আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (১৫)

[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ।

জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে।

ইনশাআল্লাহ। ১৫তম পর্ব “তবে মদীনা মুনাওওয়ারা লুণ্ঠনের আদেশ দেয়াটা ভুল ছিলনা। কারণ, মদীনাবাসীরা ছিল অবাধ্য এবং তারা নিয়ম শৃঙ্খলার বাইরে চলে গিয়েছিল। ” এটাও মিথ্যা বক্তব্য। সঠিক হলো, “মদীনাবাসীদের প্রতি জুলূম করার কারণে তাঁরা বিরোধিতা করেছিলেন।

কাজেই, মদীনা শরীফের অধিবাসীদেরকে অবাধ্য তথা খারাপ বলে অভিহিত করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। আর ওয়ালীদ অবশ্যই পাপী ছিল। খলীফাকে অনুসরণ করা ওয়াজিব তবে তাঁর নির্দেশগুলো শরীয়ত মুতাবিক হতে হবে। আমি আমার শিক্ষক আহমেদ আফিন্দিকেও একই প্রশ্ন করেছিলাম কিছুটা ভিন্নতাসহ প্রায় এই উত্তর পেয়েছিলাম। আমি সচিবকে প্রশ্ন করলাম, “এই জাতীয় মডেল লোক তৈরীর কারণটা কি?” তিনি বললেন, “এ পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা অটোম্যান সম্রাট এবং মুসলিম আলিমদের মানসিক অবস্থার মূল্যায়ন করছি।

হোক সে সুন্নী অথবা শিয়া। তাঁদের সাথে পাল্লা দেয়া যায় এমন একটা পথ খুঁজছি আমরা। উদাহণস্বরূপ, তুমি যদি জানতে পারো তোমার শত্রু কোনদিক থেকে আসছে তবে তুমি সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পার। তুমি উপযুক্তস্থানে সৈন্য বসিয়ে রাখবে এবং শত্রুকে সমূলে শেষ করবে। অন্যদিকে তুমি যদি বুঝতেই না পারো কোনদিক থেকে শত্রু আসছে তাহলে কি করবে? সৈন্যদের বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখবে এবং পরাজয় বরণ করতে হবে।

ঠিক একইভাবে তুমি যদি জানতে পারো কোন দলীলের জোরে মুসলমানগণ তাদের বিশ্বাস ধরে রাখে, মাযহাবের সত্যতা প্রমাণ করতে চায়, তাহলেই তোমার পক্ষে সম্ভব হবে বিকল্প সাহায্য প্রমাণ যোগাড় করা যার ভিত্তিতে তাদের বিশ্বাস ভাঙ্গতে সক্ষম হবে এবং তাদের বিশ্বাসের মূলে আঘাত হানতে পারবে। অতঃপর তিনি আমাকে একহাজার পৃষ্ঠার একটি বই দিলেন। তাতে উল্লিখিত পাঁচজন মডেলের পর্যবেক্ষণ প্রসূত ফলাফল লিপিবদ্ধ করা আছে যা তারা মিলিটারি, আর্থিক, শিক্ষা এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালনার মাধ্যমে অর্জন করেছে। সচিব বললেন, বইটি পড়বে এবং পড়ে ফেরত দেবে। আমি বইটি আমার সাথে বাড়ী নিয়ে গেলাম এবং আমার তিন সপ্তাহের ছুটিতে আদ্যোপান্ত শেষ করলাম।

সত্যিই বইটি ছিলো বেশ চমৎকার। যে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর এবং সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ বইটিতে রয়েছে তা প্রায় সবই সত্য। আমার মনে হলো, বইটিতে প্রতিনিধিত্ত্বকারী পাঁচজনের যে সব জবাব রয়েছে আসল ব্যক্তিগণের যা জবাব দেয়ার কথা তার ৭৫% হুবহু মিলে যায়। বস্তুত সচিব ঠিক বলেছিলেন যে, উত্তরসমূহ প্রায় ৭০% সঠিক। বইটি পড়ে আমার নিজের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হলো এবং আমি নিশ্চিতভাবে জানলাম যে, একশ বছরের মধ্যে অটোম্যান সম্রাজ্য ধ্বংসের যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তার চেয়েও কম সময় লাগবে।

