আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমিনীর জানাজায় লাখো মানুষের সমাগম

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মুফতি ফজলুল হক আমিনীর নামাজের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটায় জানাজার নামাজে ইমামতি করেন লালবাগ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আবদুল হাই। জানাজায় লাখো মুসুল্লি অংশগ্রহণ করেন। এসময় ঢাকার জাতীয় ঈদগাহের বিশাল জায়গাতেও সংকুলান হয়নি মুফতি আমিনীর জানাজায় আসা মুসল্লিদের। মাঠে জায়গা না হওয়ায় মূল ফটক পেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়ান মুসল্লিরা।

যার শেষাংশ ছিল প্রেস ক্লাব পর্যন্ত। জানাজায় জড়ো হওয়া লক্ষাধিক লোকের জমায়েত একদিকে মৎসভবন ও অপর দিকে শিক্ষাভবন পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে। জানাজায় সমবেত লোকের ভিড়ের কারণে শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বর ও দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীর লক্ষাধিক ভক্তের উপস্থিতিতে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মুফতি আমিনী রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

আমিনীকে লালবাগের জামেয়া কুরআনীয়া আরাবীয়ার গোরাস্তানে দাফন করা হবে। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। মঙ্গলবার এশার নামাজের পর দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন মুফতি আমিনী। রাত সোয়া ৯টার দিকে হঠাৎ তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেন।

তখন তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যথা না কমায় রাত সোয়া ১১টার দিকে তাকে নিয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চিকিৎসাধীন থাকার পর সোয়া ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ফজলুল হক আমিনী স্ত্রী, দুই ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন। তিনি মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুজরের জামাতা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মুফতি আমিনী শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

তিনি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সরকার নিয়ন্ত্রিত পুলিশি প্রহরায় গৃহবন্দি ছিলেন। মুফতি আমিনী বিএনপি নেতৃত্বাধীন বর্তমান ১৮ দলীয় জোটের শরিক দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ছিলেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট থেকে তিনি ২০০১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রাজধানীর লালবাগ জামেয়া কোরআনিয়া এবং বড় কাটারা আশরাফুল উলুম মাদরাসাসহ বেশ কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন তিনি। দেশ-বিদেশে তার হাজার হাজার ছাত্র-ভক্ত-মুরিদ রয়েছেন।

১৯৪৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন মুফতি আমিনী। গত শতকের ৮০’র দশকে খেলাফত আন্দোলনে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে আমিনীর রাজনৈতিক জীবনের শুরু। পরে তিনি খেলাফতে ইসলামী নামে আলাদা দল গঠন এবং এর চেয়ারম্যান হন। এরপর কয়েকটি ইসলামী দল মিলে ইসলামী ঐক্যজোট গঠিত হলে এর মহাসচিব হন আমিনী এবং চেয়ারম্যান ছিলেন শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক। আজিজুল হকের মৃত্যুর পর আমিনী হন জোটের চেয়ারম্যান।

মুফতি আমিনী ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটিরও আমির ছিলেন। মুফতি আমিনীর মৃত্যুতে তার দল, জোট ও অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ আলেম সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের শোক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। এক শোক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া বলেন, ‘দেশবরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ফজলুল হক আমিনীর অবদান এ দেশের মানুষ কখনো ভুলবে না। বর্তমান স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের অপশাসন ও অপকীর্তির বিরুদ্ধে মাওলানা আমিনীর কণ্ঠস্বর ছিল সাহসী ও মানুষের মৌলিক অধিকারের পক্ষে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে মাওলানা আমিনীকে মানসিক, শারীরিকসহ নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। তিনি অন্যায় ও অসত্যের সঙ্গে কখনোই আপস করেননি। ’ বিএনপি চেয়ারপারসন মাওলানা ফজলুল হক আমিনীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের সদস্য, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। বিএনপির দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.