[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ।
জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে।
ইনশাআল্লাহ।
১১তম পর্ব
আমি তাদের একজনকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করলে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে সম্মতি প্রকাশ করে। আমি তার নাম দিলাম ‘সাফিয়া। ’ আমি নজদের মুহম্মদকে সাফিয়ার বাসায় নিয়ে গেলাম। সে তখন বাসায় একা ছিলো।
আমরা এক সপ্তাহের জন্য নজদের মুহম্মদের সাথে বিবাহ্ চুক্তি করলাম এবং সে সাফিয়াকে মোহরানা বাবদ কিছু স্বর্ণ প্রদান করলো। এভাবে নজদের মুহম্মদকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিলাম। সাফিয়া ভেতরে থাকে এবং আমি বাইরে থাকি।
নজদের মুহম্মদ এখন পুরোপুরিভাবে সাফিয়ার হাতের মুঠোয় চলে গেলো এবং ইজতিহাদ ও স্বাধীন মতাদর্শের নামে শরীয়তের হুকুম-আহকাম অমান্য করার স্বাদ উপভোগ করলো। তার মুতা বিবাহের তৃতীয় দিনে ‘শরাব হারাম নয়’ এ বিষয়ে নজদের মুহম্মদের সাথে খুব লম্বা একটা বিতর্ক হয়ে গেলো।
যদিও সে অনেক আয়াত শরীফ এবং হাদীছ শরীফের উদ্বৃতি দিলো যাতে প্রমাণ হয় শরাব পান করা হারাম কিন্তু সবগুলোই খণ্ডন করলাম এবং পরিশেষে বললাম, ‘এটা সত্য যে ইয়াজিদ, উমাইয়া এবং আব্বাসীয় খলীফারা শরাব পান করেছেন। ’
তারা সবাই ভুল করেছেন আর শুধু আপনিই সঠিক তাতো নয়? নিঃসন্দেহে তারা আপনার চাইতে বেশী কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ জানতেন। তারা কুরআন ও সুন্নাহ্র আলোকেই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, শরাব পান করা মাকরূহ, হারাম নয়। যদিও ইহুদী ও খ্রিস্টানদের কিতাবে লেখা আছে শরাব পান করা মুবাহ্। সব ধর্মইতো আল্লাহ পাক-এর আদেশ।
বস্তুত: এমন বর্ণনাও আছে যে, এ সংক্রান্ত আয়াত শরীফ নাযিল হবার আগ পর্যন্ত হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শরাব পান করেছেন। শরাব হারাম হলে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিশ্চয়ই তাঁকে ছেড়ে দিতেন না। যেহেতু তিনি কোন শাস্তি পাননি, ধরে নেয়া যেতে পারে শরাব হারাম নয়।
[ সত্য হচ্ছে, শরাব হারাম হওয়ার আগ পর্যন্ত হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যদিও তা কিছু পান করে থাকেন না কেন কিন্তু শরাব নিষিদ্ধ হওয়ার পর আর কোনদিনই শরাব পান করেননি। উল্লেখ্য, ওহী নাযিল হওয়ার পূর্বে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাহাকেও কোন বিষয় আদেশ-নিষেধ করতেন না।
পরবর্তীতে যদিও কয়েকজন উমাইয়া এবং আব্বাসীয় খলীফা শরাব পান করেও থাকেন তাতে এটা প্রমাণিত হয় না যে, এলকোহল সহযোগে পানীয় গ্রহণ করা মাকরূহ্ বরং এটাই প্রমাণ করে যে, তারা ছিলো এ ব্যাপারে গুণাহ্গার। কেননা তারা হারাম কাজ করেছিলো। হেমপার কর্তৃক উদ্ধৃত আয়াত শরীফ এবং অন্যান্য আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, শরাব পান করা হারাম। “রিয়াদ-উন-নাসিহীন” কিতাবে বলা হয়েছে, প্রথমদিকে শরাব পান করার ব্যাপারে আদেশ বা নিষেধ কোনটাই ছিলো না। কিন্তু পরবর্তীতে সূরা বাক্বারা-এর ২১৯ নং আয়াত শরীফ নাযিল হলে সেখানে মাদকাসক্ত অবস্থায় নামাযের নিকটবর্তী হতে নিষেধাজ্ঞা আসে।
