প্রবল ঘৃনাই মানুষকে ধ্বংস করে আবার প্রবল ঘৃনাই মানুষকে বাঁচায় বর্তমানে জামায়াত শিবির আমাদের দেশের সবচেযে বড় রাজনৈতিক ফোঁড়া। বরং বলা চলে এই ফোঁড়া পেকে গিয়ে এখন দগদগে ঘাঁ-এ পরিনত হয়েছে। অনেকেই এদেরকে ছাগু বলে অভিহিত করেন। তবে আমি মনে করি এদেরকে ছাগু বলা আমাদের দেশের প্রধান গৃহপালিত পশু ছাগলের জন্য বেশ অপমানজনক। ছাগল দুধ, মাংস, শিং, পশম, চামড়া ইত্যাদি উৎপাদন করে আমাদের দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে জোরালো ভূমিকা পালন করছে, অন্যদিকে শিবির ছদ্মবেশে বিভিন্ন অফিস আদালতে ঢুকে পড়ে কেবল আমাদের ক্ষতিই করে যাচ্ছে।
তবে ছাগলের সাথে শিবিরের একটা জিনিসে বেশ মিল। দুজনেরই প্রধান কাজ হচ্ছে লেদিয়ে দেশের জন্য প্রাকৃতিক সার সরবরাহ করা। এজন্য শিবির আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেখে নেওয়া যাক একজন শিবির কর্মীর বৈশিষ্ট্য সমূহ।
১. এদের চুল কখনো লম্বা হয় না, চুল থাকে ছোট ছোট।
এরা চুল বড় রাখাটা অভদ্রতা বলে মনে করে।
২. বেশির ভাগ মুখে দাঁড়ি থাকে না, ক্লিন শেভড হয়, এরা নিজেদের একটু আধুনিক দাবী করতে চায়। কারো কারো দাঁড়ি থাকে তবে খুব ছোট করে ছাঁটা থাকে। দেখলেই ধান কেটে ফেলার পর জমিতে থাকা নারার কথা মনে পড়ে যা্বে।
৩. চোখে কোনো সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও জিরো পাওয়ারের চশমা ব্যবহার করে চেহারায় বুদ্ধিজীবী ভাব আনার জন্য।
সানগ্লাস কখনোই ব্যবহার করে না।
৪. দেখা হলেই লম্বা করে সালাম দিয়ে হ্যান্ডশেক করে। হ্যান্ডশেক করার সময় দু'হাত দিয়েই আপনার হাত আলতো করে ধরবে এবং সাথে সাথেই ছেড়ে দেবে। হ্যান্ডশেক করে ঠিকই তবে একে হ্যান্ডশেক বলে না, বলে মুসাফাহা। কারন হ্যান্ডশেক অমুসলিমদের আবিস্কার।
৫. অনেকদিন পর দেখা হলে অবশ্যই কোলাকুলি করবে।
৬. কথা বলার সময় আপনার মুখোমুখি দাঁড়ালে বারবার আপনার শার্টের কলারের দু'প্রান্ত এক করে দেয়ার চেষ্টা করবে এবং বলবে উপরের বোতাম লাগিয়ে রাখলে ভদ্র দেখায়।
৭. রাস্তায় হাঁটার সময় আপনার একটা আঙ্গুল ধরে ধরে হাঁটবে, কারন হিসেবে বলবে এভাবে নাকি মহব্বত বাড়ে।
৮. মাঝে মাঝে আপনার হাতের ভেতর দিয়ে তার হাত ঢুকিয়ে কনুই এর সাথে কনুই আঁকড়ে রেখে হাঁটবে।
৯. কোথাও দেখা হলেই মধুর ব্যবহার করবে যেন আপনার জন্য সে জীবন দিতে প্রস্তুত, এমনকি সবসময় আপনার সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করবে।
অথচ সত্যিকারের কোনো সমস্যায় পড়লে তার টিকিটির দেখাও পা্বেন না। তবে পরিচয়ের প্রথম দিকে উপকার পেতেও পারেন।
১০. আপনি কথা বলতে না চাইলেও সবসময় আগ বাড়িয়ে কথা বলবে এবং মনে হবে আপনিই তার সবেচেয়ে প্রিয় মানুষ। এরপরও আপনি তাকে এড়িয়ে চললে গল্পচ্ছলে অনেকের সামনে বলে বসবে, 'আপনি মনে হয় আমাকে পছন্দ করেন না'। এ কথার পর ভদ্রতার খাতিরে হলেও আপনি তার সাথে কথা বলতে বাধ্য হবেন।
১১. প্রায়ই তাদের বিভিন্ন নেতাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবে এই বলে যে, 'উনি নিজামী ভাই, একজন তরুন বুদ্ধিজীবী'।
১২. যখন তখন আপনাকে ফোন করে কুশল জিজ্ঞেস করবে, এসএমএস করে বিভিন্ন হাদিস পাঠাবে। কখনও আপনার ফোন হাতে পেলেই চেক করে দেখবে তার নাম্বার আপনার মোবাইলে সেভ করা আছে কিনা। না থাকলে খুবই মনক্ষুন্ন হয়েছে এমন ভঙ্গিতে বলবে, 'আমার নাম্বার আপনার কাছে সেভ নাই কেন'?
