আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোটবেলার কক্সবাজার ভ্রমন আর ছবি তোলার যন্ত্রনা

https://www.facebook.com/tanvir.mh ক্লাস ৯ এ পড়ি। স্কুল থেকে কক্সবাজার যাবো। ছবি তোলার প্রতি তখন তেমন কোন আগ্রহ নেই। কিন্তু এক দোস্তর কারণে আমরা শেয়ারে একটা ক্যামেরা ভাড়া নিলাম। সাথে একটা কোডাক এর ফিল্ম কিনলাম(রিল বলতো না ফিল্ম বলতো ঠিক মনে নেই)।

সেটাও শেয়ারে। জনপ্রতি ১৮ টা ১৮ টা করে ছবি তোলার অলিখিত চুক্তি হল। সমুদ্র সৈকতে সকালে একদম ইলিয়াস কাঞ্চন টাইপ ড্রেস পরে গেলাম। টাইট জিন্স,লাল শার্ট,হেভভি জুতা। পানিতে নামার কোন প্ল্যানই নেই।

বাড়ি থেকে “আল্লার কসম” কেটে আসতে হয়েছে যে পানিতে নামতে পারবনা। কিন্তু সমুদ্র দেখে নামতেই হল। নামার আগে সোজা হয়ে দাড়িয়ে কয়েকটা ছবি নিলাম। ঢেউ আসার সাথে সাথেই ছবি গুলি উঠলো বুঝা গেলো। সারাদিন অনেক ছবি তুলমাম।

হিমছড়িতে গিয়ে হাতে সূর্য রেখেও ছবি তুললাম। গ্রুপ ছবি তুলার থেকে নিজের ছবি তুলার উপরে জোর দিলাম। কারন আমার টাকা দিয়া ফিল্ম কেনা,আরেকজনের ছবি কেন তুলবো!! পরদিন সকালে বন্ধু সুলভ বড়ভাই রুবেল ভাই (আসিরন নামেই পরিচিত) আমাকে প্ররোচিত করে কক্সবাজার এয়ারপোর্টে নিয়ে গেলেন। আমরা যে হোটেলে ছিলাম তার সামনেই এয়ারপোর্ট। ভাঙ্গা দেয়াল এর নিচ দিয়ে গিয়ে একদম রানওয়েতে চলে গেলাম।

বিমানের সামনে বসে ছবি তুলতে লাগলাম। এই প্রথম কাছ থেকে বিমান দেখা। খুবই উত্তেজিত অবস্থায় ছবি তুলতেছি। হটাত চারদিকে থেকে দৌড়ে নিরাপত্তা কর্মী চলে আসলো। আমাদের উপর খুব ক্ষ্যাপে গেলো তারা।

পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার প্ল্যান তাদের। কিন্তু রুবেল ভাই এর আকুতি মিনতিতে অবশেষে ছাড়া পেলাম। কিন্তু ক্যামেরার ফিল্মটা খুলে ফেললো। একবার খুলে ফেললেই তখন সব ছবি নষ্ট হয়ে যেতো। তখন আমি এতটা কষ্ট পাইনি।

কিন্তু কষ্ট হচ্ছিল আমার পার্টনারের জন্য। তার ছবিগুলিও যে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সমুদ্র সৈকতের আর কোন স্মৃতি নেই। ছবি তোলার আমার আর ইচ্ছেও নেই। তবু সাগরে ভাসমান ক্যামেরাম্যানদের দিয়ে কিছু ছবি তোলালাম।

প্রতি ছবি ২৫ টাকার মত করে দাম। সে নিজে হোটেলে দিয়ে আসবে। কিন্তু সারাদিন ঘুরে সব টাকা খরচ করে ফেললাম। রাতে হোটেলে গিয়ে দেখি ক্যামেরাম্যান উপস্থিত। তার কাছ থেকে নিজেকে বারবার লুকিয়ে রাখছি।

কারণ ১০০ টাকা তাকে দেয়ার মত অবস্থা ছিলোনা। সে যেখানে যায়,আমরা পালিয়ে থাকি। অবশেষে স্যারদের কাছে বিচার দেয়ার কারণে টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে অনেক বিরক্তি নিয়ে ছবিগুলি নিতে হয়। ৪টি ছবি ছিল কিন্তু এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র একটি। তাও এমন এক ছবি যেটাকে মনে হবে আমি পদ্মা নদীর তীরে দাড়িয়ে আছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।