পরিশেষে, সূরা মায়েদা-এর ৯৩ নং আয়াত শরীফের মাধ্যমে শরাবকে একেবারে হারাম করে দেয়া হয়। হাদীছ শরীফেও নিম্নরূপ বলা হয়েছে, ‘যা বেশী পরিমাণ গ্রহণ করলে নেশাগ্রস্ত করবে তা অল্প পরিমাণ গ্রহণ করাও হারাম। শরাব পান করা নিকৃষ্ট পর্যায়ের গুনাহ্। আর যারা শরাব পান করে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ত্ব করো না। তাদের জানাযায় যেও না।
তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করো না। শরাব পান করা মূর্তিপুজার সমতুল্য। যারা শরাব পান করে, বিক্রি করে এবং সরবরাহ করে তাদের উপর আল্লাহ পাক-এর লা’নত। ] - গ্রন্থকার।
নজদের মুহম্মদ বললো, কিছু কিছু বর্ণনাতে পাওয়া যায়, হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পানি মিশিয়ে এলকোহলীক পানীয় গ্রহণ করতেন এবং বলতেন পান করলে নেশাগ্রস্ত না হলে শরাব পান করা হারাম নয়।
হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ধারণাটা সঠিক।
[ তার এ বক্তব্য হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর প্রতি মিথ্যা তোহমতের শামিল। মূলত: সে নিজেই শরাব পান করতো তা প্রমাণ করার জন্যই এরূপ বক্তব্য প্রদান করেছে। ] কেননা, কুরআন শরীফে উল্লেখ রয়েছে, শরাব পান এবং জুয়ার মাধ্যমে শয়তান তোমাদের মধ্যে শত্রুতা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে, এবং আল্লাহ পাক-এর যিকির এবং নামায থেকে বিরত রাখে। তোমরা এসব থেকে বিরত থাকবে কি? অর্থাৎ বিরত থাক।
(সূরা মায়েদা-৯১) “এই আয়াত শরীফে বর্ণিত গুনাহসমূহের মত এলকোহল জাতীয় পানীয় গুনাহর কারণ নয় যতক্ষণ না তাতে নেশার সৃষ্টি হয়। ফলে শরাব পানে নেশা না হলে, মদ হারাম হবে কেন?”
(এটা হেমপারের নিজস্ব দুষ্টামী মন্তব্য) আমি শরাব সংক্রান্ত এ বিতর্কের কথা সাফিয়াকে জানালাম এবং নজদের মুহম্মদকে কড়া শরাব পান করানোর ব্যাপারে নির্দেশ দিলাম। পরে সাফিয়া আমাকে জানায়, ‘তোমার কথা মত আমি কাজ করেছি এবং তাকে প্রচুর শরাব পান করিয়েছি। সে বেশ নাচানাচি করেছে এবং রাতে কয়েক দফা সাক্ষাত হয়েছে। ’ সেই থেকে নজদের মুহম্মদ ও সাফিয়া আমার পুরো নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
এথান থেকে পরুন পর্ব- এক
এথান থেকে পরুন পর্ব- দুই
এথান থেকে পরুন পর্ব- তিন
এথান থেকে পরুন পর্ব- চার
এথান থেকে পরুন পর্ব- পাঁচ
এথান থেকে পরুন পর্ব- ছয়
এথান থেকে পরুন পর্ব- সাত
এথান থেকে পরুন পর্ব- আট
এথান থেকে পরুন পর্ব- নয়
এথান থেকে পরুন পর্ব- দশ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।