বাংলা ভাষায় প্রচলিত একটি প্রবচন 'যার কাজ তার সাজে'। যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের এ প্রবচনটি অজানা থাকার কথা নয়। তারপরও পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে না ডেকে তিনি নিজেই গিয়েছিলেন লালমাটিয়ার একটি অ্যাপার্টমেন্টে 'তথাকথিত সন্ত্রাসী' ধরতে। আর যেটি তার দায়িত্ব নয়, সে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মধ্যরাতে তিনি এলাকায় সন্ত্রস্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় তিন সঙ্গী নিয়ে রাত দেড়টার দিকে লালমাটিয়ার সি ব্লকের ৬/৯ অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের গেটে যান। এ সময় তিনি ভবনের সিকিউরিটি স্টাফকে গেট খুলতে বলেন। সিকিউরিটি স্টাফরা উপমন্ত্রীকে জানান, এত রাতে গেট খোলা সম্ভব নয়। উপমন্ত্রী বলেন, সন্ধ্যায় এ ভবনের ভেতরে সন্ত্রাসী ঢুকেছে। আমি সন্ত্রাসীদের ধরতে এসেছি। এ সময় সিকিউরিটি স্টাফরা গেট না খোলায় উপমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা লোকজন চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। এতে অ্যাপার্টমেন্টের ১৪টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা ঘুম থেকে জেগে ওঠেন ও তারা ভয়ে-আতঙ্কে বিহ্বল হয়ে পড়েন। অ্যাপার্টমেন্টটির সিকিউরিটি স্টাফরা গেট না খোলার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় উপমন্ত্রী তার দলবলসহ পিছুটান দেন। উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় দেশের একজন সাবেক কৃতী ফুটবলার। ফুটবলার হিসেবে তার যে পরিচিতি গড়ে উঠেছিল সে পরিচিতির গুণেই গত ৫ জানুয়ারির প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হয়ে জিতে আসেন। শুধু জেতা নয়, সবাইকে অবাক করে উপমন্ত্রী হওয়ারও কৃতিত্ব দেখান। প্রধানমন্ত্রী হয়তো আশা করেছেন ফুটবলার হিসেবে জয় যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী হিসেবেও তার ছাপ রাখতে পারবেন। হয়তো এ কারণেই অতি উৎসাহী মন্ত্রী পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর না দিয়ে নিজেই গিয়েছিলেন তথাকথিত সন্ত্রাসী ধরতে। সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী ধরা যদি মন্ত্রীর কাজ হয়, তবে পুলিশ-র্যাব সদস্যদের কেন পোষা হয়, তা দেশবাসীর কাছে বোধগম্য নয়। সন্ত্রাসী ধরার নামে মন্ত্রী যেভাবে মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন তাও কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না। সন্ত্রাসী পাকড়াওয়ের মনোভাব দৃশ্যত প্রশংসনীয় হলেও তিনি এ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্তদের না ডেকে যেভাবে মধ্যরাতের অভিযানে নেমেছিলেন তা দুর্ভাগ্যজনক। এ ধরনের অর্বাচীন কর্মকাণ্ড কোনো মন্ত্রীর জন্য শোভনীয় কিনা তা তার ভেবে দেখাই উচিত ছিল।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।