সচিব এও বললেন, অনুরূপ অন্যান্য কক্ষগুলোতে একই ধরণের আরও টেবিল, যেসব দেশে আমরা উপনিবেশ বানিয়েছি এবং যে সকল দেশে উপনিবেশ বানাবো তাদের উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে। যখন আমি সচিবকে প্রশ্ন করলাম, কোথা থেকে এসকল বুদ্ধিমান এবং চৌকস লোকের যোগাঢ় হলো? তিনি বললেন, সারা পৃথিবী ব্যাপী নিয়োজিত আমাদের এজেন্টরা ক্রমাগত এ ধরনের বুদ্ধিমানদের তথ্য যোগান দিয়ে যাচ্ছে। তুমি তো দেখতেই পাচ্ছো, এসকল প্রতিনিধিরা তাদের কাজে কতটা অভিজ্ঞ। স্বাভাবিকভাবেই তোমাকেও যদি কোন নির্ধারিত লোক দিয়ে নির্দিষ্ট তথ্যাদি সরবরাহ করা হয়, তুমিও সেই ব্যক্তির মত চিন্তা করতে পারবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তখন তুমি হবে তার বিকল্প ব্যক্তি।

সচিব বলতে থাকলেন, দেখ- এটা হচ্ছে প্রথম গোপনীয় বিষয় যা তোমাকে দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় আমাকে নির্দেশ করেছে। দ্বিতীয় গোপন বিষয়টি আমি তোমাকে বলবো এক মাস পর। যখন তুমি এক হাজার পৃষ্ঠার বইটি ফেরত দেবে। গভীর মনোযোগ দিয়ে বইটির শুরু থেকে শষ পর্যন্ত পড়লাম। এতে করে মুসলমানদের সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য পেলাম।

আমি এখন জানতে পারলাম, কিভাবে মুসলমানরা ভাবে, তাদের কোথায় দুর্বলতা, কি তাদের শক্তিশালী করেছে এবং কি করে তাদের এই শক্তিকে খর্ব করা যায়। বইটিতে মুসলমানের দুর্বলতাগুলো লেখা ছিলো তা নিম্নরূপঃ এক. শিয়া-সুন্নীতে মতভেদ। জনগণ ও প্রশাসনের মতবিরোধ। তুর্কী ও ইরানীদের কলহ। উপজাতীয় সংঘাত।

আলিম সমাজ এবং রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য। (এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অপবাদ। প্রথম অট্যোমান পাদিশাহ ওসমান গাজীর লিখিত অসিয়তনামা দ্বারা এটা ব্যাপকভাবে প্রমাণিত হয় যে, অটোম্যান প্রশাসন আলিমদের খুব মর্যাদা ও সম্মান প্রদর্শন করতো। সব বাদশাহ্ই আলিমদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান মঞ্জুর করেছিলেন। মাওলানা খালিদ বাগদাদীর ঈর্ষাকাতর বিরুদ্ধবাদীরা যখন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দ্বিতীয় মাহমুদ খানের কাছে তার মৃত্যুৃদ- দাবী করে তখন সুলতান জবাবে যে বিখ্যাত উক্তি করেন তা হলো, আলিমরা রাষ্ট্রের জন্য কখনই ক্ষতিকর নন।

অটোম্যান সুলতানরা প্রত্যেক আলেমের জন্য মোটা বেতন, বাসস্থান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছিলেন। ) দুই. কয়েকজন ব্যতিক্রম ছাড়া মুসলমানদের বেশিরভাগ লোক অজ্ঞ এবং অশিক্ষিত। (ধর্ম, নীতিশাস্ত্র এবং বিজ্ঞানের উপর অটোম্যান আলিমদের লেখা হাজার হাজার বই পুস্তক রয়েছে। সে সকল বই দুনিয়া জুড়ে পরিচিত। গেঁয়ো লোক, যাদের বেশীর ভাগ মূর্খ তারাও তাদের বিশ্বাস, ইবাদত ও পেশা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছিলো।

