কালকিনিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অধীন গত চার অর্থবছরের ৭৯টি প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত পড়ে রয়েছে। প্রকল্পগুলোতে কোনোরকম কাজ শুরুর পর ফেলে রাখায় দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে ৮টি প্রকল্প। কবে নাগাদ এসব কাজ শেষ হবে এমন প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে।
কালকিনি এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর ফরিদপুর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন কালকিনিতে প্রথম পর্যায়ে ৫টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৬টি, সড়ক ও অন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ২টি, গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ৬টি, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের ১২টি, সড়ক ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পের দুটি, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের ৭টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনর্নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্পের তিনটি, বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্পের ৩টি এবং ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ৩টি প্রকল্প অর্ধসমাপ্ত রয়েছে। ২০০৯-১০, ২০১০-১১, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল প্রকল্পগুলোর।
সরেজমিনে জানা যায়, কালকিনির রমজানপুর ইউপি অফিস থেকে নতুন হাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজ পায় সান্টু ট্রেডার্স। ২৬ লাখ ৩১ হাজার টাকার এই কাজটি ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার ৬০ ভাগ কাজ করে তার বিল উত্তোলনের পর আর শুরু না করায় প্রকল্পটি বাতিল করেছে এলজিইডি। সিডিখান ইউপি ও বাজার থেকে হাজি করিমখান হাট পর্যন্ত সড়কের কাজ পায় মেসার্স তানভীর এন্টারপ্রাইজ। ৬০ লাখ ৫৯ হাজার টাকার এই প্রকল্পটি ২০১১ সালের ২০ নভেম্বর শেষ করার কথা থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র ৩০ ভাগ। ৩০ লাখ ২৮ হাজার টাকার খাসেরহাট বাজারে পাকা বোট ল্যান্ডিং র্যাম্প নির্মাণকাজে হাতই দেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাজুন্নেছা অ্যাসোসিয়েট। একই অবস্থা সাড়ে ২২ লাখ টাকার লক্ষ্মীপুর বাজার বোট ল্যান্ডিং র্যাম্প নির্মাণ প্রকল্পের।
কয়েকজন ঠিকাদার বলেন, কাজ করতে গিয়ে আমরা ফতুর হয়ে যাচ্ছি। যে টাকার কাজ করছি তার ১০ ভাগ টাকাও উত্তোলন করতে পরিনি। তাই কয়েকটি প্রকল্প পেলেও কাজ করিনি। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস জানান, 'কাজের বিল পরিশোধ করতে না পারায় অনেক প্রকল্প ঠিকাদাররা এগিয়ে নিতে পারেননি। মূলত তহবিল ঘাটতির কারণেই পড়ে আছে প্রকল্পগুলো। নানা কারণে ৮টি প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।' এলজিইডির মাদারীপুর নির্বাহী প্রকৌশলী মোতালেব বিশ্বাসও জানালেন 'ফান্ড' সমস্যার কথা। তিনি বলেন, ৩২ কোটি টাকা বিল হলে বরাদ্দ পাওয়া যায় তিন কোটি। এরপরও আমরা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে ঠিকাদারদের চিঠি দিয়েছি, বিভিন্ন সময়ে করেছি সভা।'
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।