সম্প্রতি সারা দেশে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। শরীয়তপুরে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ নির্বাচন। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হয় জেলার জাজিরা, ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন। দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয় শরীয়তপুর সদর ও নড়িয়া উপজেলার নির্বাচন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে জাজিরায় আওয়ামীলীগ সমর্থিত মোবারক আলী সিকদার, ডামুড্যায় আওয়ামীলীগের আলমগীর মাঝি, গোসাইরহাট উপজেলায় আওয়ামীলীগের সৈয়দ নাসির উদ্দিন ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত আনোয়ার মাঝি।
দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে শরীয়তপুর সদর উপজেলায় আওয়ামীলীগের আবুল হাসেম তপাদার ও নড়িয়া উপজেলায় আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে হারিয়ে আওয়ামীলীগেরই এ কে এম ইসমাইল হক বিজয়ী হন। নির্বাচন পরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় সহিংসতার খবর পাওয়া যায় এবং সহিংসতার খবর এখনও পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনে এ ধরনের সহিংসতার খবর কখনো কাম্য নয়। প্রতিযোগীতায় এক দল হারবে আর এক দল জিতবে এটাই নিয়ম। যে হারে সে যে একেবারেই হেরে গেল তা কিন্তু নয়।
আবার যে জিতে গেল সে যে চিরকালের জন্য জিতে গেল তাও নয়। ক্ষমতা কখনো চিরস্থায়ী হয় না। কৃত কর্মের কারনে ক্ষমতা আসে আবার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা কেড়ে নেয়। বিজয়ীর চিন্তা করতে হবে সে বিজয়ী হয়েছেন সকলের ভোটে। আর যে পরাজিত হয়েছেন সেও অনেক ভোট পেয়ে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন।
তারও রছেয়ে বিপুল সম্ভাবনা এবং সমর্থন। তাই বিজয়ী প্রার্থীর উচিত প্রতিদ্বন্দীকে সাথে নিয়ে সহাবস্থান করে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করা। এ কাজটা বিজয়ীকেই করতে হবে। বিজয়ী সবার আগে বিজিতর দিকে হাত বাড়াবে। বিজয়ী যদি জয়ের মালা নিয়ে বিজিতর গলায় পড়ায় তাতে বিজয়ীই আরেকবার বিজয় লাভের তৃপ্তি উপভোগ করতে পারেন।
আর এর ফলে বিজিত প্রার্থী তার মনবেদনা কিছুটা কমাতে এবং কাজের উদ্দীপনা জোগাতে পারেন।
নির্বাচন পূর্ব এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। আবার অনেকের বাড়ি ঘর ভাংচুর, দোকান পাট লুটপাট, মারধরে আহতের সংখ্যা বারছে। সহিংসতায় মৃতের পরিবর জানে তারা কি হারিয়েছে। স্বজন হারা পরিবারের আকুতি কিছুতেই মিটবে না।
কোন কিছু দিয়েই এ ক্ষতি পূরণ করা যায় না। সন্তান হারা বাবা-মায়ের, স্বামী হারা স্ত্রীর, পিতা হারা সন্তানের, ভাই হারা স্বজনের দীর্ঘশ্বাস কেন আমরা নিজেদের ঘারে বয়ে বেড়াবো? প্রতিপক্ষ হলেই কি তাকে শেষ করে দিতে হবে? মতের অমিল থাকতেই পারে। আর পৃথিবী যতদিন আছে মতের অমিল থাকবেই। তাই পরমতকে সহ্য করার মানসিকতা পোষণ লালন ও ধারণ করতে হবে। যার বাড়ি ঘর কুপিয়ে, ভাংচুর করে ক্ষতি করেছে সে জানে তার কি ক্ষতি হয়েছে।
একজন ক্ষুদ্র চায়ের দোকানদার জানে তার লুটপাটের ক্ষতি পূরণ করতে কি বেগ পোহাতে হবে। হয়তো এক খন্ড জমি আছে সেটাই তার বিক্রি করে আবার পুজি সংগ্রহ করতে হবে। যার ঘর লুট হয়েছে সে তার ক্ষতি পূরণ করতে পারবে কি পারবে না তা সে জানে না। আজ প্রতিপক্ষের কাউকে খুন করে, প্রতিপক্ষের ঘর-বাড়ি, দোকান পাট ভাংচুর-লুটপাট করবেন আগামীতে যদি কেই আপনার একই ক্ষতি করে? তখন অনুভব করতে পারবেন ক্ষতির কি যন্ত্রনা। তাই আমাদের উচিত সহাবস্থান।
অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। আপনার উদারতা, শ্রদ্ধাবোধ, সম্মানবোধ এবং আন্তরিকতা আপনাকে বড় করবে। মানুষ হিসাবে আমাদের এটাইতো কাম্য হওয়া উচিত। আসুন সবাই আন্তরিক হই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।