কার্তিক মাস। জীবনানন্দের ভাষায় নবান্নের কার্তিক। বাংলার ১২ মাসের মধ্যে বর্ষা, শরত, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন এসব বাঘা বাঘা জনপ্রিয় মাসের ভিতরে কার্তিক বড় অবহেলিত। এর রুপ বোধকরি জীবনানন্দের পরে কেও আর তেমন বলে না।
বর্ষা অর্থ সারাদিন ঝম ঝম বৃষ্টি।
রোম্যান্টিক (পুতুপুতু প্রেম অর্থে নয়) মানুষের অনেক ভালোলাগার সময় বর্ষা। হুমায়ুন বা রবীন্দ্রনাথের বই পরে আমরা বর্ষার রূপ নতুন করে দেখতে শিখেছি। শীতকাল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঋতু, কারণটাও যৌক্তিক। কার্তিক হল বর্ষা আর শীতের মিলন ক্ষণ। বর্ষার পরেই আমার নিজের প্রিয় ঋতু হেমন্ত, বিশেষ করে কার্তিক মাস।
এই সময়ে বাংলাদেশের প্রকৃতিতে প্রগাড় সবুজ যেমন পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় শীতের মিষ্টি আমেজটি। গ্রীষ্মের মাটি ফাটানো দাবদাহ নেই, বর্ষার অঝোর ধারায় ভিজে যাওয়া বা কাঁদা নেই, হাড় কাঁপানো শীত যে মাসে নেই; তারই নাম কার্তিক।
বাংলাদেশের নদীর রূপ, রঙ এক্রকম; সাগরের অন্য রকম। কিন্তু নদী ও সাগরের যে মিলন স্থান অর্থাৎ মোহনা; তার সৌন্দর্য কিন্তু আমরা যারা মোহনা এলাকার মানুষ তারা ছাড়া তেমন কেঊ জানে না। কার্তিক মাস ঠিক সেরকম, ২ ঋতুর মোহনার মত।
একারনেই, বাংলাদেশের প্রান ও প্রকৃতি দেখার সবচেয়ে সুন্দর সময় এই কার্তিক।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে ভ্রমনের সবচেয়ে প্রিয় ঋতু শীতকাল। ইদানিং আমরা শিখেছি বাংলার সবুজ দেখার জন্য ভালো সময় বর্ষাকাল। কিন্তু আমার মনে হয় সেরা সময় হেমন্ত কাল, বিশেষ করে এই কার্তিক মাসটি। কারন তো আমি আগেই বলেছি।
বর্ষার সবুজ আছে, কিন্তু হঠাত বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া নেই বা সারাদিন থমথমে, গুমোট মেঘলা আকাশ নেই। গ্রীষ্মের গরম নেই, শীতের কনকনে ঠান্ডার সমস্যাও নেই। তাপমাত্রা খুব আরামপ্রদ।
“আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে— এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়— হয়তো বা শাঁখচিল শালিকের বেশে,
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়। “
- জীবনানন্দ দাশ।
আগামী ১৬ অক্টোব ২০১২ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে কার্তিক মাস। অতএব, ভ্রমণপিয়াসু ভাই ও বোনেরা, ভ্রমণ যদি করতে চান কার্তিকেই করুন। বাংলাদেশ দেখুন জীবনানন্দের চোখে। জয়তু কার্তিক।
ধন্যবাদ, কষ্ট করে পড়ার জন্য।
Happy Traveling. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।