যারা গ্রামাঞ্চলসহ নিজ নিজ কর্মস্থলে না থেকে ঢাকায় এসে প্র্যাকটিস করেন সেসব চিকিৎসকের চাকরি থেকে বিদায় দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেছেন, গ্রামের কর্মস্থলে না থাকতে চাইলে, জনগণের সেবা করতে না পারলে চাকরি করার দরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক-ডাক্তারসহ যারা কর্মস্থলে না থেকে ঢাকায় আসার জন্য উদগ্রীব, কাজে ফাঁকি দেন এবং জনগণের সেবা করেন না, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি। স্বাধীনতার পর প্রতিটি সরকার শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে। এ খাতে বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে যে অর্থ ব্যয় করা হয়, তার পরিমাণ খুব একটা ছোট নয়। কিন্তু এই অর্থের এক বড় অংশই অপচয় হচ্ছে। গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপন করলেও সেসব জায়গায় যারা ডাক্তার হিসেবে নিয়োগ পান তাদের এক বড় অংশ গ্রামে থেকে কাজ করেন না। শহরাঞ্চলে থেকে তারা গ্রামে যান এবং মাঝে মাঝে হাজির হয়ে খাতায় স্বাক্ষর করা এবং মাস শেষে বেতন নেওয়াকে দায়িত্ব বলে ভাবেন। শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক কার্যক্রম নেওয়া হলেও শিক্ষকদের একাংশের দায়িত্বহীনতার জন্য কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বেসরকারি থাকা অবস্থায় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাপারে যতটা যত্নবান থাকেন, সরকারিকরণের পর তাদের সে দায়বোধ থাকে না। প্রধানমন্ত্রী ফাঁকিবাজ শিক্ষক-ডাক্তারসহ জনগণের সেবায় যাদের অনীহা আছে সেসব সরকারি চাকরিজীবীর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার। সরকারি চাকরিজীবীদের যেহেতু জনগণের ট্যাঙ্রে টাকা থেকে বেতন দেওয়া হয়, সেহেতু জনগণের সেবা করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু সরকারি চাকরিজীবী তা চিকিৎসক হোক আর শিক্ষক হোক তাদের এক বড় অংশই মনে করেন জনগণের সেবা তাদের দায়িত্ব নয়, মাস শেষে বেতন নেওয়া তাদের অধিকার হিসেবে বর্তায়। আমরা আশা করব, ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি শুধু বক্তব্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বাস্তবেও অনুভব করা যাবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।