নির্বাচন কমিশনে ভূতের আছর ঘটেছে। কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রার্থীদের হলফনামা হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে 'মন্ত্রীদের অঢেল সম্পদ বিব্রত আওয়ামী লীগ' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের দিনই ঘটল এই 'জাদুকরি' ঘটনা। গত বুধবার বাংলাদেশ প্রতিবেদনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসির সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার থেকে প্রার্থীদের প্রদত্ত ব্যক্তিগত তথ্যাদিসংবলিত ট্যাবটিতে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। কেন এ বিভ্রাটের অবতারণা তা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদেরও অজানা। বলা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে আড়ালে রেখেই সরকার হয়তো বিটিআরসির মাধ্যমে এটি বন্ধ করে দিয়েছে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকেও এ বিষয়টি আলোচিত হয়। পরে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় হলফনামার তথ্য প্রচার বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিশন দৃশ্যত সমালোচনার ঝড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চেয়েছে। হলফনামার তথ্য প্রচার বন্ধে তারা জড়িত নন, ক্ষমতাধর কোনো কর্তৃপক্ষের কারসাজি যে এর পেছনে জড়িত তা প্রকারান্তরে স্পষ্ট করা হয়েছে। স্মর্তব্য, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১২ (৩বি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব প্রার্থী মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামার মাধ্যমে আটটি তথ্য ও কোনো কোনো তথ্যের পক্ষে কাগজপত্র দাখিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতিটি ভোটার যাতে এ সব তথ্য সম্পর্কে জেনে প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সে জন্য ওয়েবসাইটে তা প্রচারও করা হয়। ২০০৬ সালে আদালতের পক্ষ থেকে হলফনামা প্রচারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফলে ওয়েবসাইটে হলফনামার তথ্য বন্ধ হয়ে যাওয়া যে প্রকারান্তরে আইনের লঙ্ঘন তা স্পষ্ট। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন তাদের পক্ষ থেকে এটি বন্ধ করা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে হলফনামা উধাও হয়ে যাওয়ার পেছনে সরকার বা সরকারের কোনো সংস্থা জড়িত থাকলে তা হবে দুর্ভাগ্যজনক। এটি নির্বাচন কমিশনের ওপর অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপেরও নামান্তর। আমরা মনে করি, নির্বাচনে ভোটাররা যাতে সৎ লোকদের বেছে নিতে পারেন সেজন্য নির্বাচন প্রার্থীদের সম্পত্তির হিসাব ভোটারদের জানা দরকার। প্রার্থীরা যে হিসাব দিচ্ছেন তার সঙ্গে তাদের বাস্তব সম্পদের কোনো গরমিল আছে কিনা স্বচ্ছতার স্বার্থে সে বিষয়টি
খতিয়ে দেখার কর্তৃপক্ষও থাকা উচিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।