১০ ট্রাক অস্ত্র চালান নিয়ে ব্লেম গেম চলছেই। আগামী রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে সমাজবিজ্ঞানী ও রাজনীতিসচেতনরা মনে করেন, স্পর্শকাতর এ মামলা নিয়ে ব্লেম গেম উচিত নয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ বা সত্য বিশ্লেষণকে জাতীয় স্বার্থে বিতর্কের ঊধের্্ব রাখা উচিত।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সিইউএফএল জেটিঘাট, যেটি চট্টগ্রামের সংসদীয় আসন আনোয়ারায় অবস্থিত, সে আসনের এমপি ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা করে বিএনপি-জামায়াত মূলত বাংলাদেশকেই অশান্ত করতে চেয়েছিল- এমনটি মনে করে এ দেশের সচেতন মানুষ। বিজ্ঞ আদালত দল দুটিকে হয়তো সরাসরি দায়ী করেননি, কিন্তু এর নেতৃত্ব এমন অন্যায় কাজের দায় এড়াতে পারেন না। আদালত ন্যায্য বিচারই করেছেন। অন্যদিকে ঘটনাকালীন সরকার, দল, পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ভূমিকা যথার্থ ছিল দাবি করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান গতকাল বলেন, আদালতের জিজ্ঞাসাবাদে এটি যে চোরাচালানের অস্ত্র তা স্পষ্ট প্রতীয়মান। অযথা এ মামলা আওয়ামীকরণ বা দলীয়করণ করে এর স্বচ্ছতা নষ্ট করা হয়েছে। অহেতুক এর সঙ্গে বিএনপিকে জড়িত করতে মাঝেমধ্যে হাওয়া ভবনের সম্পর্কের বিষয়ও আলোচনায় আনার অপচেষ্টা হয়েছে। তবে বিশিষ্ট গবেষক ও সমাজবিজ্ঞানী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ড. গাজী সালেহ উদ্দিন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাক্ষ্য, জবানবন্দি, জেরা ও আদালতের পর্যালোচনার আলোকে মনে করেন বিএনপি-জামায়াত যদি নীতিগতভাবে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সশস্ত্র সহযোগিতার পক্ষে অবস্থান নেয় তবে তা গোপন রেখে নয়, প্রকাশ্যে হওয়া উচিত। এটি হলে দেশের আগামী রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে তার প্রভাব পড়তে পারে। অস্ত্র চালান নিয়ে ব্লেম গেম চলছে জানিয়ে ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, যা সত্য আদালতের রায়ে তা-ই প্রতিভাত হয়েছে। এটিকে রাজনীতিকীকরণ কারও জন্যই উচিত হবে না। এদিকে, অস্ত্র চালানের কথা শুনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নীরবতার কথা যেমন রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তেমনি আদালতে পর্যালোচনায় হাওয়া ভবন, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, পাকিস্তানি দূতাবাস, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফাসহ বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে উঠে আসে। তবে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের শাস্তির বিষয়ে আদালত বলেন, কতিপয় কর্মকর্তার জন্য কোনো সংস্থাকে দোষারোপ করা চলে না। তাদের দায়িত্ব ছিল মানুষ যাতে সুরক্ষিত থাকে তা নিয়ে কাজ করা। কিন্তু তারা তা না করে সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করেছেন। বাংলাদেশের দুটি অতি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। যারা জড়িত এ রায় শুধু সেই ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে। আদালতের পর্যালোচনায় ১০ ট্রাক অস্ত্র চালানে জড়িত তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোটের দুই মন্ত্রীর শপথ ভঙ্গের কথাও বলা হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।