ফিরে যাচ্ছি জোছনার স্বাদ পরখ করতে
প্রিয় বান্ধবী কবিতা,
তুমি জেনে হয়তো অবাক হবে অনেকদিন ধরেই কেউ একজন তোমার কোনো খবর পাচ্ছে না। গহীন ঘন কোনো জঙ্গলে হারিয়ে গেলে কিনা ভাবতে ভাবতেই মনে তার হলো তোমার মতো ঙ আকৃতির একটা মানুষ জঙ্গলে যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না! তার কাছে চকচকে পোশাক পরা তোমার একটা ছবি রয়েছে, মাঝে মাঝেই সে ওইটা দেখে আর চিন্তা করে তুমি কি হারিয়েই গেলে?
সত্যি সত্যিই যদি তুমি ঘন কোনো জঙ্গলে থেকে থাকো এই চিঠিটি পাওয়ার সাথে সাথে অন্তত সেই একজনের কথা মনে করে মনটাকে ঝকঝকে পরিষ্কার ও ফুরফুরে করে যেকোনো ট্রেনের ঞ বগিতে উঠে চলে এসো।
তুমি যেনে আশ্চর্য হবে তোমার জন্য কেউ একজন টকটকে লাল গোলাপ হাতে অপেক্ষা করছে। তোমার সেই অরণ্যের ঠিকানা জানলে হয়তো সে গোলাপ হাতে তোমার প্রকৃতির দরজায় গিয়ে ঠকঠক করতো তোমার সাড়া পাবার আসায়।
তুমি হয়তো খেয়াল করতে তোমার দিকে ডরমাখা চোখে কেউ একজন একসময় তাকিয়ে থাকতো তোমার ঢলে পড়া বিশেষ প্রক্রিয়ায় হাঁটা তাকে মুগ্ধ করেতো।
সে কতবার পণ করেছে তোমার সামনে গিয়ে কিছু একটা বলবে তবু কখনো তার সে সাহস হয়নি। তোমার সামনে গেলেই কোনো এক অজানা কারনে কেনো যেনো সে থমকে যেতো!
একবার এক জ্যোতিষীকে সেই কেউ একজন দক্ষিণ হস্ত দেখিয়ে এসে খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলো। কারন জ্যোতিষী নাকি তাকে বলেছিল তার বিয়ের পর তার বউ খুব দ্রুতই মারা যাবে! এই কথা শুনে নাকি তার ধমনির রক্তসঞ্চালন বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। হা হা হা কি হাস্যকর তাইনা? নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ হতে পারে কিন্তু জীবিত অবস্থায় ধমনীর রক্ত প্রবাহ কি বন্ধ হয় নাকি তুমিই বলতো!!
তোমার হয়তো মনে নেই তোমার সাথে কিন্তু তার প্রথম দেখা হয়েছিলো এক পহেলা বৈশাখের বৈশাখী মেলাতে। তুমি বাসন্তি রঙ্গের শাড়ি পড়ে হাঁটা দেখে মনে হচ্ছিলো যেনো ফড়িং উড়ে বেরাচ্ছে।
তোমার সাথে থাকা মেয়েগুলো সারাক্ষণ বকবক করে যাচ্ছিলো কিন্তু তুমি ছিলে অনেকটাই চুপ।
যেদিন সে জানতে পারলো তুমি রবীন্দ্র সঙ্গীতের ভক্ত সেদিন থেকেই সে রীতিমত মধু খেয়ে উঠেপড়ে পড়ে লেগে গিয়েছিলো গান শিখার জন্য। যদিও তা পড়ে আর শিখা হয় নি।
আকাশের রঙ বেগুনী না হয়ে কেনো নীল এর জন্য তার অনেক আফসোস। কারন তোমার প্রিয় রঙ নাকি বেগুনী! সে যদি অনেক অনেক লম্বা হতে পারতো আকাশের সমান, তাহলে শত হাজারবারের চেষ্টায় পুরো আকাশটা অবশ্যই সে বেগুনী রং করে ফেলতো।
আচ্ছা তোমার কি জানা আছে ষড় ঋতুর এই দেশে বসন্ত মাত্র একবার আসে কেন? তোমার সবচেয়ে প্রিয় ঋতু নাকি বসন্ত! তাই এই ঋতুটির জন্য সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকতো।
তোমার অদ্ভুত অদ্ভুত সব ইচ্ছা তাকে অভিভূত করতো। হলুদ রঙ্গের টিয়া পাখি দেখার তোমার নাকি খুব শখ! সে বহু জায়গা খুজেছে সে হলুদ টিয়া পাখি খোজার জন্য। আচ্ছা আমি বুঝি না টিয়া পাখি যদি হলুদ রঙ্গের হয়ে যায় তাহলে তাকে কেনো আর টিয়া বলা হবে তাহলে তো সেটা হলুদ পাখি হয়ে গেলো তাইনা। অবশ্য তোমাদের যুক্তি ভিন্ন হতে পারে।
যাই হোক আশা করি জঙ্গলে ভালোই আছো! পাগলা ষাড় এর দৌড়ানি খেয়ে আষাঢ় মাসের বৃষ্টিতে পিচ্ছিল পথে প্রচন্ড ভয় পেয়ে চিৎকার করতে করতে চিতপটাং হয়ে পড়া মানুষটা যে আজ একা একা পুরো দুঃখ পৃথিবী পারি দেয়ার ক্ষমতা রাখে তাতেই সেই কেউ একজন অনেক খুশি।
ইতি
হয়তো তোমার কোনো এক সময়ের বন্ধু
চন্দ্রবিন্দু
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।