৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন যেভাবে হওয়ার কথা ছিল সেভাবেই হয়েছে। এ নির্বাচনে বিরোধী দলের যে সায় ছিল না সেটি এক সুবিদিত সত্য। বিরোধী দল নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, এমনকি তা প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছিল। যে কারণে নির্বাচনে যারা ভোট দিতে গেছেন, ঝুঁকির কথা মনে রেখেই তাদের ভোটকেন্দ্রে যেতে হয়েছে। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে হামলাসহ হিংসাত্দক ঘটনাও কম হয়নি। ভোটের দিন ২১ জনের প্রাণহানি তারই প্রমাণ। দেশের কোনো নির্বাচনে এত প্রাণহানি ঘটেনি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটই শুধু নয়, এ জোটের তীব্র বিরোধী বেশকটি দলও অংশ নেয়নি। একতরফা নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে তারা সম্মানজনক বলে ভাবেননি। এমনকি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার নামে নির্বাচন করার তত্ত্ব খাড়া করেছে যে আওয়ামী লীগ, তাদের সমর্থকদের এক বড় অংশ একতরফা নির্বাচনে ভোট দিতে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি। মন্ত্রীদের কেউ কেউ নির্বাচনের আগেই স্বীকার করেছেন একতরফা নির্বাচন কোনো নির্বাচনই নয়। তারা নির্বাচনের পর সংলাপের মাধ্যমে একাদশ সংসদ নির্বাচনের পথে যাওয়ার আভাস দিয়েছেন। সরকারি দলের এ মনোভাবকে আমরা ইতিবাচক চোখে দেখতে চাই। বিশ্বাস করতে চাই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার যে বেড়ি তাদের হাতপাকে আবদ্ধ করে রেখেছিল নির্বাচনের পর তারা তা থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রেও তাদের মধ্যে মুক্ত বিবেক ও মুক্ত মতের প্রতিফলন ঘটবে। আমরা আশা করব, দশম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসাকে তারা তাদের অগ্রাধিকার কর্মসূচি হিসেবে বেছে নেবে। সংলাপের মাধ্যমে এমন একটি টেকসই নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে, যা বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথ দেখাতে সক্ষম হবে। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে সংঘাত দানা বেঁধে ওঠার যে অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তার চির অবসান ঘটাতে সাহায্য করবে দুই প্রধান দলের সংলাপ। আমাদের বিশ্বাস গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে দশম সংসদ সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে সমঝোতার দ্বার উন্মোচনে সমর্থ হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।