নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিপুল ভোটে হেরে যাবার ভয়ে প্রথম সুযোগেই আওয়ামী লীগ যেটা করলো সেটা হলো জনগনের মতামত ছাড়াই সংবিধান সংশোধন করে পুরো নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্হাটাই দেশ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করে দিলেন। শুধু কি তাই, এটা করতে গিয়ে কত কাহিনী, নাটক যে জনগনের সামনে দেখাতে হলো তার ইয়ত্তা নেই। ফলে কত নিরীহ মানুষের প্রাণ, সম্পদ বলিদান হলো তার হিসেব হয়তো কোন একদিন বের হয়ে আসবে।
এখন আবার টনক নড়েছে উপজেলা নির্বাচনে ব্যপক পরাজয়ের পর। তবে টনক টা সঠিক জায়গায় নড়ে নি, বিপথে নড়ছে।
তারা নিজেরাই স্হানীয় সরকার নির্বাচনটাকে দলীয় নির্বাচনে পরিনত করে কলংকিত করেছে যদিও কোন দলীয় নমিনেশন ফর্ম বিক্রি হয়নি, দলীয় নমিনেশন বোর্ড বসেনি তারপরও তারা ও বিএনপি দুটো দল মিলে এটাকে পুরোপুরি দলীয় নির্বাচন বানিয়ে হানাহানি, মারামারি একেবারে গ্রামে গন্জে ছড়িয়ে দিয়েছে।
উপজেলা ব্যবস্হার মূল কথাই ছিল একজন মানুষ সরাসরি তৃণমুল থেকে নির্বাচিত হবেন যিনি ওই এলাকার সকল উন্নয়নের জন্য দায়ী থাকবেন, তার মানে হলো তিনি একবার যখন নির্বাচিত হয়ে যাবেন তারপর তিনি সকলের জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন, সমাজের সকল মহলের আস্হা থাকবে তার উপর। সেই মুল কনসেপ্টটাকেই কুড়াল মারা হয়েছে এবার। এর জন্য মূলত দায়ী দুটো দল। কিছুদিন আগের ভোটার বিহীন আজব জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে, একে অপরকে দেখিয়ে দিতে, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ নেমেছিল এবার উপজেলার ভোট যুদ্ধে।
বিএনপি উপজেলা পদ্ধতিতে বিশ্বাষ করে না, তার ভুড়ি ভুড়ি প্রমান আছে আমার কাছে, যেটা আজ সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, আমি এ বিষয়ে তার সাথে পুরোপুরি একমত। সুতরাং তারা এ নির্বাচনটাকে নিয়েছিল বিশ্বকে দেখাতে যে দেখুন জনগন আমাদের সাথে আছে! জনগন তাদের সাথে আছে কি না জানি না, তবে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে আছে এটা আজ দিবালোকের মত পরিস্কার।
আর আওয়ামী লীগ ভেবেছিল প্রশাসনকে ব্যবহার করে, ক্ষমতার টোপ দেখিয়ে উপজেলা নির্বাচনে তারাই বেশীরভাগ আসনে জিতে যাবেন এবং ৫ই জানুয়ারীর ভুয়া নির্বাচনটাকে জায়েজ করে নিবেন।
কিন্তু ওই যে কথায় আছে না, উপরওয়ালা বলেন, 'বান্দা তুমি পাতা যত বড় করেই বিছাও না কেন, দেওন্নের মালিক কিন্তু আমি'! সুতরাং আওয়ামী লীগের পা'য়ের নীচে মাটি থাকলো না। কলা পাতায় খাবার বেশী পড়লো না!
ফলে আবার ষড়যন্ত্র।
সেবার ছিল তত্বাবধায়ক ব্যবস্হা। এবার স্হানীয় সরকার ব্যবস্হা। স্হানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ বলেছেন পুরো ব্যবস্হাটাকেই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় করন করবেন। খোল নলচে বদলে ফেলবেন।
কারনটা সহজেই বোধগম্য! পরাজয়ে ডরে বীর! তবে একখানা কথা বলি, অন্য কোন সভ্য দেশের সরকার হলে, এটাকেই হয়তো সাধারন মানুষের মতামত বা গণভোট ভেবে পদত্যাগ করে সাধারন নির্বাচন দিয়ে দিত।
সামান্য নৈতিকতা বোধ থাকলে সকল দলের অংশগ্রহনে নির্বাচন দিন, ম্যান্ডেট নিয়ে ফিরে এসে এসব পরিবর্তনে হাত দিন। তবে কি কি পরিবর্তন করবেন তা অবশ্যই নির্বাচনি ইশতেহারে পরিস্কার উল্লেখ থাকতে হবে। জনগনকে বলবেন একটা আর ক্ষমতায় এসে করবেন অন্যটা সেটা হবে না, জনগন মেনে নেবে না। জনগনকে বোকা ভাবার দিন ক্রমেই শেষ হয়ে আসছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।