বেচেঁ থাকার স্বাদ নিচ্ছি...
এমন কোনো কাজ করিনা যে ব্যাংক এ গিয়ে প্রতিদিন হাজিরা দিতে হবে। প্রয়োজন পরলে টুকটাক যাই। অর্থনৈতিক লেনদেনগুলো ব্যাংক গিয়ে করার মতো এতো বড় অর্থ আমার সে সময় আসতনা । গুনে গুনে রিকাশাভাড়া, মোবাইল বিল, নেটের বিল, আর মাঝে মধ্যে বন্ধুবান্ধব মিলে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করার টাকাটা হলেই বাস! আলহামদুলিল্লাহ! আর কি চাই সুখেই তো আছি । তখন আমি পার্ট টাইম বেস একটা জব করতাম ।
অনেকই জানে আমার পরিচিত যারা । কম্পিউটার আই। ফুলটাইম মাস্টারি যাকে বলে। সোজা কথায় কম্পিউটার ট্রেইনর। কাজের খাতিরে নানা মানুষের সাথে পরিচয়।
সে সময় নারায়নগঞ্জে কোনো এক নাম করা ব্যাংক এর বেশ উপরের লেভেলের কর্মকর্তা আমার এখানে এসে কোর্স করতেন । এক বয়স্ক আংকেল টাইপের মানুষ। যথেষ্ঠ বিনয়ী আর ভদ্র । মাঝ মাঝেই এই সুসম্পর্কের খাতিরে তার ওখানে মানে তার ব্যাংক এ আমার যেতে হতো অনেকটা বাধ্য হয়েই । নানা রকম আইটি রিলেটেড সমস্যা নিয়ে উনি রেডি থাকতেন ।
একদিন গেলাম ঠিক দুপুরে । যেয়েই দেখি । এখন খাবার সময়। মোটামুটি খাওয়া দাওয়া করার জন্য এ টেবিল ও টেবিল এ প্রস্তুতি চলছে । আমি তার মাঝে আংকেল সাহেবে কাছে গেলাম ।
উনি মুচকি এক খানা হাসি দিয়ে বললেন । বাবাজি খাওয়া দাওয়া করবো এখন । আপনি বসেন, আমি আমার বেশিক্ষন লাগবেনা । আমি বললাম ঠিক আছে আংকেল জি আপনি সেরে আসেন । আমি একটু পুরো ব্যংক এর এদিক সেদিক টা একটু ঘুরে আসি।
আংকেল এর চিনি চাম্পা হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন খাওয়ার সময় উনার পাশে না থাকলেই বরং ভালো । আমি এক একটা ডেস্ক এর সামনে দিয়ে যাচ্ছি মোটোমুটি সবাই বেশ আয়েশ করে দুপুরে খাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এক এ্কটা টেবিল এ যেয়ে মানুষের খাবার এর মেনু গুলো চেক করা যেতে পারে সময় কেটে যাবে, যেই চিন্তা সেই কাজ...আমি প্রথম টেবিল এর ভদ্রলোকের তরকারি আর ভাতের মাখামাখি দেখে তো প্রায় খিদে লেগে গেলো তিনি খাচ্ছেন কুমরার একটা তরকারি, কুমরোর রঙে বাসন্তী রঙের হয়ে আছে তার প্লেট আর হাত খানা। মনে হচ্ছে বেশ আয়েশ করেই খাচ্ছেন, পরের টেবিল যেতে না যেতেই আমার বিষ্বয় বেরে দ্বীগুন হয়ে একি উনিও কুমরা…বাহ ভালো তো…মানে উনারো মেইন তরকারি কুমরা উনি এখনো মাখেন নি..তবে মাত্র শুরু করছেন। একটা একটা রুমের আর কয়জন কুমরার তরকারি খাচ্ছে তা দেখার কৌতুহল বেরে গেলো আমার, চলে গেলাম পরের রুমে। খাওয়া দাওয়া তো নয় এ যেনো প্রতিদিন কার উৎসব টাইম, মেনু দেখতে গেলাম কেউ কেউ আবার বসতেও বল্ল, আমি মনে মনে বলি খা বাবা তোর তরকারি আজ দেখতে আসছি।
আমার প্রথম দফা বিষ্বয় ভাব কাটতে না কাটতেই দেখি সবাই যার যার মেনু বের করছে…বেসির ভাগ ই কুমরার তরকারি, বুজলাম না আজকাল কি কুমরা সরকার ফ্রি দিচ্ছে নাকি, সবাই কুমরার তরকারি, মিস্টি কুমড়ার ছোট ছোট টুকরাকে ভাতের সাথে এমন ভাবে মেখে পুরো অন্চলটিকে বাসন্তী রঙের করে দিয়েছেন । কি আয়েশ করে এক এক জন খেয়ে যাচ্ছেন…মনে হচ্ছে কতো দিন কুমড়ার তরকারি খাই না
পরিশেষ : বাসায় ফিরছি আর ভাবছি একি দিনে সবাই এক মেনু হয় কি করে! অবশেষে আমার হাই প্রসেসর আর ফোর ফর্টি ভোল্টেজ এর মস্তিস্ক আমাকে সিগনাল দিয়ে বুঝালো আরে গাধা ব্যাংক এর এর কমন রান্ন এটা সবার জন্য হয় তাই সবার এক মেনু…কুমাড়ায় কুমারান্বীতো সবার খাবার প্লেট, বুঝতে পেরে নিজের বুদ্ধির প্রসংসা করেত করতে বাড়ি ফিরে দেখি আম্মা খাবার নিয়ে বসে আছে, বেশ ক্ষুদার্থ অবস্থায় ঝাপিয়ে পরলাম খাবার এর উপর, খাবার মেইন মেনু : কুমড়া (হ্যালো এটা ব্যাক এর কুমড়া না আমার হাতের রান্না)
শেষ হলো একটি কুমড়ান্বিতো দিন । নটে গাছটি মুরালো আমার কথা ফুরালো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।