সব গ্রামে ছিল মসজিদ, স্কুল ও মাদ্রাসা। গ্রামের লোকেরা কিভাবে পড়তে, লিখতে হয় জানতে পেরেছিলো। গ্রামের মেয়েরাও জানতো কিভাবে কুরআনুল কারীম পাঠ করতে হয়। বেশীরভাব আলিমগণ গ্রাম থেকেই শিক্ষা লাভ করেছিলেন। ) তিন. আধ্যাতিকতা, জ্ঞান এবং সচেতনার অভাব।

(অটোম্যান মুসলমানগণ আধ্যাতিকতার দিক থেকে ছিল দৃঢ়। লোকজন শহীদ হবার জন্য জিহাদে ছুটে যেতো। প্রত্যেক পাঁচ ওয়াক্তের নামাযের শেষে, প্রত্যেক শুক্রবারের খুৎবার সময় ধর্মপ্রাণ লোকেরা রাষ্ট্র ও খলীফার প্রতি দোয়া-খায়ের জানাতো এবং গোটা সমাবেশ থেকে উচ্চারিত হতো ‘আমীন। ’ অপরদিকে খ্রীষ্টান বসবাসরত গ্রামগুলোতে লোকজন ছিলো বেশীর ভাগ মূর্খ। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং দুনিয়াবী জ্ঞানে ছিল প্রায় অসচেতন।

তাদের পুরোহিতরা যা বলতো তাই পরম বাক্য বলে মেনে নিতো। এবং মিথ্যা কুসংস্কারের নামে যা অতিরঞ্জন ছিলো তাই তারা মানতো। এটা ছিলো অনেকটা অবোধ পশুর পালের মতো। ) চার. পার্থিব ব্যাপারে উদাসীন এবং পারলৌকিক বিষয় নিয়ে মগ্ন। (ইসলাম কখনও ধর্মকে দুনিয়া থেকে আলাদা করে রাখেনা।

দুনিয়া করাটাও ইবাদত। আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “এমনভাবে দুনিয়া করো যেন, তুমি কখনও মরবেনা। আবার আখিরাতের জন্য এমনভাবে কাজ করবে যেন তুমি কালই মারা যাচ্ছে। ”) পাঁচ. সম্রাটরা নির্দয় ও স্বৈরাচারী। (শাসকগণ শরীয়ত পালনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন।

ইউরোপীয় শাসকদের মত কখনই অত্যাচারী ছিলেন না। ) ছয়. রাস্তাঘাট নিরাপদ নয়। যানবাহন ব্যবস্থা ও চলাচল কষ্টকর। (রাস্তাঘাট এমন নিরাপদ ছিলো যে, বসনিয়া থেকে মক্কা শরীফ পর্যন্ত যে কেউ অনায়াসে চলাচল করতে পারতো। পথে কোন গ্রামে বিনা পয়সায় থাকা খাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করতে পারতো।

গ্রামবাসীরা অধিকাংশ সময় উপহার প্রদান করতো। ) সাত. কলেরা, প্লেগ প্রভৃতি মহামারীর ব্যাপারে কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়না। এসব রোগে প্রতি বছর হাজার হাজার লোক মারা যায়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অস্বীকৃত। (হাসপাতাল এবং আশ্রয় কেন্দ্র ছিলো।

নেপোলিয়নও অট্যোমানদের চিকিৎসা গ্রহণ করেছিলো। সব মুসলমান এই হাদীছ শরীফের অনুগত “যার ঈমান আছে, সেই পরিচ্ছন্ন। ”) আট. শহরগুলো প্রায় ধ্বংসের পথে। পানি সরবরাহের কোন ব্যবস্থা নেই। (এই মিথ্যাচারের কোন জবাব নেই।

