছে? কাউকে না কাউকে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। দেশ ও জনগনকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে, সরকার কে নয়। সরকার আসবে এবং যাবে। কিন্তু দেশ থাকবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কিছু কিছু নেতার কারনে দেশে ১৯৭১ সালের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। অন্য দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তারা বদ্ধপরিকর। দেশের অর্জন, অর্থনীতি এবং আইন শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। তারা চায়, এ দেশকে একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিনত করতে। আমরা কি বর্তমান সরকারকে সাহায্য-সহযোগিতা এবং সমর্থন দিয়ে নিজের দেশের ধ্বংস ডেকে নিয়ে আসবো, না এধরনের কর্মকান্ড থেকে নিজেকে বিরত রাখবো? দল মত নির্বিশেষে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে, এই অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনতেই হবে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টকে সাথে নিয়ে একজন তরম্নন ক্যাপ্টেন হিসেবে নিজের বিবেকের তাড়নায় তত্কালিন মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। এই বিদ্রোহের জন্য কারো ধারা প্রভাবিত হই নাই। শুধুমাত্র নিজের দেশের মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও জীবনের ঝুকি নিয়েছিলাম। রাখে আল্লাহ মারে কে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবকিছুর উর্ধে উঠে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিন। আর প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ নয়, প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। অনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের কে নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।