আমি শুধুই আমি...অন্য কেউ নয় কাল রাতে হঠাৎ আমার মাথায় চিন্তা আস্ল,
এই মুহূর্তে যদি আমি হুট করে মরে যাই,
দম বন্ধ হয়ে, কিংবা ঐতিহাসিক কোন কারণে,
কথা নেই, বার্তা নেই-
পাশের বাড়ির মতিন সাহেবের মত,
একটা কেলেংকারী হয়ে যাবে !
এই নিষ্কলুষ গভীর রাত্তিরে, ঘুটঘুটে অন্ধকারে
আর কুয়াশার চাদরে,
যদি আর না খুঁজে পাই স্পন্দনের নতুন কোন খবরাখবর
একটা মহাপ্রলয় ঘটে যাবে।
কার ও সাথে অন্তিম সাক্ষাৎ না করে,
বাবাকে অনেক দিনের প্রাপ্য ধন্যবাদ টা না দিয়ে
আমার এভাবে চলে যাওয়াটা নিতান্তই বেমানান দেখাবে।
এই শুক্রবার একটা ছিনেমা দেখার কথা ছিল—
দিনের পর দিন ধরে পয়সা জমিয়েছি একটা
বাইসাইকেলের জন্য-নতুন একটা টি-শার্ট, নতুন বছর.........
সব জলে যাবে।
ভুরু কুঁচকে ভাবি---
হাতের কলম কাঁমড়ে ধরে শুন্য বনে যাই
অনেক্ক্ষণ-
এক বছর, এক যুগ, না হয় এক শতাব্দী। ।
আমার ভাবনা সোজা পথে হাঁটতে যেয়ে পিছলে যায়,
কাগজ কলম নিয়ে হিসাব করতে বসি,
আমার কি কি আছে- কি নেই,
প্রিয়তমার সাথে বাকবিতন্ডার অবসান ঘটিয়ে,
দেব নাকি একটা টেলিফোন?
ফিস্ফিস করে বল্ব, শোন, আমি চলে যাচ্ছি—
মিটামাট করে নাও সব,
নতুন কোন সাহায্য প্রয়োজন?
উহু! আর হচ্ছে না।
বিদায়। ।
আমি জান্তাম না আমি এত একা,
এই প্রাতঃ লগ্নে এসেও আমার শরীর ভয়ে শিঊরে উঠছে বারবার,
হাড়কাঁপানো শীতে হলেও হতে পারে,
একটু উষ্ণতা দেবার জন্য কাউকে দরকার,
এই হিসাব-নিকাশের জট ছাড়ানো
আমার একার পক্ষে অসম্ভব,
আমি এত একা হতে পারিনা—
কাউকে কি আরেকটা ফোন করা যায় না?
অন্তত আরেকটা ফোন?
আমি এ যাবত কিছুই করি নি
কিচ্ছু করবো ও না,
তবু এত কিসের বাহারী চিন্তা আমার?
কে পড়বে আন্কোরা হাতের লেখা এই কবিতা?
কোথায় পড়ে রবে চিরচেনা এই গিটার?
সম্বিত ফিরে পাই- এখনো আমি বেঁচে আছি,
এইতো আমার হাত লিখছে,
হৃদপিণ্ড রীতিমত গর্জন করে জানান দিচ্ছে,
সে এখনো পাকা খেলোয়াড়।
পানির গ্লাস খুঁজি তন্ন তন্ন করে,
এমাথা থেকে ও মাথা হেঁটে বেড়াই,
এতবড় বাড়ি এখন আমার কাছে
একটা মৃত স্টেডিয়াম,
আর একটা কাশির আওয়াজ যখন,
গোলাবারুদ হয়ে ফেটে পড়ে
পুরো ঘর জুড়ে,
তখন আমি ভীত কাপুরুষ,
অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত এক বেহায়া সৈনিক,
আশ্রিত হতে চাই কারো গা ঘেঁষে, অনেক কাছ ঘেঁষে।
।
তখন মনে পড়ে যায় মা’র কথা,
আমার কোন ভয় ছিলনা মা’র কোলে।
ঈশ্বর বুঝি জানতেন---
আমার কবর কোথায় হবে? মা’র সাথে কি
দেখা হবে সাথে সাথে?
আমাকে আমন্ত্রণ জানাবেন
উনি?--- নাকি অন্য কেউ?
ঈশ্বর কি আমাকে সরাসরি কাঠগড়ায়
দাঁড় করিয়ে দেবেন?
বিচিত্র সব প্রশ্নের মারপ্যাচে আমি
কাকে সবচেয়ে বেশি মনে করব?
আমার গিটার, আমার কবিতা নাকি
আমার অসুস্থ মস্তিষ্ক?
আরেকটা রাত আসে,
আরও অনেক লোম খাঁড়া করা শীত,
আরও অনেক বিদ্ঘুটে গাঢ় অন্ধকার
আরেকটা লাশের মাথা চেপে আমি নিজেই
গাড়িতে বসে থাকি--
আরও অজস্র অচেনা মানুষের সাথে
যন্ত্রের মত গাইছি আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লালাহ......
কেউ কাঁদছে না, কেউ না। । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।