১৩. বিভিন্ন উৎসবে আর কেউ আপনাকে এসএমএস করুক বা না করুক সে ঠিকই এসএমএস করবে।
১৪. কোথাও দেখা হলেই নাস্তা করানোর চেষ্টা করবে।
নাস্তার বিল কখনোই আপনাকে দিতে দেবে না। আপনি পরে তাকে দিলেও সে কখনোই নেবে না।
১৫. যে কোন আড্ডায় রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আসবে এবং কোথায় কোথায় সরকার তাদের উপর অত্যাচার করেছে তার ফুলানো ফাঁপানো বর্ণনা দেবে।
১৬. নিজেকে সবসময় একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে জাহির করবে। অন্যরা তার বুদ্ধিজীবী প্রতিভায় মুগ্ধ হলেও আপনি যদি মুগ্ধ না হন তাহলে কারনে অকারনে আপনার প্রশংসা করে নিজেকে আপনার প্রিয়ভাজনে পরিনত করার চেষ্টা করবে।
১৭. তার কাছ থেকে কোন বই নিতে চাইলে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই আপনাকে বই দেবে এবং দিনের পর দিন বই আপনার কাছে রেখে দিলেও কখনও জিজ্ঞেস করবে না কবে ফেরত দেবেন। তবে বইগুলো হতে হবে মওদুদী অথবা গোলাম আজমের।
১৮. নির্দিষ্ট কয়েকজন কবি এবং সাহিত্যিক ছাড়া অন্য কারো লেখা পড়ে না এবং অন্যদের প্রসংগ আসলেই নাস্তিক বলে অভিহিত করবে।
সাধারন গান শোনে না, ইসলামী সঙ্গীত শোনে। মোবাইলের রিংটোন হিসেবেও ইসলামী সঙ্গীত থাকে।
১৯. ভার্সিটির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীগুলোতে এদেরকে খুব একটা অবস্থান করতে দেখা যায় না, তবে হলের লাইব্রেরীগুলোতে এদেরকে দিনরাত পড়ে থাকতে দেখা যায়।
২০. আটক থাকা তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির পক্ষে সবসময় যুক্তি দেয়ার চেষ্টা করে এবং বলে তাদের নেতাদের উপর অত্যাচারের মাধ্যমে ইসলামকে ধ্বংস করার পায়তারা চলছে।
২১. তাদের দখলে থাকা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক বিরোধী বা প্রতিষ্ঠান বিরোধী কোনো আন্দোলন হলেই তারা অবধারিতভাবে আন্দোলনের বিরোধীতা করে এবং আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করে।
২২. তারা যেই ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করেছে পড়াশোনা শেষ করার পাঁচ-ছয় বছর পরেও ঐ ক্যাম্পাসে ঘুরতে দেখা যায়।
২৩. ছাত্রজীবনে তাদেরকে দেখা যায় শিক্ষকদের চাটুকারিতা করতে।
শিক্ষক যতই বাজে হোক না কেন তার সমর্থন করে এবং অন্য কোন ছাত্র শিক্ষক সম্পর্কে বাজে কোন মন্তব্য করলে শিক্ষককে ঐ ছাত্রের নাম বলে শিক্ষকের ঘনিষ্ঠভাজন হওয়ার চেষ্টা করে।
২৪. অন্য সমস্ত ইসলামী দলের সমালোচনা করে, দাবী করে একমাত্র ওরাই সঠিক ইসলামের পথে আছে। যারা তাদের বিরুদ্ধাচরন করে সবাইকে কাফের সম্বোধন করে।
