দেশের ইতিহাসে আরেকটি অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত বেশির ভাগ দলের অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠিতব্য আজকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ ১২টি দল অংশ নিচ্ছে। সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে একজন করে প্রার্থী থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে পাঁচটি জেলার সবকটি আসনে একজন করে প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা নির্বাচিত হওয়ায় ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না। বাদ বাকি ৫৯ জেলার ১৮ হাজার ২০৯টি ভোটকেন্দ্রের অধিকাংশই বিরোধী দলের ভোট বর্জন এবং যে কোনো মূল্যে নির্বাচন বানচাল করার হুমকির মুখে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে বিরোধী দল প্রভাবিত ১৯টি জেলাকে বেশি স্পর্শকাতর বলে ভাবা হচ্ছে। রেড অ্যালার্ট জারি সত্ত্বেও এসব জেলার জনমনে সহিংসতার আশঙ্কা বিরাজ করছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন বর্জনকারীরা বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেওয়ায় আজকের ভোটগ্রহণ কতটা শান্তিপূর্ণ হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে। বিরোধী দলের অংশগ্রহণ না থাকায় বেশির ভাগ নির্বাচনী এলাকায় ভোটের আমেজ অনুপস্থিত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যেসব এলাকায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা রয়েছেন কেবল সেসব আসনের নির্বাচনে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের ভোটার উপস্থিতির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিরোধী দলের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি দলের প্রার্থীকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে। সরকার ও সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিরোধী দলের বর্জন সত্ত্বেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষার জন্য নির্বাচন করা হচ্ছে। নির্বাচনের পর বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসে সংকট মোচনের আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে সরকারি মহলের পক্ষ থেকে। আমাদের প্রত্যাশা, একতরফা নির্বাচনের ক্লেদ মুছে ফেলতে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের পরপরই বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। বিরোধী দলের নির্বাচন বর্জন ও সহিংস প্রতিরোধের মুখে দশম সংসদ নির্বাচনে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা নির্বাচন কমিশনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও দুষ্কৃতকারীদের তাণ্ডব থামানো সম্ভব হয়নি। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। শত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও একটি কারচুপিহীন নির্বাচন আমরা দেখতে চাই। সরকারের সদিচ্ছা প্রমাণের স্বার্থে এ ক্ষেত্রে তারা সজাগ থাকবেন এ আশাই আমরা করছি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।