পোশাক পরিচ্ছদ সভ্যতা ও সংস্কৃতির নিদর্শন। দেশ-কাল-পাত্র ভেদে তা বিভিন্ন। মধ্যপ্রাচ্যের পুরুষরা হিজাবের মতো পোশাক পরিধান করে, সূর্যের প্রখর উত্তাপ থেকে বেঁচে থাকার জন্য। আবার সাইবেরিয়ার মুসলমানগণ ভাল্লুকের চামড়া দিয়ে তৈরি পোশাক পরিধান করে তীব্র শীত থেকে আত্মরক্ষার জন্য। পোশাক পরিচ্ছদ পরিবেশ থেকে রক্ষা এবং ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও পরিবেশ ও প্রাকৃতিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভদ্র ও শালীন পোশাক পরিধান করা শ্রেয়। আল্লাহ তায়ালা দীনের ব্যাপারে মানুষের উপর কোন সংকীর্ণতা আরোপ করেননি (দ্রষ্টব্য কুরআন ২২:৭৮)।
ইসলাম ধর্মের কোন নির্দিষ্ট পোশাক নেই। ইসলাম সমগ্র মানবজাতির জন্য। গরমের দেশে, শীতের দেশে, নাতিশীতোষ্ণ দেশে সবরকম আবহাওয়ায় বসবাসকারী সবার জন্য এক রকম পোশাক পরিধানের নির্দেশ যদি থাকতো তা হলে ইসলাম সমগ্র মানবজাতির জন্য না হয়ে কেবল নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকতো।
তাই আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা.) নির্দিষ্ট কোন পোশাক পরিধানের আদেশ দেননি। বিশ্বনবী (সা.)-এঁর সময়ে তাঁর নিজের এবং সাহাবাদের পোশাক-পরিচ্ছদ এবং তখনকার আরব অমুসলমানদের পোশাক-পরিচ্ছদ একই ছিলো। বর্তমানেও আরবের মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদিরা একই রকম পোশাক পরিধান করে। আরব দেশে পোশাক দেখে কে মুসলমান, কে খ্রিষ্টান আর কে ইহুদি তা নির্ণয় করা যায় না।
পোশাক পরিধানের কারণ - লজ্জানিবারণ, সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং শীত ও উত্তাপ থেকে দেহকে রক্ষা করা।
তাই শীতপ্রধান দেশের মুসলমানদেরও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের অনুকরণে পোশাক পরিধান করতে হবে এ ধারণা করা নিছক মূর্খতা। আল্লাহ্ বলেন, 'হে নবী, তুমি বলো আল্লাহ্ তায়ালার দেয়া সৌন্দর্যমন্ডিত পোশাক এবং পাক পবিত্র খাবার তোমাদের জন্যে কে হারাম করেছে?' (কুরআন ৭:২৬)। এ আয়াত প্রমাণ করে - সুন্দর, মার্জিত ও রুচিশীল সব ধরনের পোশাকই মুসলমানের পোশাক। প্যান্ট-শার্ট-টাই-স্যুট ইত্যাদি কোনকিছুই মুসলমান পুরুষের পোশাক হতে বাঁধা নেই।
কুরআনের কোথাও দাড়ি রাখা ও নির্দিষ্ট ধরনের পোশাক পরিধানের নির্দেশ নাই।
কুরআন মতে তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম। আল্লাহর বাণী - 'হে আদম সন্তানরা, আমি তোমাদের উপর পোশাক সংক্রান্ত বিধান পাঠিয়েছি, যাতে করে তোমরা তোমাদের গোপন স্থানসমূহকে ঢেকে রাখতে পারো এবং নিজেদের সৌন্দর্যও ফুটিয়ে তুলতে পারো, তবে আসল পোশাক হচ্ছে তাকওয়ার পোশাক। ' (কুরআন ৭:২৬)। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।