আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দিল্লির রাস্তায় শুয়ে রাত কাটালেন কেজরিওয়াল

পুলিশের ঘেরাওয়ের মধ্যে সেখানেই রাস্তায় কাপড় বিছিয়ে কম্বল মোড়া দিয়ে কনকনে শীতের রাত পার করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা দায়িত্বে অবহেলা করছেন। আর তাদের মদদ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার দাবি, এসব পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করতে হবে। এ দাবিতে সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তার অবস্থান কর্মসূচি, ভারতে যাকে বলা হচ্ছে ধর্না।

ইতোমধ্যে পুরো দিল্লিবাসীকে ১০ দিনের এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ দাবিতে ইন্ডিয়া গেটের কাছে, সোমবার পুরো রাত রেলভবনের বাইরের রাস্তায় মাদুরের ওপর কম্বল জড়িয়ে রাত কাটান কেজরিওয়াল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছয়জন মন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির অন্তত ২০০ জন কর্মী।

আর তিন দিন পর (২৬ জানুয়ারি) ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস। আর এ দিবসকে সামনে রেখে ওই এলাকায় নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন।

এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীসহ অন্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশের জন্য বিরাট ঝক্কি হয়ে দাঁড়াবে।

অবশ্য 'শান্তিপূর্ণ ধর্না'র লোকজন গতকাল পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে দিল্লি পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও লাঠিচার্জের কথা অস্বীকার করে পুলিশের পাল্টা অভিযোগ, কেজরিওয়ালের ধর্নাস্থলে এগোনোর সময় 'আপ' সমর্থকরা তাদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। পরিস্থিতি সামলাতেই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হন তারা। মুহূর্তেই ঘটনাস্থলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

জানা গেছে, গত সপ্তাহে দিলি্লর আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতী নগরের দক্ষিণাঞ্চলে একটি বাড়িতে মাদক ও নারী পাচারকারী অভিযোগে চক্রের সদস্য উগান্ডার কয়েকজন নাগরিককে পুলিশকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। কিন্তু পরোয়ানা না থাকায় পুলিশ অভিযান চালাতে অস্বীকৃতি জানায়। এ ছাড়া একটি মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের আরেক মন্ত্রী রাখি বিড়লা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেও পুলিশ তা পালন করেনি বলে অভিযোগ কেজরিওয়ালের।

এসব ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশ সদস্যদের বরখাস্তের দাবি নিয়ে সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচির ডাক দেন কেজরিওয়াল। দাবি পূরণের জন্য সকাল ১০টা পর্যন্ত সময়ও বেঁধে দেন।

ওই সময়ের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে রওনা হন দিলি্লর মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু সচিবালয়ের পথে ইন্ডিয়া গেটের কাছে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকা পড়েন কেজরিওয়াল ও তার মন্ত্রিসভার ছয় সদস্য। তাকে ঠেকাতে সুশীল সিন্ধের কার্যালয়ের সামনে ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়।

১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কনকনে শীতের মধ্যে রাস্তায় ম্যাট্রেস বিছিয়ে কয়েকটি কম্বলে নিজেকে জড়িয়ে সেখানেই ঘুমিয়েছেন আম আদমির ৪৫ বছর বয়সীর এই নেতা। মুখ্যমন্ত্রীর পাদুকাজোড়া এ সময় পাশেই পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এনডিটিভি লিখেছে, মুখ্যমন্ত্রীর শরীর বিশেষ ভালো নয়, আগের দিন বেশ কয়েকবার কাশতে শোনা গিয়েছিল তাকে। তারপরও মধ্যরাতের সামান্য আগে শুয়ে ভোর সোয়া ৫টার পর তিনি উঠে পড়েন। আর ঘুম থেকে উঠেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে শুরু হয় কেজরিওয়ালের ঝাঁজালো বাক্যবাণ, আগের দিন যিনি নিজেকে নৈরাজ্যবাদী ঘোষণা করেছেন। ভোরের আলো তখনো ফোটেনি, কেজরিওয়াল রাস্তায় অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিকদের সামনে বলেন, 'দিলি্লতে যখন এত অপরাধ, মেয়েরা যেখানে নিরাপদ নয়, সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিন্ধে কীভাবে আরাম করে ঘুমান! আমরা তাকে ঘুমাতে দেব না। ' কেজরিওয়ালের অভিযোগ, সুশীল সিন্ধে 'স্বৈরাচারী' আচরণ করছেন।

এই শীতের মধ্যে যারা রাস্তায় জেগে বিক্ষোভ করতে এসেছেন, তাদের নূন্যতম অধিকারগুলোও আমলে নিচ্ছেন না। রাতে ব্যারিকেডের মধ্যে খাবার ও পানি আনতেও বাধা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে 'টিম কেজরিওয়াল'-এর অনড় সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুখপাত্র মিম আফজল বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যে ধরনের কাজ করছে আম আদমি পার্টি, তাতে তাদের সরকার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। আবার জয়রাম রমেশ একধাপ এগিয়ে বলেন, 'আপ যদি এই কার্যকলাপ বজায় রাখে তা হলে দিল্লিতে তাদের সমর্থনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

'

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.