A "TRUTH" can walk naked but a "LIE" needs to be dressed . হিমুদের ঘরে কোন ছিটকিনি থাকে না। আমার ঘরেও নেই। অনেকদিন আগে ছিটকিনিটা ভেঙ্গে গিয়েছিল। এরপর আর লাগানো হয়নি। আমার সাথে হিমুর তেমন মিল আছে তা নয়।
কিন্তু মাঝে মাঝে খুব হিমু হতে ইচ্ছে করে। হিমুর সাথে নিজের কোন একটা মিল খুঁজে পেলে খুব আনন্দ হয়। দরজা ভেজানো ছিল। হৃদি হঠাৎ এসে ঘরে ঢুকল। আমি চমকে গেলাম।
আজ ওকে একদমই আশা করিনি। ও আমার রুপা। আমার সাথে হিমুর তেমন কোন মিল না থাকলেও ওর সাথে রুপার অনেক মিল। অন্তত আমার তাই মনে হয়। এসেই বলল, মনির তোমার ফোন কোথায়? তুমি কি কখনই বদলাবে না, মনির? সকাল থেকে কম করে হলেও আমি তোমাকে ২৫ বার ফোন দিয়েছি।
কল রিসিভ না করলে ফোন ব্যাবহার এর দরকার কি?
হৃদি কে আজ খুব সুন্দর লাগছে। ও খুব সাজতে পছন্দ করে। কিন্তু আজ তার কোন সাঁজ নেই। কানে কোন দুল নেই, নাকে নেই নাকফুল। ঠোটে লিপসটীক ও নেই।
শুধু কপালে একটি ছোট্ট কাল টিপ। ওর এই simple getup ই আমার সবচেয়ে ভালো লাগে। আমি তাকিয়ে রইলাম।
হৃদিঃ আজ কি বার খেয়াল আছে? আমাদের আজ একটা প্লান ছিল, মনে আছে?
আমিঃ তোমায় আজ খুব সুন্দর লাগছে। তুমি কি একটু আমার পাশে বসবে? হ্যাঁ, আমার মনে আছে।
আজ তোমার সাথে তোমার খালার বাসায় যাওয়ার কথা। কিন্তু তুমি এখন একটু আমার পাশে কিছুক্ষন বসো।
হৃদিঃ আহ্লাদ কইরো না তো। চল তাড়াতাড়ি, সময় নাই। তুমি এমনিতেই অনেক সময় নষ্ট করছ।
খালা কিন্তু ২ টার পর আর বাসায় থাকবে না।
আমিঃ হৃদি, আমার মনে হচ্ছে তোমার খালা আমাকে দেখেই খুব অপছন্দ করবেন। যেয়ে কোন লাভ হবে না।
হৃদিঃ লাভ হবে কি হবে না সেটা পরে দেখা যাবে। যেতে তোমার সমস্যা কি? সারাদিন তো বসেই থাকো।
তোমার তো আর কোন কাজ নেই।
আমিঃ হম আচ্ছা যাবো। একটু বসো না। আমার পাশে।
হৃদিঃ তোমার বিছানায় আমি বসব না।
তোমার বিছানায় বসতে আমার কেমন যেন লাগে। বাইরে চল, পার্ক এর বেঞ্চিতে গিয়ে বসি।
আমিঃ কেন? বিছানার চাদর কিন্তু গত পরশুদিন ধোঁয়া হয়েছে।
হৃদিঃ তুমি বুঝবে না। চল বাইরে যাই।
আমরা এক সাথে গিয়ে সাম্নের পার্কটা তে গিয়ে বসলাম।
হৃদিঃ ৫ মিনিট কিন্তু। তার বেশি না। খালার বাসায় আজ যেতেই হবে। উনাকে আবার কবে ফ্রি পাব তার কোন ঠিক নেই।
আমিঃ আচ্ছা আমাদের বিয়ে করার দরকার কি? চলনা এইভাবেই আমরা সারাজীবন প্রেম করে কাটিয়ে দেই।
হৃদিঃ তুমি কি একটু সিরিয়াস হবে প্লিজ। ৩ মিনিট কিন্তু হয়ে গেছে। আর ২ মিনিট।
আমিঃ আরেকটা অনুরোধ করি?
হৃদিঃ হাত ধরবে তো? এই নাও, ধরো।
আমিঃ (হাত ধরে) হৃদি, আমার মনে হচ্ছে এরপর আমাদের অনেকদিন আর দেখা হবেনা।
হৃদিঃ তুমি খালাকে এত ভয় পাচ্ছ কেন? উনার উপর আমার ভরশা আছে বলেই তো তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি, তাইনা?
