working in DPL
প্রাচীন মিসরীয় সাম্রাজ্য থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা দুনিয়ায় ঝড় তুলেছেন এই নারীরা। খ্যাতিতে, জনপ্রিয়তায়, বিত্তবৈভবে, বিতর্কে, আলোচনা-সমালোচনায় তোলপাড় করেছেন বিশ্ব। তাঁরা বুদ্ধিমতী, তাঁরা মেধাবী। তাঁরা রাষ্ট্রনেতা থেকে শুরু করে যে কারও সঙ্গে কথা বলতে পারতেন যেকোনো বিষয়ে। তাঁরা নেতা ছিলেন, গোয়েন্দা ছিলেন; তাঁরা যেমন যৌনাবেদনের প্রতীক ছিলেন, তেমনি নিজ সংস্কৃতির দূত ও প্রতীকেও পরিণত হয়েছিলেন।
আর সর্বোপরি তীব্র আবেদনময়ী এই নারীরা ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন দুনিয়াজোড়া পুরুষকুলের।
হাফিংটন পোস্ট-এর বিচারে কয়েক হাজার বছরের পরিক্রমায় পশ্চিমা দুনিয়ায় খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এমন সাত আবেদনময়ী নারী হলেন-
ক্লিওপেট্রা
প্রাচীন মিসরের ফারাও সম্রাজ্ঞী ক্লিওপেট্রা তাঁর ভুবনমোহিনী রূপের জন্য যেমনি বিখ্যাত, তেমনি বিখ্যাত তাঁর রাজনৈতিক, কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড আর যুদ্ধবিগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা নিয়েও। সেই সময়ে দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র রোমের নেতা জুলিয়াস সিজার এবং রাজনীতিক-সমরনেতা মার্ক অ্যান্টোনিকে প্ররোচিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন ক্লিওপেট্রা। কথিত আছে, সিজারকে প্ররোচিত করতে নিজেকে একটা গালিচার ভেতরে মুড়িয়ে গোপনে সিজারের প্রাসাদকক্ষে গিয়ে ওই গালিচা থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে সিজারের সামনে নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন ক্লিওপেট্রা। অবশ্য ক্লিওপেট্রা-সিজারের এই সম্পর্ক নিয়ে ভিন্নমতও আছে।
ক্যাথরিন দ্য গ্রেট
রাশিয়ার শাসন ক্ষমতায় এসেছিলেন এমন নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত এবং আবেদনময়ী হিসেবে পরিচিত রুশ সম্রাজ্ঞী ‘ক্যাথরিন দ্য গ্রেট’। জীবনের নানা পর্যায়ে বহু পুরুষের সঙ্গে তাঁর প্রণয়-কাহিনি বিখ্যাত হয়ে আছে। ক্যাথরিন খুবই আবেগী ও প্রচণ্ড রোমান্টিক ছিলেন। এই সম্রাজ্ঞী ঠিক ততদিনই কোনো পুরুষকে সঙ্গ দান করতেন, যতদিন তারা তাঁকে তৃপ্ত করতে পারত। তাঁর বিরাগভাজন হয়ে পড়লেই ওই প্রেমিকদের বিতাড়িত করতেন ক্যাথরিন।
অবশ্য প্রণয়ের পুরস্কার হিসেবে ভূসম্পত্তি বা পদবি দিয়ে সসম্মানেই বিদায় করা হতো ওই পুরুষদের।
ভায়োলেট গর্ডন-উডহাউস
আভিজাত্য ও সৌন্দর্যে পরিপাটি এই ইংরেজ নারী ছিলেন বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ। পিয়ানোর মতো বাদ্যযন্ত্র ‘হার্পসিকর্ড’ বাজাতেন তিনি। ভারতীয় পুরাণের পঞ্চপাণ্ডবের কাহিনির মতো না হলেও ভায়োলেট তাঁর চার স্বামীকে নিয়ে একটি ‘মেনাজ-এ-চিঙ্ক’ বা ‘পঞ্চ নর-নারীর ঘর’-এ থাকতেন। তাঁর কেবল একজন স্বামীই আইনত বৈধ হলেও একই ছাদের তলায় চার পুরুষকেই সুখী রাখতে পেরেছিলেন ভায়োলেট।
কেবল একবারই নাকি ক্রিকেট খেলা নিয়ে ওই পঞ্চ নর-নারীর মধ্যে বিতর্ক হয়েছিল!
