[আজিতা ঘাহ্রেমান (১৯৬২) আধুনিক ইরানি কবিতার জগতে এক উজ্জ্বল নাম। পঞ্চাশোর্ধ এই কবির জন্ম ইরানের মাশহাদে। শৈশব, কৈশোর এবং পরবর্তী কিছুকাল স্বদেশে বসবাস করার পর ২০০৬ সাল থেকে তিনি সুইডেনে প্রবাস জীবনযাপন করছেন। ইতোমধ্যে পাশ্চাত্যের কাব্য জগতে তিনি তার স্বকীয়তার স্বাক্ষর রেখেছেন। পাশ্চাত্যের বিভিন্ন ভাষায় জার্মান, ডাচ, আরবি, চীনা, সুইডিশ, ফরাসি ও ইরেজি ভাষায় তার বহু কবিতা অনূদিত হয়েছে এবং তিনিও অনুবাদ করেছেন ইংরেজি ভাষার অনেক কবিতা ফার্সি ভাষায়। ইতোমধ্যে তার পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ফার্সি ও ইংরেজি উভয় ভাষায় তিনি কবিতা লেখেন। হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন মুক্ত ছন্দে লেখা তার দীর্ঘ কবিতাটি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ইরানের একজন কবি সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে কবিতা লিখবেন। তা অনেকের কাছে অকল্পনীয়। ইরানের রক্ষণশীল সমাজে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন (ভ্যালেন্টিনাস) ও তাকে কারাদণ্ড প্রদানকারী রোমান সম্রাট আস্তেরিয়াসের কন্যার প্রেম-প্রণয় কখনো অনুমোদনপ্রাপ্ত বিষয় নয়। আমিটার কবিতায় পরাবাস্তবতার সঙ্গে সমকালীন অনেক অনুষঙ্গ রয়েছে। যা তার কবিতাকে দিয়েছে অন্যরকম উচ্চতা।]
তোমার হৃদয়জুড়ে ভাগ্যচক্রের গোল্ডফিসের সাঁতার, একের সঙ্গে অন্যের তুমুল প্রতিযোগিতা!
তুমি জানো কি সেই রহস্যের খোঁজ? তুমি যদি কিছু জানতে চাও, সরাসরি জবাব পাবে, যদি অভিযোগ করো অস্বীকৃতি পাবে আমার কাছ থেকে।
তোমার চুলের ভেতর মারবো ছুড়ে মলেটিভ ককটেল, তোমাকে তখন দেখাবে র্যাঁবোর ছবির মতো।
তোমার স্বপ্নের মাঝে ঢুকে যাবে আমার আঙ্গুলগুলো, সব কিছু উলোট পালোট হয়ে যাবে।
তোমার ঘুম আমি নেবো কেড়ে। তুমি ভাববে
তোমার বিছানার নিচে ব্যাঙের অস্থির নড়াচড়া।
মধুর সব দৃশ্যকে আমি কুৎসিত করে দেবো;
পাখির পরিবর্তে আমি অাঁকবো বৃক্ষচূড়ায় ঘোড়ার ছবি। রাশিয়ার পুতুল খেলার স্থূলাঙ্গী মহিলাদের কথা মনে আছে? তোমার টেবিলজুড়ে এঁকে রাখবো ঐ সব মহিলার ছবি। তোমাকে বানিয়ে দেবো সিংহ আর বৃক্ষের মিলনে শংকর কাঠ বেড়াল!
তবু তো আমি পারি না তোমাকে পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলতে, যে তুমি অনবরত জ্বালাও। পোড়াও আমাকে হুলো বেড়ালের মতো, যে খুঁজে পায় না নিজের ঘরটিও।
প্রতিটি তীর তোমার দিকে তাক করা। এই পরিচিত পথ তোমার দিকেই ফিরে গেছে। কিন্তু আমি শ্রান্ত ক্লান্ত এই সব চূড়া আর শিখর আরোহণ করতে গিয়ে। তোমার পরিমাপ করতে গিয়ে আমার চোখ কান অনেক ক্লান্ত। তোমার দেয়ালে এতো জোরে কড়াঘাত করেছি, বাসন-কোসনগুলো ভেঙে চুরচুর।
তুমি হয়তো আছো দূরে আমার ধারালো ফলা থেকে, কিন্তু আমার ভেতরে অগি্নগোলক জ্বলছে, তোমার হরবোলা টিয়া আমার মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে ভারতের ধারণা।
যদি ড্রাগনকে পরাভূত করার কৌশল জানা থাকতো,
যদি পারতাম বাঘকে খাঁচায় আবার ঢুকিয়ে দিতে! আহা, আবার যদি ফিরে আসতো বসন্ত! লোভী পশুরা সব লিলি ঝাড়ে মূলে উজাড় করে ফেলার আগে। দৈত্য দানবরা সারাটা পৃথিবী ধ্বংস করার আগে যদি পারতাম!
প্রেম লাল গোলাপ যেন, যা আমি তোমার জানালা তাক করে ছুড়ে মারি।
ঝনঝনাঝন!
জানালার কাঁচ সব ভেঙে চুরমার।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।