এই ঘটনা ঘটলে তা কি ভালো হইবো?
হলমার্ক ও ডেসটিনির সম্পদ বাজেয়াপ্ত হতে পারে
আদালতে যাচ্ছে দুদক
হকিকত জাহান হকি
বহুল আলোচিত হলমার্ক ও ডেসটিনির স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদ সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে শিগগির আদালতে আবেদন জানাবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দিতে এই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ওই আবেদন পেশ করা হবে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান দুটির দখলে থাকা বাড়ি, গাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক-ব্যালান্স সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হবে।
অর্থ আত্মসাৎ মামলায় প্রতিষ্ঠান দুটির কর্তাব্যক্তিদের কেউ কেউ গ্রেফতার হওয়া এবং অনেকে পলাতক থাকায় হলমার্ক ও ডেসটিনির কার্যক্রম এখন কার্যত বন্ধ রয়েছে।
এ অবস্থায় ঢাকাসহ সারাদেশে
তাদের সম্পদ চুরি, লুট বা খোয়া যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ ওই সব সম্পদ বিক্রি করেই আত্মসাৎকৃত জনগণের টাকা ফেরত দিতে হবে।
দুদক জানায়, ওই দুটি প্রতিষ্ঠান প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে, যা জনগণের অর্থ। দুর্নীতির টাকায় অর্জিত সম্পদ বিক্রি করে জনগণের ওই সব টাকা ফেরত দেওয়ার আইনগত বিধান রয়েছে। আইনগত সে প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ব্যবস্থাপক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এ লক্ষ্যে হলমার্ক ও ডেসটিনির সম্পদের হিসাব নির্ণয়ের কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট দুটি তদন্ত কমিটি। ওই প্রতিষ্ঠান দুটির মূল সম্পদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের গাড়ির হিসাব নির্ণয়ের জন্য এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে।
সূত্র জানায়, এর আগেও দুদক তদন্ত পর্যায়ে আদালতের আদেশ অনুযায়ী অভিযুক্তদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে।
পাচার, রূপান্তর ও স্থানান্তর করে পাঁচ হাজার ৯৭১ কোটি ৩৯ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হলমার্ক ও ডেসটিনির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মোট ১৩টি মামলা করেছে দুদক।
একই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আরও মামলা করা হবে। জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া হলমার্ক ও ডেসটিনির মূল আসামিরা এরই মধ্যে অর্থ আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, হলমার্ক কর্তৃক আত্মসাৎকৃত মোট দুই হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার মধ্যে প্রথমে এক হাজার ৫৬৮ কোটি (ফান্ডেড) টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখার ডিজিএম একেএম আজিজুর রহমানসহ ২৭ জনকে আসামি করে ১১টি মামলা করেছে দুদক। এরপর নন-ফান্ডেড প্রায় এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করে হলমার্কের বিরুদ্ধে আরও মামলা করা হবে।
অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে দেশের সাধারণ জনগণের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা পাচার/স্থানান্তর/রূপান্তর (মানি লন্ডারিং) করে আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান ও ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আলাদাভাবে দুটি মামলা করেছে দুদক।
দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান এরই মধ্যে সমকালকে বলেছেন, আইন অনুযায়ী আদালতের মাধ্যমে অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত ও ব্যাংক তথা জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে সে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, টাকা উদ্ধার ও অপরাধের শাস্তি আলাদা বিষয়।
এই প্রতিবেদনের সূত্র জানতে ক্লিক করুন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।