ভারতের সব আবদার পূরণ হয়েছে। ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশ। গত ৩ বছরে ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দিয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনে বাংলাদেশকে ব্যবহার; করিডোর, ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা; চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার; সীমান্তে ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ এবং টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পে সম্মতি আদায়সহ চার দশক ধরে ভারত যেসব আবদার করে আসছিল, তার সবই পূরণ করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। এছাড়া বাংলাদেশকে পুরোপুরি ভারতের ওপর নির্ভরশীল করার যে প্রচেষ্টা ভারত সরকারের ছিল, তা-ও সফল হয়েছে।
সহযোগিতার ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট সইয়ের মাধ্যমে এই কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, তিনবিঘা করিডোর হস্তান্তর, সমুদ্রসীমা নির্ধারণসহ বাংলাদেশের ইস্যুগুলো উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানির বিষয়টিও এখন অনিশ্চিত। এমনকি বহুল আলোচিত এক বিলিয়ন ডলারের যে ঋণ চুক্তি হয়েছে, তার একটি ডলারও ছাড় করেনি ভারত।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শংকর রায় চৌধুরী এক নিবন্ধে বলেন, ঢাকাকে আমরা আর দিল্লির রাডারের বাইরে যেতে দিতে পারি না।
তার সেদিনের সেই মন্তব্য এখন শতভাগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দিল্লির রাডারের মধ্যে থাকতেই দিল্লিকেন্দ্রিক পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণ করে। যে কোনো মূল্যে দিল্লিকে খুশি রাখাই যেন বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্র নীতির মূল লক্ষ্য। আর এ বিষয়ে কোনো ধরনের রাখঢাক না রেখেই স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দিল্লি সফর শেষে দেশে ফিরে ১৬ জানুয়ারি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেভাবে জনগণের ভোট পেয়েছি তাতে ভারতের সঙ্গে যে কোনো ধরনের সমঝোতা করতেই পারি।
সদ্যবিদায়ী ভারতীয় হাইকমিশনার রাজিব মিত্রের মন্তব্যেও বাংলাদেশের একতরফা সহযোগিতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার কারণে দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রায় সব আবদারই পূরণ করে এসেছেন। যেটুকু বাকি ছিল তা সম্পন্ন হয়েছে ড. মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময়।
২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে ভারতের দীর্ঘ ৪ দশকের বিভিন্ন আবদার পূরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বৈঠকেই সই হয় সন্ত্রাস দমন এবং মাদক চোরাচালান রোধ সংক্রান্ত ৩টি চুক্তি। বৈঠকের পর ঘোষিত ৫০ দফার যৌথ ইশতেহারে করিডোর, ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা, বন্দর ব্যবহার, ট্রানজিট কার্যকরের জন্য অন্তর্গত নৌবন্দরকে পোর্ট অব কল ঘোষণা, যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ ভারতের দাবিগুলো বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা দেয়া হয়। সব আবদার এভাবে বাংলাদেশ পূরণ করে দেবে, তা হয়তো ভারতীয় কর্তৃপক্ষও সেদিন ভাবেনি। যৌথ ইশতেহার প্রকাশের পর ভারতের বিখ্যাত দ্যা হিন্দু পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘সুযোগ পেয়ে ঢাকার কাছ থেকে সবকিছু দু’হাতে লুফে নিয়েছে দিল্লি। ’
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর বিদ্রোহ দমনে বাংলাদেশকে ব্যবহারের চেষ্টা ভারতের বহুদিনের।
সন্ত্রাস দমন চুক্তির মাধ্যমে সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। ওই চুক্তির আওতায় দু’দেশের নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের নিয়ে যৌথ টিম গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এই সুযোগ নিয়ে ভারতীয় নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এখন বাংলাদেশে তত্পর। রাজখোয়াসহ অর্ধশতাধিক উলফা নেতাকে তারা ধরে নিয়ে গেছে বলে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হয়েছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও এখন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের টার্গেট হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
সব মিলিয়ে এই সন্ত্রাস দমন চুক্তি বাংলাদেশের গোটা নিরাপত্তাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।
