টানা ৫ দিনের বিক্ষোভ সহিংসতায় তুরস্কে এরই মধ্যে ২ জন নিহত হয়েছে। তুরস্কের বামপন্থি পাবলিক ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন কনফেডারেশনের (কেস্ক) কর্মীসংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার।
এ ইউনিয়ন সরকারের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের’ অভিযোগ করেছে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশী দমনাভিযানের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা থেকে ‘হুঁশিয়ারি ধর্মঘট’ শুরু করেছে তারা।
এতে করে স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি কার্যালয়ের কাজকর্মও ব্যহত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে কেস্ক বলেছে, পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ওপর এমনভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে যে তা নাগরিক জীবনের নিরাপত্তাকে হুমকির সম্মুখীন করেছে।
১১ টি ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্বকারী এ ইউনিয়ন কনফেডারেশন সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ক্ষুন্ন করার অভিযোগ করেছে।
ওদিকে, দেশে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ-সহিংসতার জন্য সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দায়ী করে এর নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান।
বিক্ষোভকারীরা ‘সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অপরদিকে, দেশটির আন্তাকিয়ায় এক বিক্ষোভকারী গুলিতে নিহত হয়েছে।
এ নিয়ে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। গত শুক্রবার থেকে চলা বিক্ষোভে এ পর্যন্ত পুলিশসহ কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে।
চলমান বিক্ষোভের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান কোনো নমনীয়তা দেখাননি। সংবাদ সম্মেলনে তার বক্তব্য বিক্ষোভ দমনে সরকারের কঠোর অবস্থানকেই তুলে ধরেছে।
ইস্তাম্বুলের তাকসিম স্কয়ার সংলগ্ন অটোমান আমলের একটি সামরিক ছাউনি, যা পার্ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, তা ভেঙে বিপণীবিতান করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও পুলিশ চড়াও হওয়ার পর তা সহিংস রূপ নেয়।
পরবর্তীতে বিক্ষোভটি সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়ে টানা চলতে থাকে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশি হস্তক্ষেপকে এরদোয়ানের কর্তৃত্ববাদী শাসনের নমুনা হিসেবে বর্ণনা করেছে বিরোধী দল।
সোমবার প্রতিবাদকারীরা আবারও তাকসিম স্কয়ারে ফিরে আসে। বিক্ষোভের মাত্রা এদিনও তীব্র রূপ পায়।
বসফরাস প্রণালীর পাড়ের এই এলাকাটির প্রবেশ পথগুলোতে সড়ক অবরোধ বসায় প্রতিবাদকারীরা। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বামপন্থী গোষ্ঠীগুলো লাল ও কালো পতাকা উড়িয়ে এবং ব্যানার প্রদর্শন করে এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি করে। ‘যা কিছু ঘটুক’, তারা ফিরে যাবে না বলে ঘোষণা করে।
ওদিকে, রাজধানী আঙ্কারায় বিক্ষোভকারীদের হঠাতে কাঁদুনে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়া এসব বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই তরুণ বয়সী।
তারা কিজিলে সরকারি আবাসিক এলাকায় প্রবেশ পথে বিভিন্ন প্রতিরোধক দিয়ে সড়ক অবরোধ করে এবং রাস্তায় আগুন ধরায়। এ সময় এলাকাটির ওপর দিয়ে একটি হেলিকপ্টারকে চক্কর দিতে দেখা যায়।
প্রতিবাদটিকে ধর্মনিরপেক্ষ শত্রুদের কাজ বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি প্রত্যা্খ্যান করেন মরক্কো সফররত তুর্কি প্রধানমন্ত্রী। কয়েকদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।