আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত নিষিদ্ধে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্

জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার পরামর্শ এসেছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের গৃহীত প্রস্তাবে। সেই সঙ্গে বিএনপিকে হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এ প্রস্তাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে অন্যসব বিকল্পের সঙ্গে আগাম নির্বাচনকে বিবেচনায় নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট এক প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলোর এ অবস্থান তুলে ধরেছে। এতে বাংলাদেশের চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রশংসা করে সাক্ষীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর সুপারিশও করা হয়েছে। ইউরোপের ২৮ দেশের অভিন্ন পার্লামেেেন্টর এ অধিবেশন বসেছিল ফ্রান্সের স্ট্রসবুর্গে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ডিবেট চেম্বারে। মঙ্গলবার সেখানে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। ইউরোপের উদার-মধ্যপন্থি রাজনীতিকদের একটি জোট 'অ্যালায়েন্স অব লিবারেলস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস ফর ইউরোপ (এএলডিই) গ্রুপের ১২ জন সদস্য এ প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গাই ফারহফস্টাড এ জোটের নেতৃত্বে আছেন। বাংলাদেশবিষয়ক প্রস্তাবটির অন্যতম প্রস্তাবক ছিলেন ডাচ রাজনীতিক ম্যারিয়েটা। তবে উত্থাপিত প্রস্তাব পুরোপুরি গ্রহণ করা হয়নি। বড় পরিসরে আলোচনার পরই ১১ দফার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। উত্থাপিত প্রস্তাবে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ করার বিষয়ে বলা হলেও গৃহীত প্রস্তাবে সে ধরনের কোনো বক্তব্য আসেনি।

গৃহীত ১১ দফার প্রস্তাবে যা আছে : গৃহীত প্রস্তাবের প্রথমেই সাম্প্রতিক নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সংঘাত ও হত্যা, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রাত্যহিক জীবনের কার্যক্রম বিনষ্ট করার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানানো হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যা বন্ধ করে আটক করা বিরোধী দলের নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। তৃতীয় দফায় সেক্যুলার রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন বন্ধে কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। চতুর্থ দফায় সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশের সংসদ ও রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করে বাংলাদেশের স্বার্থকে সবার আগে জরুরি হিসেবে স্থান দিতে সরকার ও বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে একটি সমঝোতার পথ খুঁজে বের করতে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশিরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। এ জন্য আগাম নির্বাচনসহ সব বিকল্প বিবেচনা করতে সব রাজনৈতিক দলকে বলা হয়েছে। পঞ্চম দফায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতি বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার জন্য ইউরোপের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসহ সব মাধ্যমে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। ষষ্ঠ দফায় বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে যেসব দলের গণতান্ত্রিক সুনাম রয়েছে, তাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ দফায় জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম থেকে সুস্পষ্টভাবে দূরত্ব বজায় রাখতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো যাচ্ছে। সপ্তম দফায় বলা হয়, যেসব দল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়েছে, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত। অষ্টম দফায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নবম দফায় ট্রাইব্যুনালে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড ও বিডিআর বিদ্রোহে ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং কাদের মোল্লার মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের সরকার ও সংসদের প্রতি মৃত্যুদণ্ড প্রথা তুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের সাক্ষীদের নিরাপত্তা বিধানেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। দশম দফায় বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইন পর্যালোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। ১১তম দফায় গৃহীত প্রস্তাবের অনুলিপি ইউরোপিয়ান কাউন্সিল, ইউরোপিয়ান কমিশন, ইউরোপিয়ান এঙ্টারনাল অ্যাকশন সার্ভিস, হাই রিপ্রেজেনটেটিভ অব দি ইউনিয়ন ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসি, ইইউর মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ও পার্লামেন্ট, জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল এবং বাংলাদেশের সরকার ও জাতীয় সংসদকে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.