ভারতের দাবি অনুযায়ী, এরই মধ্যে ওডিসি পরিবহনের জন্য ফ্রি ট্রানজিট কার্যকর হয়েছে। এখন ফ্রি করিডোরের জন্য সব ধরনের কার্যক্রম চলছে। ভারতকে করিডোর এবং পূর্ণাঙ্গ ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার জন্য তিতাস নদীর ওপর বাঁধ দেয়া হয়েছে। এমন আত্মঘাতী পদক্ষেপের নজির দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ট্রানজিটের পাশাপাশি এখন চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারতের জন্য ব্যবহার-উপযোগী করার জন্য প্রতিনিয়ত তাগাদা দিয়ে চলেছে ভারত সরকার।
বাংলাদেশকে পুরোপুরি ভারতনির্ভর করে তোলার জন্য ভারতের প্রস্তাবিত ‘সহযোগিতার ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট’ সই হয়েছে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময়। বিতর্কিত ওই চুক্তিতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি থেকে শুরু করে নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২৫ বছর মেয়াদি মৈত্রী চুক্তি, যা গোলামি চুক্তি নামে অধিক পরিচিত ছিল, সে আদলেই এই চুক্তি সই হয়েছে। এই চুক্তির সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো—এই চুক্তির সুনির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ নেই এবং কেউ ইচ্ছা করলেই চুক্তি বাতিল করতে পারবে না।
নিয়ম অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো দেশ কোনো ধরনের স্থাপনা তৈরি করতে পারবে না; কিন্তু ভারত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে স্থাপনা তৈরির অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কাছ থেকে। ভারত এখন সীমান্তে জিরো পয়েন্টে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে।
মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় সই হয়েছে সীমান্ত প্রটোকল। এই প্রটোকল অনুযায়ী সাড়ে ৬ কিলোমিটার অচিহ্নিত সীমানা নতুন করে চিহ্নিত হয়েছে। এখানে ভূমি হারিয়েছে বাংলাদেশ; লাভবান হয়েছে ভারত।
বাংলাদেশ-আসাম সীমান্তে বাংলাদেশ পেয়েছে ৩৫৭ একর জমি, অন্যদিকে আসাম পেয়েছে ১ হাজার ২৩৯ একর জমি। বাংলাদেশ-মেঘালয় সীমান্তে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪১ একর জমি এবং মেঘালয় পেয়েছে ২৪০ একর জমি। সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে ২৪৫.৪১ একর এবং পদুয়া সীমান্তে ১৯৭ একর জমি জরিপের নামে ভারতকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ভারতের দাবি অনুযায়ী যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। গত বছর জুলাই মাসে এ ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে।
সীমান্তে নিয়মিত নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যা করে চলেছে বিএসএফ; অন্যদিকে চুক্তির কথা বলে এই হত্যার দায়ভার বাংলাদেশের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। সম্প্রতি সীমান্তে তিন বাংলাদেশীকে হত্যার ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিবৃতিতে নজিরবিহীন এক যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য দু’দেশের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। তাই সীমান্তে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিজিবিরও দায়িত্ব রয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, ভারতকে খুশি রাখার জন্য ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
দুইশ’ ভরি স্বর্ণের তৈরি বিশেষ এক পদক দেয়া হয়েছে তাকে।
গত তিন বছরে সবকিছু উজাড় করে দেয়ার পরও ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ শুধু পেয়েছে বঞ্চনা। ন্যায্য অধিকারগুলোর একটিও পায়নি বাংলাদেশ। সীমান্তে নির্বিচারে নিরীহ বাংলাদেশী হত্যা করে চলেছে বিএসএফ। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং অধিকারের তথ্য অনুযায়ী গত তিন বছরে সীমান্তে ২০৯ নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে ভারত।
সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বার বার মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঘোষণা দেন সীমান্তে আর হত্যাকাণ্ড ঘটবে না। তার ওই ঘোষণার পর এ পর্যন্ত ১১৬ বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়েছে। মনমোহন সিং গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় এসেও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
২০১০ সালে ৫০ দফার যৌথ ইশতেহারে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিসহ অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানি সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। তিস্তাচুক্তি নিয়ে রীতিমত বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতারণা করেছে ভারত। মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় তিস্তাচুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে এসে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতার উসিলা দেখিয়ে সই করেনি দিল্লি। এখন এই চুক্তির বিষয়টি অনিশ্চিত।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—এই মুহূর্তে তার পক্ষে তিস্তাচুক্তিতে সম্মত হওয়া সম্ভব নয়।
শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় ভারত বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার দিল্লি সফরের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো ভারতের এক বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা। এই ঋণ সহায়তা দেয়ার ঘোষণার পর দু’বছর পার হয়ে গেছে। ঋণের ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে চুক্তিও সই হয়েছে ১৬ মাস আগে।
ঋণচুক্তির আওতায় বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ২০টি প্রকল্পের মধ্যে ১৪টি অনুমোদন করেছে ভারত। বাকি ৬টি প্রকল্প এখনও অনুমোদন করেনি। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এখন পর্যন্ত এক ডলারও ছাড় করেনি ভারত।
বাংলাদেশের জন্য বিপর্যয়কর টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পের ব্যাপারেও ভারত বাংলাদেশকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং আশ্বাস দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হয়, এমন কিছু টিপাইমুখ প্রকল্পে করা হবে না। তিনি আরও বলেন, টিপাইমুখ প্রকল্পে বাংলাদেশকে না জানিয়ে কোনো কিছু করা হবে না। ড. মনমোহন সিং ঢাকায় এসেও একই প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ঢাকা থেকে ফিরে যাওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই বাংলাদেশকে কিছু না জানিয়ে ভারত সরকার টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পের ব্যাপারে দুটি চুক্তি সই করেছে। এই চুক্তি সইয়ের পর বাংলাদেশে বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হলেও সরকারের ভূমিকা রীতিমত রহস্যজনক।
প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং ড. মসিউর রহমান দিল্লি ঘুরে এসে এখন ভারতের পক্ষে টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে সাফাই গেয়ে চলেছেন। তাদের দাবি, টিপাইমুখ প্রকল্পে নাকি বাংলাদেশের লাভ হবে।
বাংলাদেশের কাছে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ বিক্রির যে প্রতিশ্রুতি ভারত দিয়েছিল, তা-ও রাখেনি। এই বিদ্যুত্ আমদানির বিষয়টি এখন রীতিমত অনিশ্চিত। মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বিদ্যুত্ আমদানির ব্যাপারে চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ভারতের একতরফা শর্তের কারণে সেই চুক্তি হয়নি। ভারতের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, চুক্তির যাবতীয় শর্ত এবং বিদ্যুতের দাম ঠিক করে দেবে ভারত। এছাড়া বাংলাদেশে বিদ্যুত্ রফতানির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপত্তি রয়েছে।
সই হওয়া সীমান্ত প্রটোকল অনুযায়ী দু’দেশের অপদখলীয় ভূমি ও ছিটমহল হস্তান্তরের বিষয়টি সঠিকভাবে এগোচ্ছে না। ইন্দিরা-মুজিব সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী তিনবিঘা করিডোর বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করার কথা, কিন্তু ভারত তা না করে শুধু চলাচলের জন্য তিনবিঘা করিডোর খুলে দিয়েছে।
তিনবিঘা করিডোরের বদলে ভারতের কাছে বেরুবাড়ী হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ।
এছাড়া সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, শীলঘাটকে বাংলাদেশের ব্যবহার-উপযোগী করে তোলা, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোসহ ভারত যেসব প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশকে দিয়েছে তা বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি নেই।
গত তিন বছরে বর্তমান সরকার ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দিলেও প্রতিদানে ন্যায্য অধিকারটুকু আদায় করতে পারেনি। তবে ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দিয়ে দেশের কোনো লাভ না হলেও ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা লাভবান হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ভারত সরকারের কাছ থেকে পেয়েছেন ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার।
শেখ হাসিনা আগামী সপ্তাহে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি একটি ডক্টরেট ডিগ্রি পাবেন। ভারতের কাছ থেকে পাওয়া এই পুরস্কারইবা কম কী! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।