উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে প্রবচনটির যথার্থ প্রয়োগ ঘটিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিবাদের সঙ্গে দলীয় রাজনীতির কোনো সম্পর্কই ছিল না। বর্ধিত ফি প্রত্যাহার ও সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে সাধারণ ছাত্ররা যে আন্দোলন গড়ে তোলে তা তাদের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়। ছাত্রদের বৃহত্তর অংশ তাতে যোগ দেয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লেজুড় ছাত্র সংগঠন এ আন্দোলন থেকে ফায়দা নিতে নানামুখী অপচেষ্টা চালালেও এটি সার্বিক বিচারে ছিল সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলন। গত রবিবার আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। প্রকাশ্যে তারা রিভলবারসহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ ও সরকারি দলের লেজুড় ছাত্রলীগের অস্ত্রবাজদের হামলায় আহত হয় শতাধিক শিক্ষার্থী। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ অপ্রীতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে যে মামলা দায়ের করেছে তাতে সংঘটিত ঘটনার হোতা ছাত্রলীগ নামধারীদের বদলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আসামি করা হয়েছে। স্মর্তব্য, ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া ও সাধারণ ছাত্রদের ওপর তাণ্ডবের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগে বাধ্য করা হয়। ঘনকুয়াশা ও যানবাহন সংকটে বিড়ম্বনার মুখে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশ সম্ভবত ছাত্রলীগ নামধারীদের ব্যাপারে প্রযোজ্য ছিল না। যে কারণে সোমবার দুপুরেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের মহড়া দেখা গেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলন থেকে ফায়দা নিতে ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর ও হামলার অবতারণা করে। তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের যৌক্তিকতা থাকলেও সাধারণ ছাত্রদের ওপর দায় চাপানো সত্যিকার অর্থেই নিন্দনীয়। আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হওয়া ছাত্রলীগের অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না হওয়া যে কোনো মূল্যায়নে দুর্ভাগ্যজনক। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের চিন্তাচেতনা ও উপলব্ধির দেউলিয়াত্বেরই প্রমাণ দিয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।