দিল্লীর ফিরোজ শাহ ১৩৮৮ খ্রীস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। তার নির্দেশে নির্মিত হয় ২৪০ কি.মি. দীর্ঘ এক খাল। এই সেঁচের ফলে সজিব থাকতো ফলের বাগান। ইংরেজরা এলে তা বিরাণভূমিতে পরিণত হয়। ) নয়. বিদ্রোহী দমনে প্রশাসন অক্ষম এবং সর্বত্র আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি।

এবং যে কুরআন শরীফ নিয়ে তারা গর্ব করে বাস্তবে তার ওপর তাদের আমল নেই। (তারা নিশ্চয়ই সেই সব জেনারেল যারা মৎস ধরার বিরাট জালে বিষ্ঠা নিক্ষেপের জন্য পুরুস্কৃত হয়েছিলো। তাদের সাথে অট্যোমানদের গুলিয়ে ফেলেছে। ) দশ. অর্থনৈতিক অবস্থা করুণ, দারিদ্রও অভাব সর্বত্র। এগারো. কোন সুসজ্জিত সৈন্যবাহিনী নেই।

নেই পরিমাণগত অস্ত্র-শস্ত্র। যাও আছে তা পুরনো ও সেকেলে। [তারা উরহান গাজীর প্রতিষ্ঠিত সুশৃঙ্খল বাহিনী সম্বন্ধে বেখবর। উরহান গাজী হিজরী ৭২৬ সাল অনুযায়ী ১৩২৬ সালে অট্যোমান সিংহাসনে আসীন হন। তারা ইনাদিরীম (বজ্র) বায়জিদ খানের দুর্ধর্ষ বাহিনীর খবরও রাখেনা।

যারা ৭৯৯ হিজরী মোতাবেক ১৩৯৯ সালে নিদাবুনুতে ক্রুসেডারদের বিরাট সৈন্যদলকে পরাজিত করেছিলো। ]- গ্রন্থকার। বারো. নারীর অধিকার লংঘন প্রায় সর্বত্র। (এক সময় ব্রিটিশরাই নারীর অধিকার শিল্পকলা ও অস্ত্রবিদ্যা সম্পর্কে উদাসীন ছিলো। অট্যোমানরা এ সম্পর্কিত ধারনা প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

) তেরো. পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতাবোধের অভাব। (রাস্তাঘাট ছিল ভীষণ পরিস্কার। বস্তুত: রাস্তা থেকে থুথু পরিস্কারের জন্যও স্বাস্থ্যসেবা খাতে অর্থ বরাদ্দ রাখা হতো। ) মুসলমানদের দূর্বল জায়গাগুলোর বর্ণনার পর বইটিতে উপদেশ দেয়া হয়েছে কি করে মুসলমানদের বিশ্বাস, ইসলাম এবং জাগতিক এবং পারলৌকিক ক্ষেত্রে সে শ্রেষ্ঠত্ব তা কি করতে বিস্মিৃত ঘটানো যায়। অতঃপর সেখানে ইসলাম সম্পর্কে নীচের তথ্যগুলো পরিবেশন করেছে- ১. ইসলাম একতা এবং সমঝোতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে এবং বিভেধ সৃষ্টি করতে নিষেধ করেছে।

কুরআনুল কারীমে উল্লেখ করা হয়েছে “সমবেতভাবে আল্লাহর রুজ্জুকে শক্ত করে ধর। ” ২। ইসলাম আদেশ করে শিক্ষিত এবং সচেতন হতে। কুরআনুল কারীমে বর্ণিত আছে, “পৃথিবীতে ভ্রমণ কর। ” ৩।

ইসলাম জ্ঞান আহরণের নির্দেশ দেয়। হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে, “প্রত্যেক মুসলমান নর এবং নারীর জন্য ইলম হাছিল করা ফরজ। ” ৪। ইসলাম দুনিয়াতে কাজ করতে তাগিদ দেয়। কুরআন মজিদে বর্ণনা করা আছে “হে আল্লাহ পাক আমাদের দান করুন পৃথিবীতে যা কিছু আছে সুন্দর এবং পরকালেও।

