সমাজ থেকে কল্পিত দ্বন্দগুলো দূর হোক। অফিসের ব্যস্ততা সেরে আজকে বাসায় ফিরতে একটু দেরী হয়। বাসায় ফিরে টিভি অন করে মনটা খুব ভাল হয়ে গেলো। ভাল হওয়ার প্রথম কারণ সন্ধ্যা পর্যন্তও দেখী বিএনপির সাংসদগণ সংসদে অবস্থান করে বক্তব্য রাখছেন। যদিও জানিনা তারা কখন সংসদে প্রবেশ করেছেন।
নতুন নারী স্পিকারের মডারেটরে সংসদ অধিবেশন চলছে, মন ভাল হওয়া জন্য এটাও কম ভুমিকা রাখেনি। মনটা আরও ভাল লাগল যখন মওদুদ আহমেদ-এর মত সাংসদ যিনি সব সময় কটাক্ষ করে বক্তব্য রাখেন (যেমনটি আওয়ামীলীগের সুরঞ্জনজিৎ সেন রাখেন)তিনি অত্যান্ত ভদ্রচিত ভাষায় বক্তব্য রাখছেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে যিনি স্ব-রাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া সভা-সমাবেশ করতে না দেওয়ার ব্যাপারে বক্তব্য রাখছেন এবং বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিৎ হবে এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়া, ক্ষমা চাইলে তার কোন মান সম্মান যাবে না বা সরকারের কোন মান সম্মান যাবেনা বরং তাতে মান সম্মান আরও বাড়বে (মি. মওদুদ আহমেদর হুবহু এরকম বলেননি তবে এই রকম বলতে চেয়েছেন)। সব মিলিয়ে মওদুদ আহমেদের বক্তব্য শুনে আমি খুবই মুগ্ধ হলাম। মনে হলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যাগুলো বোধ হয় আজ থেকে সমাধানের দিকে এগুচেছ।
বাহ! বাহ!
এর পরের টুকু বলার আগে খুব ছোট্ট একটা গল্প বলি।
ক্লাশ টেনে পড়ার সময় : আমার এক বন্ধু একটি মেয়ের পিঁছে পিঁছে খুব ঘোরা-ঘুরি করছে কিন্তু কোন কিছুতে কোন কাজ হচ্ছেনা। এই শোকে বিহবল বন্ধুটি পড়া-লেখা প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। আমি বুঝতে পারছিনা এই পরিস্থিতিতে ওকে কি পরামর্শ দেব। যাইহোক আমি বল্লাম এসব ছেড়ে পড়া-লেখার দিকে মন দে।
এই পরামর্শ দেওয়ার পর ও আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল। আমি আগ বাড়িয়ে গিয়ে ওকে এবার ওর পছন্দমত পরামর্শ দিলাম। বল্লাম তুই চিঠিতে ওকে তোর মনের কথা জানা। এই পরামর্শটি ওর খুব মনে ধরল। ও বল্ল আমিও তাই ভাবছি কিন্তু সাহস পাচ্ছিনা।
সাহস করে খুব আবেগ দিয়ে একটা চিঠি লেখ দেখ তোর চিঠি পড়ে ও নিশ্চয় তোর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাবে। যাই হোক সেদিন রাতে রাত জেগে সুন্দর করে একটা চিঠি লিখল এবং ঐ বয়সের ছেলেরা যা করে ও তাই করলো নিজের রক্ত দিয়ে আই লাভ ইউ লিখল। না ও সত্যি সত্যি ওর নিজের রক্ত দিয়ে আই লাভ ইউ লিখল। পরের দিন স্কুলে যাবার পথে মেয়েটাকে চিঠি দেওয়া সুযোগ হলো না। এভাবে কয়েকদিন চেষ্টা করেও চিঠিটা দিতে পারলনা।
ও সুযোগ পেলেও মেয়েটি ওর চিঠি দেওয়ার সেই সুযোগ ইচ্ছে করে নষ্ট করে দেয়। কিন্তু ও হাল ছাড়ে না। ওর লেগে থাকা আমাকে একদিকে যেমন উৎসাহ যোগাচ্ছিল অন্যদিকে একধরনের ভিতিরও সঞ্চার করছিল। একদিন ও যখন বাইরে থেকে বাড়ীতে ফিরল ঠিক তখনই ঐ মেয়েটি এবং মেয়েটির মাকে ওদের বাড়ী থেকে বের হতে দেখলো বের হাবার পথে মেয়েটি ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো। বন্ধুটি মুচকি হাসির অন্তরালে তার চিঠি গ্রহণের সম্মতি খুঁজে পেলো।
পরের দিন মেয়েটির স্কুলে যাওয়ার পথে ও দাঁড়িয়ে রইলো। মেয়েটি যখন স্কুলে যাচ্ছিল তখন ও মেয়েটিকে চিঠি দিতে গেলো; অপর দিকে তাকিয়ে ওর যমের মত বাপকে ওদের দিকে আসতে দেখলো। কিন্তু আশ্চার্য ব্যাপার এরপরও মেয়েটি ওর দিকেই চিঠিটি নিতে এগিয়ে আসল। মেয়েটি ওর হাত থেকে চিঠিটি নিল এবং বন্ধুটি ওকে প্রচন্ড প্রচন্ড হতাশ করে ওর বাপের হাতে চিঠিটি দিয়ে দিল। তারপর কি হতে পারে সেটা কারওর অনুমান করতে কষ্ট হয়না।
(বি.দ্র. প্রতিটি ঘটনায় আমার বন্ধুকে আমি একটু দুর থেকে সঙ্গ দিতাম)।
যাইহোক যখন মওদুদ আহমেদ অন্যান্য দলীয় সাংসদ নিয়ে ওয়াক-আউট করলেন তখন ঐ বন্ধুটির মত অতটা হতাশা না হলেও আমি কম হতাশ হয়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।