মাতা হারি
ওলন্দাজ নৃত্যশিল্পী মাতা হারি তাঁর মোহময় নৃত্যে মাতিয়ে প্যারিসের পানশালাগুলোয় এমন নেশা ছড়িয়ে ছিলেন যে তাঁকে নিয়ে ওই নগরের কেওকেটাদের মধ্যে তুমুল কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে গিয়েছিল। বিশ শতকের গোড়ার দিকে অভিজাত ফরাসি ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, আমলাদের অনেকেরই উপপত্নী হয়ে ইউরোপের এ মাথা থেকে ও মাথা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন মাতা হারি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পর নিজের এ রহস্যময় আকর্ষণী ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে জার্মানির হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করেন এই নৃত্যশিল্পী। গুপ্তচরবৃত্তিতে ধরা পড়ার পর ফরাসিরা মাতা হারির বিচার করে এবং তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
ওয়ালিস সিম্পসন
যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত সমাজের সুন্দরীতমা ওয়ালিস সিম্পসন তিনজন পুরুষকে বিয়ে করেছিলেন এবং একজন রাজাকে সিংহাসন থেকে নামিয়ে এনেছিলেন।
১৯৩০ সালের দিকে যখন ইংল্যান্ডের যুবরাজ অষ্টম এডওয়ার্ডের সঙ্গে দেখা হয়, ততদিনেই নিজের দ্বিতীয় বিয়ে সম্পন্ন করেছিলেন সিম্পসন। দুই বছরের মাথায় তাঁদের প্রেম তুঙ্গে ওঠে। ১৯৩৬ সালের জানুয়ারিতে এই যুবরাজ সিংহাসনে আসীন হন। কিন্তু তা কেবল ছেড়ে আসার জন্যই। রাজা হয়ে দুবার তালাক নেওয়া এক আমেরিকান নারীকে বিয়ে করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না।
নিজেকে সিম্পসনের প্রেমে সমর্পণ করে ওই বছরই ভাই যুবরাজ ষষ্ঠ জর্জের কাছে সিংহাসন ছেড়ে দেন তিনি। উইন্ডসরের ডিউক ও ডাচেস হিসেবে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা।
আনাইস নিন
স্প্যানিশ-কিউবান বাবা আর ফরাসি-ডেনিশ মায়ের সন্তান আনাইস নিন জন্মেছিলেন প্যারিসে। আটলান্টিকের ওপারে পাড়ি জমিয়ে একজন আমেরিকান লেখিকা হিসেবে খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন এই সুন্দরী। বিখ্যাত লেখক হেনরি মিলারের সঙ্গে বোহেমিয়ান জীবনের অনেকটা সময় প্যারিসে কাটিয়েছেন তিনি।
হাগ গুইলার এবং রুপার্ট পোল নামে দুই পুরুষকে বিয়েও করেছিলেন আনাইস নিন। কিন্তু বোহেমিয়ান এবং বহুগামী জীবনে অভ্যস্ত আনাইস দুই স্বামীর কারও ঘরেই বেশি দিন স্থির থাকতে পারেননি। নিজের প্রেমিককুলকে নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় ঘুরেফিরে লুকোচুরি খেলতে হয়েছে তাঁকে।
ম্যারিলিন মনরো
বিশ শতকের সবচেয়ে জনপ্রিয় আবেদনময়ী মার্কিন তারকা অভিনেত্রী ম্যারিলিন মনরো। মনরোর প্রেমকাহিনির মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সঙ্গে তাঁর প্রণয়ই মনে হয় সর্বাধিক আলোচিত।
কথিত আছে ১৯৬২ সালে কেনেডির জন্মদিনে ‘হ্যাপি বার্থডে’ গানটি শুনিয়ে কেবল কণ্ঠের জাদুতেই তাঁকে জয় করে নিয়েছিলেন মনরো। সংক্ষিপ্ত সময়ের হলেও কিংবদন্তি এই তারকা অভিনেত্রী ও কেনেডির প্রেম ছিল অত্যন্ত গাঢ়। অ্যাথলেট থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, লেখক, বিজ্ঞাপননির্মাতাসহ নানা গুণী ব্যক্তিকেই বশ করেছিলেন তীব্র যৌনাবেদনময়ী মনরো। সেই সময়েই খোলামেলা পোশাক-আশাক থেকে শুরু করে নানা ঘটনায় নিজেকে জড়িয়ে সব সময়ই আলোচনায় ছিলেন এবং অকপট যৌনতার প্রতীক হিসেবে আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন এই মার্কিন সুন্দরী।
সংগৃহীত পত্রিকা থেকে....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।