” ৫। ইসলাম পরামর্শ করতে বলে। কুরআন মজিদে উল্লেখ আছে “পরস্পরের পরামর্শক্রমে তাদের কার্যক্রম সম্পাদিত হয়। ” ৬। ইসলাম রাস্তাঘাট নির্মানের আদেশ দেয়।

কুরআন মজিদে উল্লেখ আছে, “দুনিয়াতে চলাচল কর। ” ৭। ইসলাম আদেশ দেয় তাদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে। হাদীছ শরীফে বলা আছে, “জ্ঞান চারটি অংশ নিয়ে গঠিত। ” ক. আক্বীদা সংরক্ষণের জন্য ফিক্বাহর জ্ঞান।

খ. স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ওষুধ সম্পর্কিত জ্ঞান। গ. ভাষাজ্ঞানের জন্য নাহু, সরফ, সম্পর্কিত জ্ঞান। ঘ. সময় সম্পর্কিত জ্ঞানের জন্য জ্যোর্তিবিজ্ঞানের জ্ঞান। ৮। ইসলাম উন্নয়নে বিশ্বাস করে।

কুরআনুল কারীমে উল্লেখ আছে, “পৃথিবীর সব কিছু আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। ” ৯। ইসলামে নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ আছে। কালামুল্লাহ শরীফে বর্ণিত আছে “প্রত্যেকটি জিনিষ হিসাব এবং নিয়ম ভিত্তিক। ” ১০।

ইসলাম অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবার জন্য নির্দেশ প্রদান করে। হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে “পৃথিবীতে এমনভাবে কাজ কর যেন তুমি কোনদিন মারা যাবে না। আবার আখিরাতের জন্য এমনভাবে কাজ কর যেন তুমি আগামীকাল মারা যাবে। ” ১১। ইসলাম নির্দেশ দেয় আধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত সামরিক বাহিনী তৈরির।

কুরআন মজিদে উল্লেখ আছে, “তাদের বিরুদ্ধে যত পারুন সৈন্য ও শক্তি সঞ্চয় করুন। ” ১২। ইসলাম মহিলাদের অধিকার এবং তাদের সম্মান রক্ষা করতে বলে। কুরআনুল কারীমে আদেশ করা হয়েছে “পুরুষের মহিলাদের উপর অধিকার দেয়া হয়েছে সুতরাং মহিলাদেরও তাদের উপর অধিকার আছে। ১৩।

ইসলাম পরিচ্ছন্নতার নির্দেশ দেয়। হাদীছ শরীফে আছে “পরিচ্ছন্নতা ঈমান থেকে। ” বইটিতে নিম্নবর্ণিত শক্তির উৎসসমূহকে মর্যাদাশূণ্য এবং দূর্বল করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ১। ইসলামে ভাষা, বর্ণ, গোত্র, ঐতিহ্য ও প্রথাগত ও জাতিগত গোড়ামীর স্বীকৃতি দেয়নি।

২। সূদ, মুনাফাখোরী, ব্যাভিচার, মদপান এবং শূকোরের গোশ্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৩। মুসলিমগণ তাদের আলিম উলামাদের প্রতি খুব মনোযোগী এবং অনুগত। ৪।

প্রত্যেক সুন্নী মুসলিম খলীফাকে নবীর প্রতিনিধি মনে করেন। সুতরাং আল্লাহ ও রাসূলের মত খলীফাকে সম্মান প্রদর্শন করা তারা ফরজ মনে করেন। ৫। জিহাদ হচ্ছে ফরজ। ৬।

শিয়াদের মতে সকল বিধর্মী এবং সুন্নী মুসলমানরা হচ্ছে বিভ্রান্ত। ৭। সকল মুসলিম বিশ্বাস করে যে, ইসলাম হচ্ছে একমাত্র সত্য ধর্ম। ৮। সকল মুসলিম বিশ্বাস করে যে, আরব ভূখণ্ড থেকে ইহুদী এবং খ্রিষ্টানদের নির্বাসিত করা ফরয।

