আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াবেন কিভাবে



বন্ধুত্বের মূল কথা হলো যোগাযোগ। একজন চাকরি প্রার্থীর যোগাযোগ করার ক্ষমতাকে আমরা তুলনা করতে পারি, পন্যের বিজ্ঞাপনের সাথে। বার বার বিজ্ঞাপনের ফলে কোন পণ্য যেমন সহজেই আমাদের নিকট পরিচিত হয়ে উঠে তেমনি যোগাযোগও একজন মানুষকে অপরজনের কাছে আপন করে বা তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায়। একবার পরিচিত হওয়ার পর, যে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারে পরিচিতজনের সাথে, সেই লাভবান হয়। সরকারি চাকরিতে দলীয় যোগাযোগ, আত্মীয়তার যোগাযোগ, আর প্রাইভেট জবে লাগে ব্যক্তিগত যোগাযোগ, তবে আত্মীয় যোগাযোগ অনেক ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সার্কুলার হলে, সে মতে অ্যাপলিকেশন করে, আপনি সম্ভব হলে ঐ প্রতিষ্ঠানে একবার যেতে পারেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তির সাথে বা তার আশে পাশের ইনফ্লয়েন্সিয়াল ব্যক্তির সাথে দেখা করতে পারেন। (যদি সার্কুলারে উল্লেখ থাকে যে কোন প্রকার যোগাযোগ প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে গণ্য হবে তাহলে ও পথ না মাড়ানোই ভালো) এতে কাজ দেয় টনিকের মতো। ভাইভা বোর্ডে একজন প্রার্থী হিসেবে আপনি খোলামেলা কথা বলার সুযোগ সব ক্ষেত্রে নাও পেতে পারেন কিন্তু এই ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ পর্বটিতে আপনি অন্য প্রার্থীর চেয়েও যে যোগ্যতা সম্পন্ন ও বৈশিষ্ট্য মন্ডিত হিসেবে সহজেই নিয়োগকর্তার মনে স্থান করে নিতে পারেন। ইদানিং বড় বড় কোম্পানিগুলোতে ইনফর্মালি হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্টে জমা হওয়া সিভি গুলোকে পরখ করে, পারসোনালী যোগাযোগ করে ভাইভা নিয়ে থাকেন।

এভাবে বর্তমানে অনেক নিয়োগ হচ্ছে। তবে সিভি জমা দিয়ে চুপচাপ বসে না থেকে একটু ফোন করে সময় নিয়ে দেখা করতে পারেন। ফোন অবশ্যই করবেন ফাষ্ট হাপ এ। অর্থাৎ বেলা বারটার মধ্যে। কারণ সময়ের সাথে সাথে বড় কর্তা ব্যক্তিদের কাজ বেড়ে যায়, বাড়ে ঝামেলাও।

অনেক ক্ষেত্রে মেজাজ থাকে গরম। সে সময় অপরিচিত লোক ভালো কথা বললেও বিরক্তিকর লাগে। পেপসি কোলা কোম্পানির ম্যানেজার (শীপিং) মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম ও এর সাথে একমত পোষন করেন। তিনি বলেন- ‘অফিসে ঢোকার পর সময় যত গড়ায়, কাজ তত বেড়ে যায়, পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট-খাট সমস্যা দেখা দেয়, বেড়ে যায় ব্যস্ততা যেটা ফাস্ট হাফে ঘটে না”। কাজেই একজন চাকরি প্রার্থীর উচিত যোগাযোগ ফাস্ট হাফেই করা।

যোগাযোগ নিয়ে এত আলোচনার পর পাঠক প্রশ্ন করতে পারেন এই যোগাযোগ বাড়াবো কিভাবে? আসলে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য বিধিবদ্ধ কোন গাইড লাইন নেই, তবে কিছু টিপস্ মেনে চললে আপনিও দক্ষ হয়ে উঠবেন যোগাযোগে এবং ফল পাবেন ত্বরিত। ১। পরিচয়ের শুরুতেই বুঝতে চেষ্টা করুন তার উৎসাহ কোন দিকে। তার পছন্দের / অপছন্দের বিষয়গুলো কি কি? তার উৎসাহের ব্যাপার গুলো নিয়েই কথা বলুন। ২।

মানুষ সম্পর্কে আগ্রহী হোন। যীশুর জন্মেরও একশত বৎসর পূর্বে বিখ্যাত রোমান কবি পাবলিয়ান সাইকাস বলেছেন -‘আমরা অন্যের প্রতি তখনই আগ্রহী হই অন্যরা যখন আমাদের প্রতি আগ্রহী হয়। ’ভিয়েনার বিখ্যাত মনস্তত্ত্ববিদ আল ফ্রেড এ্যাডলার “হোয়াট লাইফ সুড মীন টু ইউ” নামে একটি গন্থে লিখেছেন - ‘যে বিশেষ লোক অন্যদের সম্পর্কে আগ্রহী হতে চায় না, সে দুনিয়ার জীবন কাটাতে সবচেয়ে অসুবিধার সম্মুখীন হয়। আর অন্যকেও আঘাত দেয়। এই ধরনের মানুষ থেকেই সব রকম মানবিক ব্যর্থতা জন্ম নেয়।

’ ৩। অন্যকে দেখে আনন্দিত হোন। আপনি যদি চান অন্যেরা আপনাকে দেখে আনন্দিত হোক, তাহলে অন্যকে দেখে আপনিও আনন্দ প্রকাশ করুন। ৪। প্রাণখোলা আন্তরিক হাসি দিয়ে অপরকে অভ্যর্থনা করুন।

আপনি তাকে দেখে যে সত্যিই আনন্দিত, তার সত্যিকার প্রকাশ ঘটান আপনার আন্তরিক হাসি দিয়ে। সময়ে একটি হাসির দাম অমূল্য (শুল্ক বা কাষ্ঠ হাসি নয়) । ৫। পরিচিতজনদের কাছে পরিচিত জনের যৌক্তিক প্রশংসা করুন। মানুষের মনে স্থায়ী রেখাপাত করে যে বিষয়টি তা হলো যদি আপনার পরিচিত জনের কাছে অপর কোন পরিচিত জন আপনার কোন প্রশংসা করে।

আপনার প্রশংসা যে করবে তাকে অত্যন্ত আপন বা নিজের বলে মনে হবে। ৬। অপরের মধ্যে ভালো কি দিক আপনাকে আকৃষ্ট করেছে বা অন্যকেও প্রভাবিত করতে পারে তা অকপটে বলে ফেলুন। ৭। ইদানিং পরিচিত হওয়া মানুষগুলোকে ফোন করুন।

খোঁজ খবর নিন। আপনাকে ভুলে গেলেও রেফারেন্স ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান,স্থান বা সিচুয়েশনের কথা মনে করিয়ে দিন। মাসে অন্তত একবার পূর্ব পরিচিতদের ফোন করুন। তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানুন। অতীতের সুন্দর সময় গুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিন।

৮। জন্ম বার্ষিকী, বিবাহ বার্ষিকী ও জাতীয় কোন দিবসে আপনার পরিচিত জন, যে কোন বন্ধু, শুভাকাঙ্খীদের বা সিনিয়রদের এবং জুনিয়রদের শুভেচ্ছা দিতে ভুলবেন না। এটিও বিবিধ কারনে আপনার পদোন্নতির পথের সিঁঁড়ি হতে পারে। এরপরেও যার যার ব্যক্তিগত টেকনিক ব্যবহার করে যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে সুন্দর ও সম্পর্ক উন্নয়নের মাইলফলক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.