২৫. প্রতিমাসে মামার বাড়ির আবদারের মত বায়তুল মাল আদায় করতে আসবে এবং এমনভাবে কথা বলবে যে আপনি লজ্জায় না দিয়ে পারবেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বায়তুল মাল আদায় করার জন্য আপনার কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে নিয়ে আসবে যে কিনা শিবির করে।
২৬. প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস আসলেই সদস্য সম্মেলনের নামে একহাজার টাকার রশিদ ধরিয়ে দেবে, আপনার আর্থিক অবস্থা যাই হোক না কেন।
২৭. তিন চারটি নির্দিষ্ট জাতীয় দৈনিক (নাম উল্লেখ করতে পারছিনা, বুঝে নেবেন) ছাড়া অন্য কোনো পত্রিকা এরা পড়ে না এবং বলে যে শুধুমাত্র ঐ পত্রিকাগুলোই সত্যনিষ্ঠ খবর ছাপায়। অন্য সব পত্রিকা শিবির এবং ইসলাম বিরোধী প্রপাগান্ডা চালায়।
২৮. যেসব চলচিত্র এবং সাহিত্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারন করে এবং সে চেতনা রক্ষা করতে গিয়ে অবধারিতভাবে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের বিরোধীতার প্রসঙ্গ আসে সেগুলো তারা ইতিহাস বিকৃত হয়েছে দাবী করে বয়কট করে।
২৯. বিশেষ কয়েকটি টিভি চ্যানেল ছাড়া অন্য কোন চ্যানেল দেখে না এবং মনে করে একমাত্র ওরাই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করে।
যেমন:- ডুবন্ত টিভি।
৩০. প্রচন্ডভাবে রবীন্দ্র বিরোধী। এই প্রসঙ্গে ওদের ভাষ্য, 'রবীন্দ্রনাথের ষড়যন্ত্রের জন্যেই নজরুল নোবেল পুরস্কার পাননি'। নজরুলের অসুস্থতার পেছনেও ওরা রবীন্দ্রনাথের ষড়যন্ত্রের আভাস পায়।
৩১. অন্য কারো স্বভাব ঠিক ওদের মত না হলেই তা অস্বাভাবিক বলে ধরে নেয় এবং তার সমালোচনা করে।
৩২. যে কারো নামের অর্থ নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শুরু করে। এমনকি হিন্দুদের নামের সমালোচনাও বাদ পরে না।
৩৩. বেগানা নারীর সাথে কথা বলা ও দেখা করা হারাম বলে কিন্তু দেখা যায় তারা সেটা মানে না। ধরা পড়ে গেলে বলে, এটা আমার খালা/ ফুফু/ ভাবী। আমার সঙ্গে একই ক্লাসে পড়েছিল/ প্রায় সমবয়সী তো তাই মাঝে মাঝে কথা বলি।
৩৪. অশ্লীল ভিডিও দেখা পাপ বলে কিন্তু প্রত্যেকের ব্যক্তিগত পিসিতে লকড ফাইলে এসব ভিডিওর বিশাল কালেকশন দেখা যায়।
৩৫. ইসলামী ছাত্রী সংস্থার মেয়ে ছাড়া অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করে না এবং অধিকাংশ বিয়ে হয় প্রেমের। তবে তারা এটাকে প্রেমের বিয়ে বলে স্বীকার করে না। এ সম্পর্ককে তারা পারস্পরিক জানাশোনা হিসেবে অভিহিত করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।