দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও সামগ্রিক অর্থনীতি রক্ষার স্বার্থে নিরাপত্তা-শান্তি এবং সমঝোতা চান শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলেছেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি এখন নাজুক। ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য দেশে শান্তি ও স্থিতি প্রয়োজন। অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের স্বার্থে বিরোধী দলকে সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা আরও বলেছেন, রাজনীতিবিদরা সমঝোতার রাজনীতি নিশ্চিত করুন। সরকারি দল এবং বিরোধী দল কথা বলে সমঝোতা করলেই গণতন্ত্র সুসংহত হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই যে, রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা রাজনৈতিক ভাবেই করুক। একই সঙ্গে অর্থনীতি ধ্বংসের মতো কোনো রকম কর্মসূচি যেন না দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, দুই নেত্রী সমঝোতায় আসুন, সেটা কীভাবে হবে- এটাই এখন দেখার বিষয়।
সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি ও বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, দেশের অর্থনীতি নাজুক। ব্যাংকে বিদেশি ঋণের হার নেতিবাচক। ঋণ হার কমে ৩ শতাংশ নেমেছে। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান প্রায় বন্ধ। আগামী এপ্রিল মাসের পর তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানিতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পাট পণ্য রপ্তানির অবস্থাও খারাপ। তিনি রাজনৈতিক দল ও নেতাদের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের স্বার্থে বিরোধী দলকে সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে সরকার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করুক। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের দায়িত্ব হলো- আমাদের জন্য নিরাপদ ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করা। ব্যবসায়ীদের সেই পরিবেশ যেভাবেই হোক নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন যেহেতু হয়েছে, তাই বিরোধী দলের কাছে আমাদের কোনো দাবি নেই। সরকারকেই সব কিছু করে দিতে হবে।
এফবিসিসিআইর সাবেক প্রথম সহসভাপতি ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (আইবিসিসিআই) সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য দেশে শান্তির প্রয়োজন। এই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করা দরকার, দুই নেত্রী সমঝোতার মাধ্যমে তাই করুন। এটাই ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা।
এফবিসিসিআইর সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ প্লাস্টিকদ্রব্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, সংবিধান অনুযায়ী একটি সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে নতুন একটি সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। নতুন সরকারের কাছে ব্যবসায়ী সমাজের প্রথম প্রত্যাশা হলো- ব্যবসার পরিবেশ ও ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শিল্পের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে বিরোধী দলকে বলতে চাই, সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিরাজমান রাজনৈতিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানে তারাও এগিয়ে আসবেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সভাপতি মো. শাহজাহান খান বলেন, পরামর্শ একটাই সেটা হলো- রাজনীতিবিদরা শান্তি-শৃঙ্খলা-উন্নয়নের রাজনীতি নিশ্চিত করুন। আমরা সমঝোতা চাই। সরকারি দল এবং বিরোধী দল কথা বলে সমঝোতা করলেই গণতন্ত্র নিরাপদ ও সুসংহত হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।