৯। মুসলমানরা তাদের ইবাদত বন্দেগী যেমন নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত খুব সুন্দরভাবে পালন করে। ১০। শিয়া মুসলমানরা বিশ্বাস করে মুসলমান দেশসমূহে গির্জা স্থাপন করা হারাম। ১১।

মুসলিমগণ ইসলামের নিয়ম-কানুনসমূহ দৃঢ়ভাবে ধারণ করে। ১২। শিয়া মুসলমানরা মনে করে হুমুছ বা যুদ্ধে পাওয়া গণিমতের মালের এক পঞ্চমাংশ উলামাদের প্রদান করা ফরজ। ১৩। মুসলমানগণ তাদের সন্তানদের এমন শিক্ষা দিয়ে তৈরি করে যাতে তারা তাদের পূর্ব পুরুষের পথ পরিহার না করে।

১৪। মুসলমান মহিলারা নিজেদের এমনভাবে আবৃত করে যেন কোন দুবৃত্ত মহিলাদের উপর আছর করতে না পারে। ১৫। মুসলমানরা জামায়াতে নামায আদায় করে যা তাদেরকে পাঁচবার একত্র করে। ১৬।

নবীর রওজা শরীফ, আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মাযার শরীফ এবং অন্যান্য বুযুর্গ ব্যক্তিদের মাযার শরীফকে পবিত্র মনে করে, ফলে সে সব স্থানে তারা জামায়েত হয়। ১৭। নবীর বংশধরগণ যারা সৈয়দ এবং শরীফ নামে পরিচিত তারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্মৃতি ধরে আছেন এবং মুসলমানদের চোখে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্মৃতিকে উজ্জ্বল রেখেছেন। ১৮। মুসলমানরা যখন কোন মাহফিলে একত্রিত হয়, ওয়ায়েজগণ মুসলমানদের ঈমান দৃঢ় করেন এবং ভাল কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।

১৯। আমর বিল মারূপ (সৎ কাজের আদেশ) এবং নাহি আনিল মুনকার (অসৎ কাজের নিষেধ) পালন করা ফরজ। ২০। মুসলমানদের সংখ্যাধিক্য বাড়াবার জন্য একের অধিক বিবাহ করা সুন্নাহ (শর্ত সাপেক্ষে)। ২১।

একজন মানুষকে হিদায়েতের পথে নিয়ে আসা সমস্ত পৃথিবী পাওয়ার চেয়ে উত্তম। ২২। সকল মুসলমানদের জানা আছে যে, কেউ যদিকোন কল্যাণকর পথ দেখায় তবে সেই পথ অনুসরন করে যারা সওয়াব অর্জন করবে, সেই ব্যক্তিত্ব সেই সওয়াবের ভাগী হবেন। ২৩। মুসলমানগণ কুরআন ও হাদীছকে গভীর শ্রদ্ধা সহকারে ধারণ ও অনুসরণ করে।

তারা বিশ্বাস করে এই দুই উৎসের অনুসরণই বেহেশ্ত পাবার পথ। (ইনশাআল্লাহ চলবে) এথান থেকে পরুন পর্ব- এক এথান থেকে পরুন পর্ব- দুই এথান থেকে পরুন পর্ব- তিন এথান থেকে পরুন পর্ব- চার এথান থেকে পরুন পর্ব- পাঁচ এথান থেকে পরুন পর্ব- ছয় এথান থেকে পরুন পর্ব- সাত এথান থেকে পরুন পর্ব- আট এথান থেকে পরুন পর্ব- নয় এথান থেকে পরুন পর্ব- দশ এথান থেকে পরুন পর্ব- এগার এথান থেকে পরুন পর্ব- বারো এথান থেকে পরুন পর্ব- তেরো এথান থেকে পরুন পর্ব- চোদ্দ  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.