আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবরের আজাব ভয়াবহ

কবর জগতের ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রিয় নবী (সা.) উম্মতকে বার বার সতর্ক করেছেন। হজরত ওসমান বিন আফ্ফান (রা.) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে দাফন করে যখন নবীজী (সা.) অবসর হতেন, তখন সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং উপস্থিত সবাইকে বলতেন, তোমাদের ভাইয়ের জন্য আল্লাহর নিকট মাগফেরাত প্রার্থনা কর। দোয়া কর, যেন আল্লাহতায়ালা তাকে এখন ইমানের ওপর সুদৃঢ় রাখেন। কেননা, এখনি তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে। (আবু দাউদ)। এ জন্য খলিফাতুল মুসলিমিন হজরত ওসমান (রা.) যখন কোনো কবরের নিকট দাঁড়াতেন তখন ভীষণ কাঁদতেন। ফলে তাঁর দাড়ি পর্যন্ত ভিজে যেত। তাকে বলা হলো, আপনি তো জান্নাত ও জাহান্নামের কথাও স্মরণ করেন, কিন্তু তখন এত কাঁদেন না। অথচ এই কবর দেখে এমন অঝোরে কাঁদেন কেন? তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কবর আখেরাতের প্রথম মঞ্জিল। সুতরাং এখানে যে মুক্তি পেয়ে যাবে, তার পরবর্তী মঞ্জিলসমূহ সহজ হয়ে উঠবে। আর যদি কেউ এখানে নিষ্কৃতি না পায়, তাহলে পরবর্তী মঞ্জিলগুলো তার জন্য আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, আমি কবরের চাইতে অধিক ভয়াবহ দৃশ্য কোথাও দেখিনি। (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)। অপর হাদিসে এসেছে, হজরত আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) বলেন, একদা রাসূল (সা.) খুতবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন। তারপর তিনি কবরে যে ব্যক্তি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করলেন। যখন তিনি এই আলোচনা করলেন, তখন উপস্থিত মুসলমানরা চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। (বুখারি)। কবরের ভয়াবহ আজাব সম্পর্কে হজরত জায়েদ বিন সাবেত (রা.) বলেন, এক দিন রাসূল (সা.) নাজ্জার গোত্রের একটি প্রাচীরবেষ্টিত বাগানে তার একটি খচ্চরের ওপর সওয়ার ছিলেন এবং আমরাও তার সঙ্গে ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ খচ্চরটি লাফিয়ে উঠল, ফলে তাকে মাটিতে ফেলে দেওয়ার উপক্রম হলো। দেখা গেল, সেখানে পাঁচ বা ছয়টি কবর রয়েছে। তারপর তিনি বললেন, এ সব কবরের বাসিন্দাদের কে চিনে? এক ব্যক্তি বলল, আমি চিনি। তিনি বললেন, এরা কবে মারা গেছে? সে বলল, শিরকের জমানায়। তারপর নবী (সা.) বললেন, তাদের কবরে কঠিন পরীক্ষায় ফেলা হয়েছে। তোমরা যদি ভয়ে মানুষকে দাফন করা ত্যাগ না করতে, তাহলে আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতাম, তিনি যেন তোমাদের কবরের আজাব শুনিয়ে দেন, যা আমি শুনতে পাচ্ছি। তারপর নবী (সা.) আমাদের দিকে ঘুরে দাঁড়ালেন এবং বললেন, তোমরা সবাই দোজখের আজাব হতে আল্লাহর নিকট পানাহ চাও। সবাই বলে উঠল, আমরা জাহান্নামের শাস্তি হতে আল্লাহতায়ালার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। নবী (সা.) বললেন, তোমরা কবরের আজাব হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও। তারা বলল, আমরা কবরের আজাব হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। নবী (সা.) বললেন, তোমরা প্রকাশ্য ও গোপনীয় সর্বপ্রকার ফেতনা ও বিপর্যয় হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও। তারা বলল, আমরা প্রকাশ্য, গোপনীয় সর্বপ্রকার ফেতনা ও বিপর্যয় হতে মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। অবশেষে তিনি বললেন, তোমরা দাজ্জালের ফেতনা হতে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর। সবাই বলল, আমরা দাজ্জালের ফেতনা হতেও আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। (মুসলিম)।

লেখক : খতিব, বাইতুর রহমত জামে মসজিদ, গাজীপুরা, টঙ্গী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.