চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যেই তৃতীয় ধাপের ৮৩ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। ১৫ মার্চ এ ধাপের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বিকালে ইসির মিডিয়া সেন্টারে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ এ তফসিল ঘোষণা করেন। তৃতীয় দফায় এ ভোটের তালিকায় উপকূল ও হাওর এলাকার কয়েকটি উপজেলাও রয়েছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ১৭ ফেব্রুয়ারি ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৪ ফেব্রুয়ারি। এর আগে দেশের ৪৮৭ উপজেলার মধ্যে প্রথম দফায় ৯৭টিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি; একটি ২৪ ফেব্রুয়ারি; দ্বিতীয় দফায় ১১৭ উপজেলায় ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোটের কথা রয়েছে। এ ছাড়া চতুর্থ দফা ২৫ মার্চ ও পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ ৩১ মার্চ তফসিলও এ মাসে ঘোষণার কথা রয়েছে। বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে উপকূলের ১৬ জেলার ৪৯ উপজেলার ভোটও মার্চের মধ্যে শেষ করতে চায় ইসি। শেষ ষষ্ঠ ধাপে ৩ মে ভোট হবে।
শাহ নেওয়াজ বলেন, উপজেলা নির্বাচনের প্রতিটি ধাপেই প্রয়োজনীয়সংখ্যক সেনা সদস্য মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যও মোতায়েন করা হবে।ইসির নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, তৃতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারেনি কমিশন। চলতি সপ্তাহে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনী ম্যানুয়াল তৈরি করতে পারেনি ইসি। ১৯ জানুয়ারি প্রথম ধাপের ও ২৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণার পরও এখন পর্যন্ত এসব উপজেলায় নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়াল সরবরাহ করতে পারেনি। ম্যানুয়াল না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন রিটার্নিং অফিসার ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এ সমস্যা সমাধান না করে তৃতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করায় সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অথচ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আচরণ বিধিমালা ও নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়ালসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার রীতি রয়েছে।
যে ৮৩ উপজেলায় ভোট হচ্ছে সেগুলো হলো : ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, দিনাজপুরের সদর ও নবাবগঞ্জ; নীলফামারীর সদর, লালমনিরহাটের আদিতমারী, কুড়িগ্রামের সদর, রৌমারী ও চিলমারী; গাইবান্ধার সদর ও সাদুল্যাপুর; জয়পুরহাটের আক্কেলপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর, ভোলাহাট ও শিবগঞ্জ; নওগাঁর মান্দা, পোরশা ও ধামইরহাট; রাজশাহীর গোদাগাড়ি, চারঘাট ও দুর্গাপুর; চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা, যশোরের মনিরামপুর, নড়াইলের লোহাগড়া, বাগেরহাটের সদর, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, মংলা ও শরণখোলা; খুলনার পাইকগাছা, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ, ভোলার সদর, বরিশালের মুলাদী, হিজলা ও বাবুগঞ্জ; পিরোজপুরের নেছারাবাদ, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, শেরপুরের শ্রীবর্দী, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, মুক্তাগাছা, ফুলপুর ও ধোবাউড়া; নেত্রকোনার সদর ও মোহনগঞ্জ; কিশোরগঞ্জের সদর, কুলিয়ারচর ও হোসেনপুর; গাজীপুরের শ্রীপুর, ফরিদপুরের সদর, আলফাডাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন, ভাঙ্গা ও মধুখালী; গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, শরীয়তপুরের সদর ও নড়িয়া; সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা; মৌলভীবাজারের বড়লেখা, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী ও দেলদুয়ার; কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, হোমনা, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রাম, ব্রাহ্মণপাড়া ও তিতাস; চাঁদপুরের কচুয়া ও হাজীগঞ্জ; নোয়াখালীর সেনবাগ, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সীতাকুণ্ড; রাঙামাটির বরকল, বাঘাইছড়ি ও কাউখালী; মানিকগঞ্জের ঘিওর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর, ফেনীর দাগনভূঞা এবং বান্দরবানের সদর ও আলীকদম।
আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক বৈঠক ১২ ফেব্রুয়ারি : ১২ ফেব্রুয়ারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন। এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে তা স্থগিত করেছিল কমিশন। ইসির দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে একযোগে সব উপজেলায় নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোয় মোতায়েন করা হবে অতিরিক্ত পুলিশ, অঙ্গীভূত আনসার ও গ্রামপুলিশ। সাধারণ ভোট কেন্দ্রে ১৪ ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৫ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়াও উপকূলবর্তী জেলা এবং বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর) সাধারণ কেন্দ্রে পুলিশ, অঙ্গীভূত আনসার ও চৌকিদার-দফাদারসহ ১৭ জন ফোর্স দায়িত্ব পালন করবেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।