ল্যাসিথ মালিঙ্গার বোলিং অ্যাকশনটাই ভয়ঙ্কর। ত্রিশ গজ দৌড়ে এসে যখন হাতের অর্ধেকটা ঘুরিয়ে বল ছুড়েন তখন রঙ্গিন বাবরি চুলে একটা ঢেউ খেলে যায়। দারুণ একটা ছন্দ তৈরি হয়। যা দেখে ব্যাটসম্যানের বুক এফোঁড় ওফোঁড় হওয়ার দশা। মালিঙ্গার এক একটি ইয়র্কার ডেলিভারি যেন আগুনের গোলা।
যত বড় মাপের ব্যাটসম্যানই হোক না কেন সমীহ করতে বাধ্য।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচটির কথা এখনো ভক্তদের দৃষ্টিতে জ্বলজ্বল করছে। ম্যাচটি সহজেই জিতে যাচ্ছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু মালিঙ্গা এক ওভারেই সব পাল্টে দেন। টানা চার বলে শন পোলক, অ্যান্ড্রু হল, জ্যাক ক্যালিস ও মাখায়া এনটিনিকে আউট করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিপদে ফেলে দেন।
যদিও শেষ পর্যন্ত এক উইকেটে জয় পেয়েছিল প্রোটিয়ারাই। তবে ওই ম্যাচের মধ্য দিয়েই মালিঙ্গা ক্রিকেট বিশ্বে নতুনরূপে আবির্ভূত হন।
তবে সবচেয়ে বড় উদাহরণ তো চলতি এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচটিই। যে ম্যাচেই সহজেই জিতে যাচ্ছিল পাকিস্তান। কিন্তু মালিঙ্গা শেষের স্পেলেই মালিঙ্গা সব হিসাব-নিকাষ পাল্টে দেন।
২.৫ ওভার বোলিং করে ১০ রান দিয়ে নিলেন ৫ উইকেট। নিশ্চিত হারা ম্যাচে দারুণ এক জয় পায় শ্রীলঙ্কা। কখনো কখনো আবার উল্টো ঘটনাও ঘটে। লঙ্কান পেসারের বলের গতি বুঝতে পারলে আর কিছু লাগে না ব্যাটসম্যানের। কিন্তু মালিঙ্গার করা ডেলিভারি বোঝা তো আর চাট্টিখানি কথা নয়।
তবে আজ কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে মালিঙ্গাকে। বোলিং করতে হবে বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন ভারতের বিরুদ্ধে। আরও পরিষ্কার করে বললে, কোহলির মতো ক্ষ্যাপাটে ব্যাটসম্যানকে আটকাতে হবে। তবে এটা তো ঠিক যে, আজকের ম্যাচেই পরীক্ষা হয়ে যাবে কোহলিরও। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৩৬ রানের এক ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলে ফুরফুরে ম্যাজাজে আছেন ভারতীয় অধিনায়ক।
তবে ম্যাচটা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বলে অস্বস্তিও কিন্তু কম নয়। আগের ম্যাচে মালিঙ্গা যেভাবে ঝড় তুলেছিলেন...। তবে খেলা যেহেতু ফতুল্লাহ খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে, তাই ব্যাটসম্যানরা খানিকটা স্বস্তি পেতেই পারেন। কেননা এই উইকেটে এখন পর্যন্ত এক মালিঙ্গা ছাড়া কোনো পেসারই ঝড় তুলতে পারেননি। এক কথায় ব্যাটিং স্বর্গই বলা যায় ফতুল্লাহর উইকেটকে।
তবে দিনের আলোতে উইকেটে বেশ টার্ন থাকে। পেসাররাও বল সুয়িং করাতে পারেন। কিন্তু রাতে বোলারদের কিছুই করার থাকে না। শিশিরে ভিজতে ভিজতে বল এমন হয়ে যায় যে, গ্রিপে নেওয়াই কঠিন হয়ে যায়। অবশ্য প্রথম ম্যাচেই ফতুল্লার উইকেট সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা পেয়েছেন কোহলি।
২৮০ রানের টার্গেট তাড়া করেও তার দল জিতেছে সহজেই। কোহলিও পেয়েছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। তবে যেহেতু দিবা-রাত্রির ম্যাচ, তাই টসটাই আসল। কেননা টস জয় মানে ম্যাচের অনেকটাই হাতের মুঠোয় চলে আসে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টস জিতে ফায়দাটা হাতেনাতেই পেয়েছেন কোহলি।
কিন্তু যদি আজ লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিলেই জমে উঠবে ম্যাচ। দিনের আলোতে মালিঙ্গার বল মোকাবেলা করা মোটেও সহজ নয়। মালিঙ্গা ঝড়ের সামনে পরীক্ষা হয়ে যাবে বিরাট কোহলির। দুই দলের দুই তারকার সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার ওপরই নির্ণয় হতে পারে ম্যাচের ভাগ্যও।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।