আমি কিছু বললাম না। আমরা সোজা গিয়ে একটা CNG তে করে ওর খালার বাসায় চলে গেলাম। ওর খালার বাসায় ঢুকে আমার চক্ষু ছানাবড়া। সুনেছিলাম ওর খালারা অনেক বড়লোক।
খালু কানাডাতে ব্যবসা করে। খালাও এক প্রাইভেট ভার্সিটি এর লেকচারার। কিন্তু এতটা বড়লোক বুঝিনি। আমার নিজেকে এই বিশাল বাড়ির ভেতরে খুব খুদ্র মনে হল। আমরা ড্রয়িং রুম এ বসলাম।
টেবিলে চা বিস্কুট আর একধরনের অদ্ভুত কিছু মিষ্টি দেয়া হল। মিষ্টি গুলো মনে হয় দেশের বাইরে থেকে আনা। এতক্ষণ হৃদিকে খুব confident লাগছিল। কিন্তু এখন ওর মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে ও কিছুটা চিন্তিত। কিছুক্ষন পর ওর খালা আসলে আমরা ২ জনই উঠে দাঁড়ালাম।
খালাঃ বসো বসো। তোমার নাম মনির?
আমিঃ জী।
খালাঃ তোমার ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট হতে আর কতদিন বাকি?
আমিঃ জী, এটাই আমার শেষ সেমেস্টার।
খালাঃ তারপর কি করবে কিছু ঠিক করেছ?
আমিঃ জী না, এখনো কিছু ঠিক করিনি।
খালাঃ হৃদির সাথে তোমার পরিচয় কীভাবে?
আমাদের প্রথম পরিচয় হয় ফেসবুক এ।
কিন্তু আমি তা বলার আগেই হৃদি বলে উঠল, খালা, ও আমাদের ভার্সিটি এর ব্লাড ডোনেসন কমিটি এর সম্পাদক ছিল। ওইখানেই ওর সাথে আমার প্রথম পরিচয়।
খালাঃ তোর কাছে শুনতে চেয়েছি? তোর কাছেই যদি সুনব তাহলে ওকে ডেকে আনালাম কেন?
হৃদিঃ সরি খালা।
খালাঃ মনির, তোমার বাবা কি করেন?
আমিঃ আমার বাবা নেই। আমার বয়স যখন ৯ তখন মারা গেছেন।
মা স্কুল শিক্ষিকা।
খালাঃ হৃদিদের পরিবার সম্পর্কে তুমি কিছু জানো?
আমিঃ জী। কিছুটা জানি।
খালাঃ আমার মনে হয় না তুমি খুব বেশি কিছু জানো। তোমার কি মনে হয় তোমাদের এই রিলেশন তারা মেনে নিবে?
আমিঃ না, নিবে না।
এই জন্যই আপনার কাছে আসা।
খালাঃ তুমি আমাকে কি করতে বল?
আমিঃ আমি জানি না। হৃদি বলল আপনার কাছে গেলে আপনি কিছু একটা উপায় বের করতে পারবেন।
খালাঃ আমি যে উপদেশ দিব সেটা তোমার খুব একটা পছন্দ হবে বলে মনে হয় না।
আমিঃ আমার হাতে তো আর কোন option নেই তা ছাড়া।
খালাঃ হৃদি, তুই একটু ভিতরে যা তো। ওর সাথে আমি একটু একা কথা বলতে চাই।
হৃদি কোন কথা না বলে ভিতরে চলে গেল।
খালাঃ মনির, তোমার academic result নাকি শুনেছি অনেক ভালো? তুমি দেশের বাইরে যাও। আমি তোমার ফুল scholarship এর ব্যবস্থা করে দেব।
আগে নিজে ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত হও। তারপর আমি তোমার কথা ওদের বলব।
আমিঃ মাকে রেখে আমি বাইরে যেতে পারবো না। আমি ছাড়া মায়ের আর কেউ নেই। আমি বাইরে গেলে মা খুব কষ্ট পাবে।
খালাঃ আচ্ছা মনির তুমি আজ এসো। আমার আজ একটু তারা আছে। আমি হৃদির সাথে একটু আলাদা কথা বলব। তারপর বাইরে কাজে যাবো। তুমি চলে যাও।
আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাম। কিন্তু চলে যেতে পারলাম না। যতক্ষণ হৃদি না বের হয় ততক্ষণ দারিয়ে থাকলাম। প্রায় ৪৫ মিনিট পর হৃদি বের হল। ওর চোখে পানি।
আমি এগিয়ে গেলাম। বললাম, কি হয়েছে হৃদি?
হৃদিঃ খালা তোমাকে পছন্দ করেছেন, মনির। তোমার মনে হয় আর হিমু হওয়া হল না। আর আমিও রুপা হতে চাই না। আমি আজ তোমায় জিজ্ঞেস করছিলাম না যে তুমি কখনও change হবে কি না? প্লিজ হয়ো না।
তুমি যেমন আছো তেমনই থেকো সারা জীবন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।