কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভোলপমেন্ট অব বাংলাদেশ (এফআইভিডিবি) পরিচালিত ৩৯৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। হঠাৎ করে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে এসব বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৫০ হাজার শিক্ষার্থী। যাদের প্রায় সবাই সুবিধাবঞ্চিত ও অতিদরিদ্র শ্রেণীর। বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে পড়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন ১১শ' শিক্ষক-শিক্ষিকাও। এফআইভিডিবি'র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামীতে প্রকল্পটি নবায়ন করা হলে বিদ্যালয়গুলো আবার চালু হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নেদারল্যান্ডের আর্থিক সহযোগিতায় এফআইভিডিবি ২০০৮ সালে 'জনশীলন' প্রকল্পের আওতায় অতিদরিদ্র শ্রেণীর শিশুদের জন্য সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও জয়পুরহাটে ৩৯৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে। এসব বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে ৫০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। গত ডিসেম্বরে কোনো ঘোষণা ছাড়াই স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে কর্মরত শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন। অথচ জনশীলন প্রকল্পের বিদ্যালয় পরিচালনা বিধির ৮নং অনুচ্ছেদে রয়েছে, 'কোনো কারণে যদি সংশ্লিষ্ট সংস্থা বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থ হয়, তবে তারা সরকার কিংবা বেসরকারি কোনো সংস্থা/দানশীল শিক্ষানুগারী কোনো ব্যক্তির নিকট বিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বাধ্য থাকবে।' কিন্তু এফআইভিডিবি বিদ্যালয়ের দায়িত্ব হস্তান্তর না করে শর্ত ভঙ্গ করে এগুলো বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এফআইভিডিবি'র বিদ্যালয়ে কর্মরত কয়েকজন শিক্ষক জানান, এফআইভিডিবি পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোর আশপাশে কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এছাড়া এসব বিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষার্থীই অতিদরিদ্র শ্রেণীর ও সুবিধাবঞ্চিত। ফলে এফআইভিডিবি'র বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হওয়ায় অর্ধ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে, এফআইভিডিবি'র বিদ্যালয়গুলো চালু রাখার দাবিতে ৩১ ডিসেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন এফআইভিডিবি পরিচালিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ ব্যাপারে জনশীলন প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এফআইভিডিবি'র সহযোগী পরিচালক বজলে মোস্তফা রাজী বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে নেদারল্যান্ডের সঙ্গে জনশীলন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। দাতারা আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেওয়ায় বিদ্যালয়গুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন এই প্রকল্পের ব্যাপারে কানাডার সঙ্গে আলোচনা চলছে। তারা রাজি হলে ২০১৫ সাল থেকে বিদ্যালয়গুলো আবার চালু করা সম্ভব হবে। বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়তে পারে বলে তিনিও আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।