ল্যাতয়া আমোনস নামের ওই নারী পুলিশকে বলেন, প্রেতাত্মারা তার ৯ বছর বয়সী ছেলেকে একটি হাসপাতালের সিলিংয়ে উল্টো দিকে হাঁটিয়েছে আর ১২ বছর বয়সী আরেক মেয়েকে বিছানা থেকে শূন্যে তুলেছে।
অবিশ্বাস্য এ ঘটনা প্রথমে ওই রাজ্যের দৈনিক ‘ইন্ডি স্টার’ পত্রিকা ও স্থানীয়দের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে যুক্তরাজ্যের ‘ইন্ডিপেনডেন্ট’ পত্রিকাও ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত খবর ছাপে।
ঘটনাটি শোনার পর প্রথমে তা বিশ্বাস করেননি সংশ্লিষ্ট পুলিশ ক্যাপ্টেন চার্লস অস্টিন। কিন্তু পরে বাড়িটি পরিদর্শন করে এবং পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পর ঘটনাটি তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে।
তাছাড়া, মন্ত্রপড়ে প্রেতাত্মা দূর করার জন্য আমোনসের পালিত কয়েকটি আচারঅনুষ্ঠান থেকেও ঘটনাটির ওপর বিশ্বাস জন্মে পুলিশের।
এ ধরনের প্রথম একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং শিশুসেবা দপ্তরের কেস মানেজার সামান্থা ইলিক ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাওয়ার কথা জানান।
ওই আচারঅনুষ্ঠান সম্পর্কে ইলিক বলেন, “ঘরে আমাদের সঙ্গে কেউ আছে বলেই আমরা অনুভব করতে পারছিলাম। মনে হচ্ছিল কেউ যেন আমাদের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে। ”
আমোনস ২০১১ সালে তার মা ও তিন সন্তানকে নিয়ে কেরোলাইনা স্ট্রিটের একটি ভাড়া বাসায় ওঠার পর ভৌতিক কাণ্ডগুলো শুরু হয়।
শীতের সময়ও প্রথম দিকে তাদের বাসার পাশে একটি জানালার কাছে প্রচুর বড় কালো মৌমাছি দেখা যায়। মৌমাছিগুলোকে একের পর এক মারতে থাকার পরও এর সংখ্যা বাড়তেই থাকে।
এছাড়া, রাতে ঘরের ভেতরে অস্বাভাবিক ধুপধাপ শব্দ শুনতে পেতেন তারা। হাঁটাচলার আওয়াজ, দরজা নাড়াচাড়ার শব্দ পাওয়া যেত। শোবার কক্ষে মানুষের ছায়াও দেখা যেত।
ইন্ডি স্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সালের মার্চের দিকে ভূতুড়ে ঘটনাগুলো আরো ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে। আমোনস তার মেয়েকে বিছানা বরাবর শূন্যে ভাসতে দেখেন।
অশরীরী আত্মার প্রভাব পেতে থাকেন আমোনস সহ তার ৭, ৯ ও ১২ বছর বয়সী সন্তানরাও। শিশুদের চোখগুলো স্ফীত হয়ে যেত, তাদের মুখ থেকে প্রেতাত্মার গন্ধ আসত। প্রেতাত্মারা যখনই শিশুদের উপর ভর করত তাদের গলার স্বর গম্ভীর হয়ে উঠত।
তার ৭ বছরের ছেলে একবার বাথরুম থেকে উড়ে এসে পড়ার কয়েকদিনের মধ্যেই অদৃশ্যস্থান থেকে ১২ বছর বয়সী মেয়ে অকস্মাৎ মাথায় আঘাত পায়। সেই আঘাত সারাতে মাথায় সেলাই করতে হয়েছিল।
ঘরের পাশের বারান্দায় একটি ‘অস্বাভাবিক বস্তুর’ উপস্থিতির ছবি দেখা যাওয়ার পর ভূতের উপদ্রবের এ ঘটনাটি আরো গুরুত্ব পায়। ইন্ডি স্টার পত্রিকার ভাষ্য, ভূতুড়ে ওই ছবিটি তোলার সময় লোকজন বাড়িতে ছিল না ।
ভুক্তভোগী পরিবারে দাবি, খ্রিস্টান যাজক, পুলিশ ক্যাপ্টেন অস্টিন ও পারিবারিক সেবা কর্মীরা (ফ্যামিলি সার্ভিস কেসওয়ার্কার) ওই বাসায় অতিমানবীয় শক্তির প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস করেছেন।
তবে সবাই অবশ্য এমন উদ্ভট কথা বিশ্বাস করছে না।
ভূতুড়ে ওই বাড়ির নারী আমোনসকে পর্যবেক্ষণের পর স্থানীয় এক চিকিৎসক বলেছেন, “তার ‘ভ্রম’ হয়েছে। তিনি হেলোসিনেশন বা দৃষ্টিভ্রমে ভুগছেন”।
আবার কেউ কেউ বলছেন, আমোনস এর কথায় প্রভাবিত হয়ে শিশুরা ওই ধরনের আচরণ করেছে। আমোনসই ছেলে-মেয়েগুলোকে এ ধরনের কাজে উৎসাহিত করেছেন আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্য।
আমোনসকে পরে ওই বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর আমোনসসহ তার সন্তানদের ওপরও মন্ত্রপড়ে প্রেতাত্মা দূর করানোর ব্যবস্থা করা হয় এবং ছয়মাস পর তাদের সমস্যা কেটে যায়।
আলোচিত ওই বাসায় এখন অপর একটি পরিবার বাস করলেও তারা আগের মতো কোনো ভূতুড়ে কাণ্ডের শিকার হচ্ছে না।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।