প্রশ্নটা তাঁর জন্য বিব্রতকর। তবে শোনামাত্র হাশিম আমলা যে হাসিটা দিলেন তাতে বোঝা গেল, হয় অনেকবার এই প্রশ্নটার জবাব দিতে তিনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, নয়তো এখন আর পাত্তাই দেন না ব্যাপারটাকে। ‘টি-টোয়েন্টি তো ঠিক আপনার খেলা নয়, কেমন লাগছে এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে?’—এক ভারতীয় সাংবাদিকের মুখে প্রশ্নটা শুনে তাই হাসিমুখেই বললেন, ‘কে বলেছে আমার খেলা নয়! আমি তো খুবই উপভোগ করছি। এটাও একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। ’
দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র টেস্ট ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান তিনি, ব্যাটিং-গড় ৫১.৩৫।
ওয়ানডে পরিসংখ্যানটা আরও ঈর্ষণীয়, ৮৫ ম্যাচেই সেঞ্চুরি ১২টি, গড় ৫৩.৩৪। দুই সংস্করণেই র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ছিলেন অনেক দিন। এমন ব্যাটসম্যানের এই বিশ্বকাপের আগে ২১টি টি-টোয়েন্টিতে কোনো হাফ সেঞ্চুরি ছিল না, স্ট্রাইক রেট ছিল ১১৮.৯১। টি-টোয়েন্টির সঙ্গে কেন মানিয়ে নিতে পারছেন না—বাংলাদেশে এসেই তাই এমন প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। তখনই আশ্বাস দিয়েছিলেন, এই বিশ্বকাপেই ধারণাটা বদলানোর চেষ্টা করবেন।
সুপার টেনের ৪টি ম্যাচ সেই ধারণা কিছুটা বদলেছেও। ১৬৩ রান নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে তিনিই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ রানসংগ্রহকারী। হল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ বলে ৪৩ করেছেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৭ বলে ৫৬। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিটা তো পেয়েছেনই, বিশ্বকাপে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৩০.৪০। টি-টোয়েন্টি উপভোগ করছেন—এ কথা তো এখন বলতেই পারেন আমলা।
উপভোগ করছেন বলেই কাল ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও তাঁর কাছে বাড়তি প্রত্যাশা দলের। মূল চ্যালেঞ্জটা অবশ্যই ভারতের স্পিন সামলানো। মিরপুরের উইকেট এমনিতেই স্পিনারদের বন্ধু। তার ওপর মিশ্র-অশ্বিনরা আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। তবে ছন্দে থাকা আমলাও প্রস্তুত, ‘এখানে স্পিন বড় ভূমিকা রাখবে এটা আমরাও জানি।
তবে শুধু স্পিনাররা নয়, ছন্দ পেয়ে গেলে পেসাররাও যেকোনো দিন বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। আমরা সবকিছুর জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছি। ’
মিশ্র-অশ্বিনদের পাশাপাশি ব্যাট হাতে কোহলি-শর্মারা ছন্দে থাকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতও দুর্দান্ত দল। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল তারা। টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের সর্বশেষ দেখা গত বিশ্বকাপে, ওই ম্যাচেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১ রানে হারিয়েছিল ভারত।
তবে এসব কারণে প্রতিপক্ষকে এগিয়ে রাখতে রাজি নন আমলা, ‘আমরাও দারুণ ক্রিকেট খেলছি। সুপার টেনে আমরা দারুণ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কিছু ম্যাচ জিতেছি। এটা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে আমাদের। ’
সেই আত্মবিশ্বাস ভারত-বধের টনিক হতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।