আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যাংক খাতের ৩০ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রায়

ব্যাংকিং খাতের ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান। সরকারি মালিকানাধীন পাঁচ ব্যাংকের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় ঋণ হিসেবে এ অর্থ নেওয়া হয়। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ঋণ গেছে সোনালী ব্যাংক থেকে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া এ ধরনের বাধ্যতামূলক ঋণের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি শেষে সরকারি মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণের স্থিতি (ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড) দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯ হাজার ১১১ কোটি টাকা বকেয়া হয়ে গেছে। আর খেলাপি হয়ে গেছে প্রায় ১৬৩ কোটি টাকা। বিপুল পরিমাণ এই ঋণের অর্ধেকেরও বেশি প্রায় ১৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে সোনালী ব্যাংক থেকে। এ ছাড়া জনতা ব্যাংক থেকে ৬ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক থেকে ৪ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা এবং বেসিক ব্যাংক থেকে ৭৮৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কাছে সরকারি ব্যাংকের পাওনা ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রায়। গত বছরের মে মাস পর্যন্ত বিপিসির ঋণ ছিল ১৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে। গত কয়েক মাসে জ্বালানি তেলের দাম সহনীয় থাকায় ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে প্রতিষ্ঠানটির। তবে বিপিসির ঋণ কমলেও অনেক প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকারি পাঁচ ব্যাংকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) ৬ হাজার ৫৭২ কোটি টাকা, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ৩ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) ২ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ২ হাজার ৪ কোটি টাকা এবং তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (বিওজিএমসি) ১ হাজার ৫২০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। এ ছাড়া শতকোটি টাকার ওপরে ঋণগ্রস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিটিএমসি, বিজেএমসি, বিসিএসি, টিসিবি, সিপিএ এবং বিডবি্লউডিসি। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে বিপুল পরিমাণ এ ঋণ আটকে থাকার বিষয়টিকে এক ধরনের সিস্টেম লস হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, ঋণ পরিশোধে অর্থ মন্ত্রণালয়ে তাগাদা দিলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকার কাগুজে বন্ড ধরিয়ে দেয়। দীর্ঘমেয়াদি এসব বন্ডের বিপরীতে যে সুদ পাওয়া যায়, সেটি আমানতের সুদের হারের কাছাকাছি। এ থেকে লাভ হওয়া দূরের কথা, তহবিল ব্যয় মেটানোও সম্ভব হয় না। এর পরও সরকারের চাপে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দিতে হয় বলে জানান ব্যাংক কর্মকর্তারা। বিষয়টি স্বীকার করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি ব্যাংক বলেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্যতামূলক ঋণ দিতে হয়। এ ধরনের ঋণের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা কিছুটা কমেছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.