সাংবাদিক মানেই এখন জন্ডিসে আক্রান্ত, রুগ্ন, তাই আলাদা করে হলুদ সাংবাদিক বলারও দিন ফুরাল। আদতে যেটা চলছে তার সার সংক্ষেপ প্রেস রিলিজ বা প্রকাশিত কোনসূত্রের শব্দ, বাক্য, প্যারাগ্রাফ অদলবদল, অনিবার্য কাটছাটের মাধ্যমে কিছু একটা ভুজং ভাজং দিয়ে চাকরি ঠেকা দেয়া। সহজ কথায় বার্বার জার্ণালিজম বা নাপিত সাংবাদিকতা। ভাবতে অবাক লাগে, অনেকের এই নাপিতগিরি করতেও বড্ড আলসেমমি লাগে, গা ম্যাজ ম্যাজ করে, তাই তার চোখ কান বুজে সরাসরি কপি-পেস্ট খবর এ অভ্যস্ত। তাই যেখান থেকে কপি করা হলো সেখানে যদি প্রতিক্রিয়ার জায়গায় ভুল করে রতিক্রিয়া হয়, তবে দেশের প্রায় সকল কাগজেই রতিক্রিয়া চলে দেদারসে।
বিনোদন সাংবাদিকতা মানেতো আরো ভয়াবহ...বিনোদন সংবাদ বলতে আমরা শুধু বিবসনা চরিত্রে পাওলি দাম, নগ্ন হলেন জেনিফার লোপেজ মার্কা খবর ছাড়া আরো একটি বিষয় বুঝি, সংক্ষেপে তা হলে নিজের লেখা নাটক নিয়ে একটা ফিচার, যে শিল্পীকে দিয়ে নিজের একটা গান করানোর কথা মনে মনে বহুদিন ধরে ভাবছি তার একটি বড় সাক্ষাৎকার ডট ডট ডট। আহা ওপার বাংলার আনন্দবাজার পত্রিকা বোধহয় রাতদিন সাত দিন আনন্দ সংবাদই ছাপে। খবর ছাপলেতো নাম হতো খবরেরবাজার পত্রিকা। যা হোক, এমন একটি সময়ে যাত্রা শুরু হলো সম্ভবত দেশের প্রথম ফেসবুক নিউজপোর্টাল আনন্দ প্লাস যার অনলাইন ঠিকানা http://www.facebook.com/anandaplusonline...
শুরু করার আগে একটু পেছন ফিরে তাকানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি, কোথায় যেন পড়েছিলাম ‘বুদ্ধিমানেরা আগে শুরু করে, বোকারা দৌড়ায় তার পিছু’ কথাটি বোধহয় আমাদের সংস্কৃতির জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ বছর দশেক আগে আমি ই বুক প্রকাশ শুরু করেছিলাম, শুরু করেছিলাম অনলাইনে গান মুক্তি একই সাথে আনন্দ ২৪ নামে একটি নিউজ পোর্টালও, দু;খজনক ব্যপার হলো ডিজিটাল ডিজিটাল বলে ঘরে-বাইরে যারা মুখে ফেনা তুলে ফেলেন তারা বাস্তব প্রয়োগও করেন ঐ মুখেই।
এদেশের বেশিরভাগ আইটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান একেকটা ফাঁদ ব্যতিত কিছুই নয়। যা হোক কাজের কথায় আসি, কবে সাত মন ঘি হবে আর রাধা নাচবে সে আশায় অন্তত আমি বসে থাকতে রাজি নই। হাতের কাছে যা আছে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে চাই। যদিও আমাদের সংস্কৃতি হলো বিষয়ের চেয়ে আনুষঙ্গিক চাকচিক্যে আত্নসমর্পণ করা। ধরি আমার বিষয় হলো বিনোদন ও অন্যান্য ফিচার ও ফিচার নিউজ আপডেট দেয়া, সেজন্যতো ফেসবুক পেজই যথেস্ট মূল ব্যপারটা হলো আমার খবরের রসদ ও মান।
ওয়েবসাইট থাকলে ভালো কিন্তু না থাকলেতো মহাভারতের আখ্যান বদলে যাচ্ছে না। আরো একটি কথা বলে রাখি বিজ্ঞাপণ বিজ্ঞাপণ করে শুরুতেই যারা লাখ টাকা অপচয় করে বাহারি ওয়েবপোর্টাল বানিয়ে তিন মাস পর হাল ছেড়ে দিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে কি ই বা বলতে পারি...
শেষের আগে একটি প্রশন্; যে কোন খবরের কাগজে প্রতি কলাম ইন্চি বিজ্ঞাপণ সর্বনিম্ন দর যেখানে হাজার টাকা সেখানে বিশ কলাম লেখা একটি ফিচারের প্রদায়ক বিল কি করে তিন থেকে পাচশ টাকা, তার উপর বিজ্ঞাপণ যখন অগ্রীম সেখানে প্রদায়করা মাসের পর মাস ঘুরেও সন্মানী পান না, বেশীরভাগ কাগজের স্টাফরা ঠিকঠাক বেতনও পান না, সন্মানীর নামে এতো বড় অসন্মান আর কত কাল? তাহলে কি ধরে নেব মালিকপক্ষ ও নিতীনির্ধারকদের পরোক্ষ সমর্থণ রয়েছে নাপিত সাংবাদিকতায়?
পরিশেষে, অনেক স্বপ্ন নিয়ে আনন্দ প্লাস এর যাত্রা করছি, পকেট গড়ের মাঠ, আপাতত ঘরের পিসিও নষ্ট, নিউজ আপডেট দিতে হবে কথিত সাইবার ক্যাফে থেকে, আপনারা পাশে থাকুন, কথা দিচ্ছি ভালো সংবাদ নিয়ে পাশে থাকবো...
শতাব্দী ভব
এডিটর ইন চীফ
আনন্দ প্লাস
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।