নকল আর ভেজালের অক্টোপাসে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে দেশের ১৬ কোটি মানুষ। মাছ ও মুরগির মাংস দেশবাসীর আমিষ চাহিদার সিংহভাগই পূরণ করে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও হানা দিয়েছে ভয়াবহ দুঃসংবাদ। রাজধানী ঢাকার হাজারীবাগ এলাকার বিভিন্ন কারখানায় ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করে যে পোলট্রি ফিড তৈরি করা হচ্ছে তাতে রয়েছে ক্রোমিয়াম নামের এক জাতীয় ক্ষতিকর উপাদান। ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় ক্রোমিয়ামকে। বিষাক্ত পোলট্রি ফিডের বদৌলতে তা পেঁৗছে যাচ্ছে মাছ ও মুরগির দেহে। সে মাছ ও মুরগি যারা খাচ্ছেন তাদের জন্য বাড়ছে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। লিভার ও কিডনি সংক্রান্ত রোগের হুমকিও তাদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে। গত বুধবার রায়েরবাজারের একটি পোলট্রি ফিড কারখানায় হানা দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারা পোলট্রি ফিডের উপকরণ পরীক্ষা করে তার মধ্যে ক্রোমিয়ামের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হন। র্যাব সদস্যরা কারখানার কয়েক হাজার বস্তা পোলট্রি ফিড জব্দ করে তা ধ্বংস করেন। কারখানা থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলেকে। স্মর্তব্য, রাজধানীর হাজারীবাগের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে শতাধিক পোলট্রি ফিড কারখানা। ট্যানারির বর্জ্য ব্যবহার করা হয় এসব কারখানার পোলট্রি ফিড উৎপাদনে। দেশের অন্যান্য স্থানের পোলট্রি ফিড কারখানায় উৎপাদিত পণ্যে ক্রোমিয়ামের উপস্থিতি দেখা না গেলেও এখানকার প্রায় প্রতিটি কারখানায় উৎপাদিত পোলট্রি ফিডে বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পূর্ণ বয়স্ক মানবদেহে ক্রোমিয়ামের সহনীয় মাত্রা প্রতি কেজিতে .০৫-২ মিলিগ্রাম। বিষাক্ত ট্যানারি বর্জ্যে এর পরিমাণ থাকে প্রতি কেজিতে ১৪ হাজার মিলিগ্রাম। এ দিয়ে তৈরি পোলট্রি ফিডে তার পরিমাণ প্রতি কেজিতে ৮ হাজার মিলিগ্রাম ক্রোমিয়াম। গবেষকদের মতে, মাত্রাতিরিক্ত ক্রোমিয়াম মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ বিশেষত লিভার ও কিডনিতে জমা হয় এবং ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগের উৎস হিসেবে কাজ করে। মাছ ও মুরগির মাধ্যমে তা মানবদেহে প্রবেশ করছে ও মানুষের জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। এ হুমকি রোধে পোলট্রি ফিড তৈরিতে ট্যানারি বর্জ্য যাতে ব্যবহার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। বিষাক্ত পোলট্রি ফিড উৎপাদকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও ভাবা যেতে পারে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।